আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

سنة ست وخمسين ومائتين

পৃষ্ঠা - ৮৮০৯
[ হিজরি ২৫৬ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এরপর ২৫৬ হিজরী শুরু হল।
এবছর ১২ই মুহাররমের সকালে মূসা ইবনে বুগা আল-কবীর সামাররায় আসেন। তার সাথে বড় সৈন্য বাহিনী ছিল। এ বাহিনী তার ডানে বামে সামনে পিছন চারিদিক থেকে বেষ্টন করে ছিল। এরপর যখন দারুল খেলাফাতের কাছে পৌছেন, যেখানে খলীফা বসে মানুষের অভিযোগ শুনছিলেন। তখন খলীফার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। খলীফা অনুমতি দিতে বিলম্ব করেন। কিছু সময় তাদেরকে অপেক্ষায় রাখেন। তখন তারা মনে মনে ভাবলেন খলীফা তাদের কে ধোকা দিছে এবং সালেহ ইবনে ওয়াসিফ কে তাদের উপর কর্তৃত্ব দেয়ার জন্য এভাবে ডেকেছেন। তখন তারা জোরপূর্বক দরবারে ঢুকে পড়লেন। এবং তারা পরস্পরে তুর্কী ভাষায় পরমর্শ করে খলীফার সিংহাসন থেকে উঠাইয়ে দিলেন। সিংহাসনের সমস্ত মাল-সামান লুট করে নিলেন। আর খলীফাকে অপদস্ততার অন্য কামরায় নিয়ে গেলেন। তখন খলীফা তাদের এ আচারণ দেখে বললেন : হে মূসা ! তোমার কারণে আপসোস হয়। আমি নিজেই তোমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসলাম। যাতে তোমার মাধ্যমে সালেহ ইবনে ওয়াসিফ কে আয়ত্বে আনতে পারি। কিন্তু তুমি এ কেমন ব্যবহার করলে? তখন মূসা ইবনে বুগা বললেন : ঠিক আছে কোন সমাস্য নেই। তবে আপনি কসম করে বলেন যে, আপনি যা বলতেছেন তার বিপরিত কোন কিছু ইচ্ছা করেন নি। তখন খলীফা কসম করল। ফলে তাদের মন শান্ত হল। তারা খলীফার কাছে দ্বিতীয়বার আবার সামনাসমনি বায়াত গ্রহন করলেন। তারা খালীফা থেকে অঙ্গিকার নিল যে, তিনি তাদের উপর সালেহ ইবনে ওয়াসিফ কে প্রাধান্য দিবেন না। এবং এ কথার উপর তাদের সাথে সন্ধি হল।

এরপর তারা সালেহ ইবনে ওয়াসিফের কাছে এ পায়গম পাঠালেন যে, তিনি যেন তাদের এখানে এসে দেখা করেন। এসে খলীফা মু’তায্য ও তার খেলাফাতের কর্মচারী যাদেরকে সালেহ ইবনে ওয়াসিফ হত্যা করেছেন তাদের ব্যাপারে আলোচনা করেন। উত্তরে সালেহ ইবনে ওয়াসিফ তাদের সাথে সাক্ষাত করার ওয়াদা দিলেন। অতঃপর তিনি অনুসারীদের জমা করলেন। গোপনে মূসা ইবনে বুগার সাথে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। কিন্তু হটাৎ এক রাতে তিনি হারিয়ে গেলেন। কেথায় গেছেন কেহ জানেনা। তখন মূসা ইবনে বুগা তার হারানোর খবর শহরের সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে দিলেন। সাথে সাথে তাকে যারা গোপন করে রেখেছে তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন হুমকী-ধুমকী দিলেন। কিন্তু সফর মাসের শেষ পর্যন্ত তাকে পাওয়া গেল না। যার বিস্তারিত আলোচনা পরে করা হবে।
[سَنَةُ سِتٍّ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ سِتٍّ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِي صَبِيحَةِ يَوْمِ الْإِثْنَيْنِ الثَّانِيَ عَشَرَ مِنَ الْمُحَرَّمِ قَدِمَ مُوسَى بْنُ بُغَا الْكَبِيرِ إِلَى سَامَرَّا فَدَخَلَهَا فِي جَيْشٍ هَائِلٍ قَدْ عَبَّاهُ مَيْمَنَةً وَمَيْسَرَةً وَقَلْبًا وَجَنَاحَيْنِ فَقَصَدَ دَارَ الْخِلَافَةِ الَّتِي فِيهَا الْمُهْتَدِي جَالِسٌ لِلْعَامَّةِ لِكَشْفِ الْمَظَالِمِ وَاسْتَأْذَنُوا عَلَيْهِ فَتَمَادَى الْإِذْنُ سَاعَةً وَتَأَخَّرَ عَنْهُمْ فَظَنُّوا فِي أَنْفُسِهِمْ أَنَّ الْخَلِيفَةَ إِنَّمَا طَلَبَهُمْ خَدِيعَةً مِنْهُ لِيُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ صَالِحَ بْنَ وَصِيفٍ فَدَخَلُوا عَلَيْهِ هَجْمًا فَجَعَلُوا يُرَاطِنُونَهُمْ بِالتُّرْكِيِّ ثُمَّ عَزَمُوا فَأَقَامُوهُ مِنْ مَجْلِسِهِ وَانْتَهَبُوا مَا كَانَ فِيهِ ثُمَّ أَخَذُوهُ مُهَانًا إِلَى دَارٍ أُخْرَى فَجَعَلَ يَقُولُ لِمُوسَى بْنِ بُغَا: مَا لَكَ وَيْحَكَ؟! إِنَّى إِنَّمَا أَرْسَلْتُ إِلَيْكَ لِأَتَقَوَّى بِكَ عَلَى صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ فَقَالَ: لَا بَأْسَ عَلَيْكَ احْلِفْ لِي أَنَّكَ لَا تُرِيدُ بِي خِلَافَ مَا أَظْهَرْتَ، فَحَلَفَ لَهُ الْخَلِيفَةُ فَطَابَتْ أَنْفُسُهُمْ وَبَايَعُوهُ بَيْعَةً ثَانِيَةً مُشَافَهَةً وَأَخَذُوا عَلَيْهِ الْعُهُودَ وَالْمَوَاثِيقَ أَنْ لَا يُمَالِئَ صَالِحًا عَلَيْهِمْ وَاصْطَلَحُوا عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ بَعَثُوا إِلَى صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ لِيَحْضُرَهُمْ لِلْمُنَاظَرَةِ فِي أَمْرِ الْمُعْتَزِّ، وَمَنْ قَتَلَهُ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ مِنَ الْكُتَّابِ وَغَيْرِهِمْ، فَوَعَدَهُمْ أَنْ يَأْتِيَهُمْ ثُمَّ اجْتَمَعَ بِجَمَاعَةٍ مِنَ الْأُمَرَاءِ مِنْ أَصْحَابِهِ وَأَخَذَ يَتَأَهَّبُ لِجَمْعِ الْجُيُوشِ عَلَيْهِمْ ثُمَّ اخْتَفَى مِنْ لَيْلَتِهِ لَا يَدْرِي أَحَدٌ أَيْنَ ذَهَبَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَبَعَثُوا الْمُنَادِيَةَ تُنَادِي عَلَيْهِ فِي أَرْجَاءِ الْبَلَدِ وَتُهَدِّدُ مَنْ أَخْفَاهُ فَلَمْ يَزَلْ فِي خَفَاءٍ إِلَى أَوَاخِرَ صَفَرٍ عَلَى مَا
পৃষ্ঠা - ৮৮১০
অতঃপর সুলাইমান ইবনে তাহের কে আবার বাগদাদের প্রতিনিধি করে পাঠানে হল। এবং উজির আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াঝদাদ কে হাসান ইবনে মাখলাদের কাছে সোপার্দ করা হল। যাকে সালেহ ইবনে ওসিফ হত্যা করতে চেয়েছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদকে জেলখানায় বন্ধি করে রাখা হল। উজারতের (মুন্ত্রিত্বের) দায়িত্ব ফিরে পাওয়া পর্যন্ত তিনি বন্ধি ছিলেন।

যখন মূসা ইবনে বুগা এবং তার সঙ্গিরা সালেহ ইবনে ওসিফের কোন খেজ পেল না। তখন মূসা ইবনে বুগার সঙ্গিরা আপসে আলোচনা করল। কেউ বলল, খলীফা মুহতাদী কে খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। আর কেউ বলল, তোমরা এমন একজন দ্বীনদার লোকে হত্যা করবে? যে অনেক বেশি বেশি রোজা রাখে। রাতে তাহাজ্জুদের নামায পড়ে। যে কখনো মদ পান করে না। আর না কখনো কেন খারাপ কাজ করে। আল্লাহর কসম তিনি পূর্ববর্তী খলীফাদের নয়। এ ব্যাপরে কেউ তোমাদের সঙ্গ দেবে না।

তাদের এ বিষয় খলীফা জানতে পারেন। তখন খলীফা তরবারি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। নিজের সিংহাসনে বসেন। তারপর মূসা ইবনে বুগা এবং তার সঙ্গিদের ডেকে তাদের কে বললে : তোমরা গোপনে যে পরিকল্পনা করেছ তা আমি জানতে পেরেছি। আল্লাহ তায়ালার কসম আমি তোমাদের কাছে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি। আমার সন্তানদের ব্যাপারে আমার ভাইয়ের কাছে অসিয়াত করে এসেছি। এটা আমার তরবারি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমার এ তরবারি আমার হাতে থাকবে ততক্ষণ আমি তোমাদের সাথে লড়াই করব। আল্লাহ তায়ালার কসম করে বলছি যদি আমার এক চুলও কোন ক্ষতি হয় তাহলে তোমরা সবাই বা অধিকাংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। তোমাদের কি লজ্জা-শরম, দ্বীন-ধর্ম ও খোদভীতি কিছুই নেই? তোমরা কিভাবে খলীফার বিরুদ্ধচারণ করছ? কিভাবে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছ? ঐ সমস্ত লোক কি তোমাদের কাছে সমান যারা তোমাদের জীবনে মঙ্গল চায়, আর যারা পাত্র ভর্তি মদ নিয়ে পান করে? তোমরা তোমাদের খারাপ কাজে সন্তুষ্ট আছ? যাও তোমর আমার বাড়ি, আমার ভায়ের বাড়ি ও আমার সাথে যার থাকে তাদের বাড়িতে যাও। যেয়ে দেখ সাধারণ মানুষের ঘরে যা থাকে তাছাড়া খেলাফাতের কোন দামী শাহী জিনিসপত্র বা দামী দামী শাহী গালিচা কোন কিছু কি আছে? সাধরণ মানুষের ঘর ও আমাদের ঘরের মাঝে কি কোন পার্থক্য আছে? তোমরা আরো বলতেছ, আমি সালেহ ইবনে ওসিফ কোথায় আছে জানি। সে আমার কাছে তোমাদের মতই একজন। আমি তার সম্পর্কে কিছুই জানি না। এখন তোমাদের প্রশান্তির জন্য তোমরা খোজ-খবর নিয়ে যাচাই করে দেখ।
তখন মূসা ইবনে বুগা ও তার সঙ্গিরা খলীফাকে বলল : আপনার এ কথা কসম করে বলুন। তখন খলীফা কসম বলেন : ঠিক আছে, আমি কসম করে বলব।
سَنَذْكُرُ. وَرُدَّ سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ إِلَى نِيَابَةِ بَغْدَادَ وَسُلِّمَ الْوَزِيرُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَزْدَادَ إِلَى الْحَسَنِ بْنِ مَخْلَدٍ الَّذِي كَانَ أَرَادَ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ قَتْلَهُ مَعَ ذَيْنِكَ الرَّجُلَيْنِ فَبَقِيَ فِي السِّجْنِ حَتَّى رَجَعَ إِلَى الْوِزَارَةِ. وَلَمَّا أَبْطَأَ خَبَرُ صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ عَلَى مُوسَى بْنِ بُغَا وَأَصْحَابِهِ قَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: اخْلَعُوا هَذَا الرَّجُلَ. يَعْنِي الْخَلِيفَةَ. فَقَالَ بَعْضُهُمْ: أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا صَوَّامًا قَوَّامًا لَا يَشْرَبُ النَّبِيذَ وَلَا يَأْتِي الْفَوَاحِشَ وَاللَّهِ إِنَّ هَذَا لَيْسَ كَغَيْرِهِ مِنَ الْخُلَفَاءِ وَلَا يُطَاوِعُكُمُ النَّاسُ عَلَيْهِ وَبَلَغَ ذَلِكَ الْخَلِيفَةَ فَخَرَجَ إِلَى النَّاسِ وَهُوَ مُتَقَلِّدٌ سَيْفًا فَجَلَسَ عَلَى السَّرِيرِ وَاسْتَدْعَى بِمُوسَى بْنِ بُغَا وَأَصْحَابِهِ، فَقَالَ: قَدْ بَلَغَنِي مَا تَمَالَأْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَمْرِي، وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا خَرَجْتُ إِلَيْكُمْ إِلَّا وَأَنَا مُتَحَنِّطٌ وَقَدْ أَوْصَيْتُ إِلَى أَخِي بِوَلَدِي وَهَذَا سَيْفِي وَاللَّهِ لَأَضْرِبَنَّ بِهِ مَا اسْتَمْسَكَ قَائِمُهُ بِيَدِي، وَاللَّهِ لَئِنْ سَقَطَ مِنْ شِعْرِي شَعْرَةٌ لَيَهْلِكَنَّ أَوْ لِيَذْهَبَنَّ بِهَا أَكْثَرُكُمْ أَمَا دِينٌ أَمَا حَيَاءٌ أَمَا رِعَةٌ؟! كَمْ يَكُونُ هَذَا الْخِلَافُ عَلَى الْخُلَفَاءِ وَالْإِقْدَامُ وَالْجُرْأَةُ عَلَى اللَّهِ؟! سَوَاءٌ عِنْدَكُمْ مَنْ قَصَدَ الْإِبْقَاءَ عَلَيْكُمْ، وَمَنْ كَانَ إِذَا بَلَغَهُ هَذَا عَنْكُمْ دَعَا بِأَرْطَالِ الشَّرَابِ فَشَرِبَهَا ; سُرُورًا بِمَكْرُوهِكُمْ، وَاذْهَبُوا فَانْظُرُوا فِي مَنْزِلِي وَفِي مَنَازِلِ إِخْوَتِي وَمَنْ يَتَّصِلُ بِي هَلْ فِيهَا مِنْ آلَاتِ الْخِلَافَةِ أَوْ فُرُشِهَا شَيْءٌ غَيْرَ مَا يَكُونُ فِي بُيُوتِ آحَادِ النَّاسِ، وَيَقُولُونَ: إِنِّي أَعْلَمُ عِلْمَ صَالِحٍ وَهَلْ هُوَ إِلَّا كَوَاحِدٍ مِنْكُمْ؟ فَاذْهَبُوا فَاعْلَمُوا عِلْمَهُ فَابْلُغُوا شِفَاءَ نُفُوسِكُمْ فِيهِ، وَأَمَّا أَنَا فَلَسْتُ أَعْلَمُ عِلْمَهُ. قَالُوا: فَاحْلِفْ لَنَا عَلَى ذَلِكَ. قَالَ: أَمَّا الْيَمِينُ فَإِنِّي أَبْذُلُهَا لَكُمْ،
পৃষ্ঠা - ৮৮১১
তবে এখন কসম করব না। বরং কাল জুমার দিন যখন হাশেমীগণ, কাজীগণ ও সর্বস্তরের জনগণ জুমার নামায পড়তে আসবে তখন কসম করব। এ সমস্ত কথা শুনে তাদের মন একটু নরম হল।

কিন্তু ২২ শে সফর রবিবারের দিন ঐ সমস্ত লোকেরা সালেহ ইবনে ওয়াসিফ কে খুজে পেল। তারা তাকে হত্যা করল। তার মাথা খলীফা মুহতাদি বিল্লাহের কাছে নিয়ে আসল। যখন মাথা নিয়ে আসল তখন খলীফা মাগরিবের নামায পড়ে ফিরে আসছিলেন। খলীফা দেখে শুধু এতটুকুই বললেন চাপা দিয়ে দাও। এরপর তিনি তার তাসবিহ ও জিকিরের মধ্যে লিপ্ত হয়ে গেলেন।

তারপরের দিন সেমবার সকালে তার মাথা বল্লমের উপরে নিয়ে সারা শহরে ঘুরে বেড়ানো হল। আর বলা হল, এটা স্বিয় মনিব কে হত্যার প্রতিদান। এরপরে শহরের অবস্থা আস্তে আস্তে খারাপ হতে থাকে। এমনকি খলীফা মুহতাদী বিল্লাকে খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে তাকে হত্যা কর হল।

খলীফা মুহতাদী এর পদত্যাগ মু’তামিদ আহমাদ ইবনে মুতওয়াক্কিল ক্ষমতা গ্রহন ও খলীফা মুহতাদীর গুণাগুণ বর্ণনা :
যখন মূসা ইবনে বুগা জানতে পারল মুসায়ীর শারী ঐ এলাকায় ফেতনা করছে। তিনি তৎক্ষনাত বড় বাহিনী নিয়ে হামল করলেন। মুফলিহ এবং বায়াকবাক তুর্কীও তার সাথে ছিলেন। ঐ মুসায়ীর খারেজীর সাথে বিশাল যুদ্ধ হল। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। বরং মুসায়ীর শারী তাদের থেকে পালাতে সক্ষম হলেন। তারা আসার আগে মুসায়ীর শারী অনেক হাঙ্গামা করেছেন।
খলীফা তুর্কীদের মাঝে বিভক্ত করার উদ্দেশ্যে বায়াকবাকের কাছে চিঠি লিখল। চিঠিতে লিখল তিনি যেন মূসা ইবনে বুগার বাহিনী কে নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেয়। এবং ঐ বাহিনীর আমীর হয়ে যান।
وَلَكِنِّي أُؤَخِّرُهَا لَكُمْ حَتَّى تَكُونَ بِحَضْرَةِ الْهَاشِمِيِّينَ وَالْقُضَاةِ وَالْمُعَدَّلِينَ وَأَصْحَابِ الْمَرَاتِبِ فِي غَدٍ إِذَا صَلَّيْتُ صَلَاةَ الْجُمُعَةِ. قَالَ: فَكَأَنَّهُمْ لَانُوا لِذَلِكَ قَلِيلًا. فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ الْأَحَدِ لِثَمَانٍ بَقِينَ مِنْ صَفَرٍ ظَفِرُوا بِصَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ فَقُتِلَ وَجِيءَ بِرَأْسِهِ إِلَى الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَقَدِ انْفَتَلَ مِنْ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ، فَلَمْ يَزِدْ عَلَى أَنْ قَالَ وَارُوهُ، ثُمَّ أَخَذَ فِي تَسْبِيحِهِ وَذِكْرِهِ، وَلَمَّا أَصْبَحَ الصَّبَاحُ مِنْ يَوْمِ الْإِثْنَيْنِ رُفِعَ الرَّأْسُ عَلَى رُمْحٍ وَنُودِيَ عَلَيْهِ فِي أَرْجَاءِ الْبَلَدِ: هَذَا جَزَاءُ مَنْ قَتَلَ مَوْلَاهُ. وَمَا زَالَ الْأَمْرُ مُضْطَرِبًا حَتَّى تَفَاقَمَ الْأَمْرُ وَعَظُمَ الْخَطْبُ. ذِكْرُ خَلْعِ الْمُهْتَدِي وَوِلَايَةِ الْمُعْتَمِدِ أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ وَإِيرَادُ شَيْءٍ مِنْ فَضَائِلِ الْمُهْتَدِي لَمَّا بَلَغَ مُوسَى بْنَ بُغَا أَنَّ مُسَاوِرًا الشَّارِيَّ قَدْ عَاثَ بِتِلْكَ النَّاحِيَةِ رَكِبَ إِلَيْهِ فِي جَيْشٍ كَثِيفٍ وَمَعَهُ مُفْلِحٌ وَبَايَكْبَاكُ التُّرْكِيُّ، فَاقْتَتَلُوا هُمْ وَمَسَاوِرٌ الْخَارِجِيُّ، فَلَمْ يَظْفَرُوا مِنْهُ بِشَيْءٍ يُعْجِبُهُمْ، وَهَرَبَ مِنْهُمْ وَأَعْجَزَهُمْ، وَكَانَ قَدْ فَعَلَ قَبْلَ مَجِيئِهِمُ الْأَفَاعِيلَ الْمُنْكَرَةَ. وَالْمَقْصُودُ أَنَّ الْخَلِيفَةَ الْمُهْتَدِيَ بِاللَّهِ أَرَادَ أَنْ يُخَالِفَ بَيْنَ كَلِمَةِ الْأَتْرَاكِ، فَكَتَبَ إِلَى بَايَكْبَاكَ أَنْ يَتَسَلَّمَ الْجَيْشَ مِنْ مُوسَى بْنِ بُغَا، وَيَكُونَ هُوَ الْأَمِيرَ عَلَى النَّاسِ، وَأَنْ يُقْبِلَ بِهِمْ إِلَى سَامَرَّا، فَلَمَّا وَصَلَ إِلَيْهِ الْكِتَابُ
পৃষ্ঠা - ৮৮১২
যখন এ চিঠি বায়াকবাক পাইলেন তখন তিনি মুসা ইবনে বুগার হাতে চিঠি দিয়ে দিলেন। এ চিঠি পড়ে মূসা ইবনে বুগা কঠিন রাগান্বিত হলেন। এবং তারা উভয়ে খলীফার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হলেন। তাদের পরস্পরের মধ্যে যে কলহ ছিল তা তারা ভুলে গেলেন। তারা উভয়ে খলীফার থেকে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সামাররার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। অপর দিকে খলীফা যখন তাদের আসার ব্যাপার জানতে পারেন। তখন সাথে সাথে চারিদিক থেকে সৈন্য একত্রিত করেন। বড় এক সৈন্য বাহিনী নিয়ে তাদের মুকাবেলা করার জন্য বের হলেন। মূসা ইবনে বুগা ও বায়াকবাক যখন খলীফার এভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসার খবর শুনতে পেলেন। তখন মূসা ইবনে বুগা খেরাসানের দিলে পালিয়ে গেলেন। আর বায়াকবাক আত্মসমার্পন করে খলীফার আনুগত্য স্বিকার করলেন। ১২ ই রজব খলীফার দরবারে আসলেন। তাকে খলীফার সামনে আনা হল। তখন মন্ত্রি পরিষদ ও বনি হাশেমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ খলীফার পাশে ছিল। খলীফা তাদের সাথে বায়াকবাকের ব্যাপারে পরামর্শ করলেন। তখন সালেহ ইবনে আলী ইবনে ইয়কুব ইবনে আবূ জা’ফার আল-মানসুর বললেন : হে খলীফা ! আপনার থেকে বড় বাহাদুর খলীফা আপনার পূর্বে আসে নাই। আর আবূ মুসলিম খুরাসানী এর থেকেও বড় খারাপ লোক ছিল। তার বাহিনীও বড় ছিল। কিন্তু আবূ জা’ফার মানসুর যখন তাকে হত্যা করেছিল তখন সব ফেতনা শেষ হয়ে গেছিল। তার সাথী সঙ্গিরাও সব চুপ হয়ে গেছিল। (অর্থাৎ আপনি একে হত্য করে দেন)। এ কথা শুনে খলীফা বায়াকবাকের গর্দান কেটে ফেলার হুকুম দিলেন। তারপর তার মাথা তুর্কীদের সামনে ফেলে দিলেন। এ বিষয়টা তুর্কীরা ভালো মনে করল। তখন তুর্কীরা খলীফা পরিত্যাগ করল। পরের দিন সকালে তারা তার ভাই তুগুতইয়ার কাছে খলীফার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্রিত হল। তখন খলীফা বাকি সাথিদের নিয়ে তাদের মুকাবেলা করার জন্য বের হলেন। যখন তাদের মুখমুখি হল তখন যে সমস্ত তুর্কী খলীফার সাথে ছিল তারাও তাদের সাথীদের সাথে (অর্থাৎ খলীফার বিপরিত বাহিনীতে) মিলে গেল। এবং সমস্ত তুর্কী খলীফার বিপক্ষে এক দল হয়ে গেল। খলীফার বাহিনী তাদের উপর হামলা করল। তাদের প্রায় চার হাজার লোককে হত্যা করল। অতঃপর তুর্কী বাহিনী আবার খলীফার বাহিনীর উপর হামলা করল। খলীফার বাহিনীকে পরাজিত করল। খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ পরাজিত হলেন। খলীফার হাতে তখন খোলা তলোয়ার। খলীফা চিৎকার করে বলছিল : হে মানুষ সকল ! তোমাদের খলীফা কে সাহায্য কর। অতঃপর তিনি তার একজন সাহায্যকারী আহমাদ ইবনে জামীলের ঘরে প্রবেশ করেন। সেখার তার অস্ত্র রেখে সাদা কাপড় পরিধান করেন। গোপনে চলে যেতে চাইলেন।
أَقْرَأَهُ مُوسَى بْنَ بُغَا، فَاشْتَدَّ غَضَبُهُ عَلَى الْمُهْتَدِي، وَاتَّفَقَا عَلَيْهِ وَقَصَدَا إِلَيْهِ بَلَدَ سَامَرَّا، وَتَرَكَا مَا كَانَا فِيهِ. فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ الْمُهْتَدِي اسْتَخْدَمَ مِنْ فَوْرِهِ جُنْدًا مِنَ الْمَغَارِبَةِ وَالْفَرَاغِنَةِ وَالْأَشْرُوسَنِيَّةِ وَالْأَزْكَشِيَّةِ وَالْأَتْرَاكِ أَيْضًا، وَرَكِبَ فِي جَيْشٍ كَثِيفٍ، فَلَمَّا سَمِعُوا بِهِ رَجَعَ مُوسَى بْنُ بُغَا إِلَى طَرِيقِ خُرَاسَانَ وَأَظْهَرَ بَايَكْبَاكُ السَّمْعَ وَالطَّاعَةَ، فَدَخَلَ فِي ثَانِيَ عَشَرَ رَجَبٍ إِلَى الْخَلِيفَةِ سَامِعًا مُطِيعًا، فَلَمَّا أُوقِفَ بَيْنَ يَدَيْهِ وَحَوْلَهُ الْأُمَرَاءُ وَالسَّادَةُ مِنْ بَنِي هَاشِمٍ، شَاوَرَهُمْ فِيهِ، فَقَالَ لَهُ صَالِحُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ يَعْقُوبَ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ الْمَنْصُورِ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، لَمْ يَبْلُغْ أَحَدٌ مِنَ الْخُلَفَاءِ فِي الشَّجَاعَةِ وَالْإِقْدَامِ مَا بَلَغْتَ، وَقَدْ كَانَ أَبُو مُسْلِمٍ الْخُرَاسَانِيُّ شَرًّا مِنْ هَذَا وَأَكْثَرَ جُنْدًا، وَلَمَّا قَتَلَهُ أَبُو جَعْفَرٍ الْمَنْصُورُ سَكَنَتِ الْفِتْنَةُ وَخَمَدَ صَوْتُ أَصْحَابِهِ. فَأَمَرَ عِنْدَ ذَلِكَ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ بِضَرْبِ عُنُقِ بَايَكْبَاكَ، ثُمَّ أَلْقَى رَأْسَهُ إِلَى الْأَتْرَاكِ، فَلَمَّا رَأَوْا ذَلِكَ أَعْظَمُوهُ وَأَصْبَحُوا مِنَ الْغَدِ مُجْتَمِعِينَ عَلَى أَخِيهِ طُغُوتْيَا، فَخَرَجَ إِلَيْهِمُ الْخَلِيفَةُ فِيمَنْ مَعَهُ، فَلَمَّا الْتَقَوْا خَامَرَتِ الْأَتْرَاكُ الَّذِينَ كَانُوا مَعَ الْخَلِيفَةِ إِلَى أَصْحَابِهِمْ، وَصَارُوا أَلْبًا وَاحِدًا عَلَى الْخَلِيفَةِ وَأَصْحَابِهِ، فَقَتَلَ مِنْهُمْ نَحْوًا مِنْ أَرْبَعَةِ آلَافٍ، ثُمَّ حَمَلُوا عَلَيْهِمْ فَهَزَمُوهُمْ وَانْهَزَمَ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَبِيَدِهِ السَّيْفُ صَلْتًا، وَهُوَ يُنَادِي: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، انْصُرُوا خَلِيفَتَكُمْ. فَدَخَلَ دَارَ أَحْمَدَ بْنِ جَمِيلٍ صَاحِبِ الْمَعُونَةِ، فَوَضَعَ فِيهَا سِلَاحَهُ وَلَبِسَ الْبَيَاضَ، وَأَرَادَ أَنْ يَذْهَبَ
পৃষ্ঠা - ৮৮১৩
কিন্তু আহমাদ ইবনে খাকান তাড়াতাড়ি তার পিছু নিলেন। চলে যাওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলেন। তার দিকে তির ছুড়লেন। তির তার কোলে বিদ্ধ হল। তাকে একটি সওয়ারীতে উঠালেন। তাকে দেখে রাখার জন্য তার পিছে একজন লোক রাখেন। ঐ সময় খলীফার গায়ে শুধু একটা জামা ও একটা পাইজামা ছিল। এভাবে তাকে আহমাদ ইবনে খাকানের বাড়িতে নিয়ে আসেন। ঐখানে লোকজন তাকে চড় ঘুশি মারতে থাকে। তার চেহারাতে থু থু নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা ছয় লক্ষ দিনার পাওনার কথা লিখিত একটা কাগজে তার থেকে  স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। তারপর তাকে একজন লোকের হাতে সোপর্দ করা হয়। সে তার অ-কোষ পা দিয়ে পাড়াতে থাকে, শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। আল্লাহ তায়ালা তার উপর রহমত করুক। এটা ১৮ই রজব বৃস্পতিবারের ঘটনা।

তিনি পাঁচ দিন কম এক বছর খেলাফাত দায়ীত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি ২১৯ হিজরীতে জন্ম গ্রহন করেন। আর কেউ বলেন ২১৫ হিজরীতে জন্ম গ্রহন করেছেন।
তার জানাযা জা’ফার ইবনে আব্দুল ওয়াহেদ পড়িয়েছিলেন। এবং মুনতাসের ইবনে মুতাওয়াক্কিলের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তিনি বাদামী বর্ণের ও হালকা পাতলা গঠনের ছিলেন। উজ্জল ও সুন্দর দাড়ি বিশিষ্ঠ ছিলেন। ছাই বর্ণের সুন্দর চক্ষু বিশিষ্ঠ ছিলেন। তার পেট বড় ও প্রশস্ত কাঁধ ছিল। তিনি বেঁটে ছিলেন। তার দাড়ি লম্বা ছিল। তার উপনাম আবূ আব্দুল্লাহ ছিল।

খতীবে বাগদাদী বলেন : মাজহাব, চাল-চলন, খোদাভীতি ও ইবাদাতের দিক দিয়ে পূর্ববর্তী খলীফাদের থেকে ভালে ছিলেন। তিনি একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তা হল- আলী ইবনে আবী হাশেম ইবনে তিবরাখ আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি ফকীহ মুহাম্মাদ ইবনে হাসান থেকে, তিনি ইবনে আবূ লাইলা থেকে, তিনি দাউদ ইবনে আলী থেকে, তিনি পিতা থেকে, তিনি ইবনে আব্বাস রা. থেকে, ইবনে আব্বাস রা. বলেন :
فَيَخْتَفِيَ، فَعَاجَلَهُ أَحْمَدُ بْنُ خَاقَانَ فِيهَا فَأَخَذَهُ قَبْلَ أَنْ يَذْهَبَ، وَرُمِيَ بِسَهْمٍ، وَطُعِنَ فِي خَاصِرَتِهِ، وَحُمِلَ عَلَى دَابَّةٍ وَخِلْفَهُ سَائِسُ، وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ وَسَرَاوِيلُ حَتَّى حَصَلَ فِي دَارِ أَحْمَدَ بْنِ خَاقَانَ، فَجَعَلَ مَنْ هُنَاكَ يَصْفَعُونَهُ وَيَبْزُقُونَ فِي وَجْهِهِ، وَأَخَذُوا خَطَّهُ بِسِتِّمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ وَسَلَّمُوهُ إِلَى رَجُلٍ فَلَمْ يَزَلْ يَطَأُ خُصْيَتَيْهِ حَتَّى مَاتَ رَحِمَهُ اللَّهُ. وَذَلِكَ يَوْمَ الْخَمِيسِ لِاثْنَتَيْ عَشْرَةَ لَيْلَةً بَقِيَتْ مِنْ رَجَبٍ. وَكَانَتْ خِلَافَتُهُ أَقَلَّ مِنْ سَنَةٍ بِخَمْسَةِ أَيَّامٍ، وَوُلِدَ فِي سَنَةِ تِسْعَ عَشْرَةَ، وَقِيلَ: خَمْسَ عَشْرَةَ وَمِائَتَيْنِ. وَصَلَّى عَلَيْهِ جَعْفَرُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ، وَدُفِنَ بِمَقْبَرَةِ الْمُنْتَصِرِ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ، وَكَانَ أَسْمَرَ رَقِيقًا، أَجْلَى، حَسَنَ اللِّحْيَةِ، أَشْهَبَ، حَسَنَ الْعَيْنَيْنِ، عَظِيمَ الْبَطْنِ، عَرِيضَ الْمَنْكِبَيْنِ، قَصِيرًا، طَوِيلَ اللِّحْيَةِ، يُكَنَّى أَبَا عَبْدِ اللَّهِ. قَالَ الْخَطِيبُ: وَكَانَ مِنْ أَحْسَنِ الْخُلَفَاءِ مَذْهَبًا، وَأَجْمَلِهِمْ طَرِيقَةً، وَأَظْهَرِهِمْ وَرَعًا، وَأَكْثَرِهِمْ عِبَادَةً، وَإِنَّمَا رَوَى حَدِيثًا وَاحِدًا، ثُمَّ أَسْنَدَ عَنْهُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ أَبِي هَاشِمِ بْنِ طِبْرَاخَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ الْفَقِيهِ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ دَاوُدَ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ:
পৃষ্ঠা - ৮৮১৪
হযরত আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বললেন, খেলাফাতের ব্যাপারে আমাদের কী হবে? তিনি বললেন : আমার জন্য নবুয়ত আর তোমাদের জন্য খেলাফাত। তোমাদের থেকেই এর উৎপত্তি হবে তোমাদের উপরই তা শেষ হবে। হযরত আব্বাস রা. কে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : যে তোমাকে ভালোবাসবে সে আমার সুপারিশ পাবে। আর যে তোমার সাথে শত্রুতা পোষণ করবে সে আমার সুপারিশ পাবে না।

খতীবে বাগদাদী এক ঘটনা বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি খলীফা মুহতাদী বিল্লাহের কাছে তার প্রতিপক্ষের সাথে ঝগড়ার বিচার চাইলেন। তখন তিনি তাদের মাঝে ইনসাফের সাথে বিচার করেন। তখন ঐ ব্যক্তি কিছু কবিতা আবৃতি করেন। যার অর্থ-
#    তোমরা এমন ব্যক্তিকে নিজেদের বিচারক বানিয়েছ যিনি উজ্জল চন্দের মত স্পষ্ট ফয়সালা করেছেন।
#    যিনি বিচারের ক্ষেত্রে ঘুশ নেন না। আর কেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির ক্ষতিরও পরোয়া করেন না।
এ কবিতা শুনে খলীফা বললেন, আল্লাহ তায়ালা তোমার সুন্দর কথার প্রতিদান দেন। কিন্তু তোমার এ প্রশংসায় আমি খুশি হইনি। কারণ খেলাফাতের মসনদে এ আয়াত তেলাওয়াত করে বসেছি وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ অর্থ- আমি কিয়মতের দিন ইনসাফের দাড়ি পাল্লা লাগাব। ফলে কারো উপর যাররা পরিমাণও জুলুম করা হবে না। যদিও কারোর আমল শরিসা দানা পরিমাণও হয়। সঠিক হিসাব নেওয়ার জন্য আমিই যতেষ্ঠ।
বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে তার চারপাশের সবাই অনেক কেঁদেছে। লোকদেরকে এ দিন থেকে বেশি কাঁদতে আমি দেখিনি।

কেউ কেউ বলেন, খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ খেলাফাতের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তাকে হত্যা করা পর্যন্ত লাগাতার রোজা রেখেছেন। অনুরূপভাবে তিনি তার খেলাফাত কালে তাকওয়া, সংযম, বেশি বেশি ইবাদাত ও হালাল হারামের ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বনের দিক দিয়ে বনু উমাইয়ার খলীফা ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহ. এর অনুস্বরণ করতে পছন্দ করতেন।

আহমাদ ইবনে সাঈদ আল-উমাবী বলেন : একদিনের কথা আমরা মক্কাতে বসে ছিলাম। আমরা অনেকে একসাথে সেখানে ছিলাম। তখন আমরা ইলমে নাহু ও আরবের কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে ছিলাম। হটাৎ আমাদের সামনে পাগলের মত দেখতে একজন ব্যক্তি কবিতা আবৃতি করতে শুরু করল।
قَالَ الْعَبَّاسُ: «يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا لَنَا فِي هَذَا الْأَمْرِ؟ قَالَ: " لِي النُّبُوَّةُ، وَلَكُمُ الْخِلَافَةُ، بِكُمْ يُفْتَحُ هَذَا الْأَمْرُ، وَبِكُمْ يُخْتَمُ» ". وَقَالَ لِلْعَبَّاسِ: " «مَنْ أَحَبَّكَ نَالَتْهُ شَفَاعَتِي، وَمَنْ أَبْغَضَكَ لَا نَالَتْهُ شَفَاعَتِي» ". وَرَوَى الْخَطِيبُ أَنَّ رَجُلًا اسْتَعْدَى الْمُهْتَدِي عَلَى خَصْمِهِ، فَحَكَمَ بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ، فَأَنْشَأَ الرَّجُلُ يَقُولُ: حَكَّمْتُمُوهُ فَقَضَى بَيْنَكُمْ ... أَبْلَجُ مِثْلُ الْقَمَرِ الزَّاهِرِ لَا يَقْبَلُ الرِّشْوَةَ فِي حُكْمِهِ ... وَلَا يُبَالِي غَبَنَ الْخَاسِرِ فَقَالَ لَهُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ: أَمَّا أَنْتَ أَيُّهَا الرَّجُلُ، فَأَحْسَنَ اللَّهُ مَقَالَتَكَ، وَأَمَّا أَنَا فَإِنِّي مَا جَلَسْتُ حَتَّى قَرَأْتُ: {وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ} [الأنبياء: 47] قَالَ: فَبَكَى النَّاسُ حَوْلَهُ. فَمَا رُئِيَ بَاكِيًا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ الْيَوْمِ. وَقَالَ بَعْضُهُمْ: سَرَدَ الْمُهْتَدِي الصَّوْمَ مُنْذُ وَلِيَ إِلَى أَنْ قُتِلَ رَحِمَهُ اللَّهُ. وَكَانَ يُحِبُّ الِاقْتِدَاءَ بِمَا سَلَكَهُ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ الْأُمَوِيُّ فِي أَيَّامِ خِلَافَتِهِ مِنَ الْوَرَعِ وَالتَّقَشُّفِ وَكَثْرَةِ الْعِبَادَةِ وَشِدَّةِ الِاحْتِيَاطِ. وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الْأُمَوِيُّ: كُنَّا جُلُوسًا بِمَكَّةَ وَعِنْدِي جَمَاعَةٌ وَنَحْنُ نَبْحَثُ فِي النَّحْوِ وَأَشْعَارِ الْعَرَبِ، إِذْ وَقَفَ عَلَيْنَا رَجُلٌ مَجْنُونٌ، فَأَنْشَأَ يَقُولُ:
পৃষ্ঠা - ৮৮১৫
হে মূর্খের উৎস ! তোমাদের আল্লাহ সামনে শরম লাগে না?  ۞  তোমরা এ সাধারণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত ! অথচ মানুষ এর থেকে অনেক বড় গুরুত্বপূন বিষয়ের মধ্যে লিপ্ত আছে।
তোমাদের ইমাম হত্যা করে কবর দেয়া হয়েছে  ۞  ইসলামের ঐক্যে ফাটল ধরেছে।
অথচ তোমরা কবিতা ও নাহু নিয়ে বসে আছ  ۞  তোমাদের অবস্থা চিৎকার করে বলছে তোমাদের বুদ্ধি কম।
আহমাদ ইবনে সাঈদ বলেন : এরপর আমরা বিষয়টা চিন্তা করলাম এবং এ দিন তারিখ লিখে রাখলাম। পরে জানতে পারলাম ঐ দিনে খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ কে হত্যা করা হয়েছিল। সে দিনটি ছিল ১৬ ই রজব ২৫৬ সাল।

মু’তামিদ আলাল আল্লাহ এর খেলাফাত :
তার নাম : আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিল আলাল আল্লাহ। ইবনে ফিতয়ান নামে প্রশিদ্ধ। ১৩ ই রজব মঙ্গলবারের দিন আমীর ইয়ারজুখের ঘরে বিশেষ কিছু লোককে তিনি খেলাফাতের বায়াত গ্রহন করেন। এটা মুহতাদী বিল্লাহের খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে অপসরণের কয়েক দিন আগের ঘটনা। এরপর ২২ শে রজব ব্যাপকভাবে মানুষ তার হাতে বায়াত হন। ১০ ই রজব মূসা ইবনে বুগা ও মুফলিহ সুররা মান রআ (সমাররা) এলাকাতে চলে গেলেন। মূসা ইবনে বুগা তার বাড়িতে চলে গেলেন। মানুষ শান্ত হয়ে গেল। মূসা ইবনে বুগা ও মুফলিহের কারণে যে ফেতনা শুরু হয়েছিল তা শেষ হয়ে গেল।

অপর দিকে ঐ খারেজী যিনি আলাবী (আহলে বাইত হওয়ার) দাবী করেছিলেন, তিনি বসরা এলাক অবরোধ করে রেখেছিলেন। খলীফার বাহিনী তাদের মোকাবেলা করতেছিল। তিনি সবসময় তাদের কে ধুমকি দিতেছিলেন। তাদের পাশ দিয়ে যে সমস্ত কাফেলা খাদ্য ইত্যাদি নিয়ে আসত তা তিনি ছিনিয়ে নিতেন।
أَمَا تَسْتَحُونَ اللَّهَ يَا مَعْدِنَ الْجَهْلِ ... شُغِلْتُمْ بِذَا وَالنَّاسُ فِي أَعْظَمِ الشُّغْلِ إِمَامُكُمْ أَضْحَى قَتِيلًا مُجَدَّلًا ... وَقَدْ أَصْبَحَ الْإِسْلَامُ مُفْتَرِقَ الشَّمْلِ وَأَنْتُمْ عَلَى الْأَشْعَارِ وَالنَّحْوِ عُكَّفٌ ... تَضِجُّونَ بِالْأَصْوَاتِ فِي قِلَّةِ الْعَقْلِ قَالَ: فَنَظَرْنَا وَأَرَّخْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ فَإِذَا الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ قَدْ قُتِلَ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ، وَكَانَ يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ لِأَرْبَعَ عَشْرَةَ بَقِيَتْ مِنْ رَجَبٍ سَنَةَ سِتٍّ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ. خِلَافَةُ الْمُعْتَمِدِ عَلَى اللَّهِ أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ عَلَى اللَّهِ وَيُعْرَفُ بِابْنِ فِتْيَانَ بُويِعَ لَهُ بِالْخِلَافَةِ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ لِثَلَاثَ عَشْرَةَ خَلَتْ مِنْ رَجَبٍ مِنْ سَنَةِ سِتٍّ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِي دَارِ الْأَمِيرِ يَارْجُوخَ، وَذَلِكَ قَبْلَ خَلْعِ الْمُهْتَدِي بِأَيَّامٍ، ثُمَّ كَانَتْ بَيْعَةُ الْعَامَّةِ يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ لِثَمَانٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ. وَلِعَشَرٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ دَخَلَ مُوسَى بْنُ بُغَا، وَمُفْلِحٌ إِلَى سُرَّ مَنْ رَأَى، فَنَزَلَ مُوسَى فِي دَارِهِ وَسَكَنَ النَّاسُ، وَخَمَدَتِ الْفِتْنَةُ هُنَالِكَ. وَأَمَّا صَاحِبُ الزَّنْجِ الْمُدَّعِي أَنَّهُ عَلَوِيٌّ فَهُوَ مُحَاصِرٌ لِلْبَصْرَةِ، وَالْجُيُوشُ الْخَلِيفِيَّةُ فِي وَجْهِهِ دُونَهَا، وَهُوَ فِي كُلِّ وَقْتٍ يَقْهَرُهَا، وَيَغْنَمُ مَا يَفِدُ إِلَيْهِمْ فِي الْمَرَاكِبِ مِنَ
পৃষ্ঠা - ৮৮১৬
এরপর আস্তে আস্তে উবুল্লাহ ও আব্বাদান অন্যান্য কিছু শহর দখল করে নেন। বসরাবাসী তাকে অনেক ভয় পেতে লাগল। দিন দিন তার শক্তি বাড়তেছিল। তার জনবল সৈন্য-সামান্তও বাড়তেছিল। এ বছরের শেষ পর্যন্ত তার এ অবস্থা ছিল।

এ বছর কুফাতে আরেক জন লোক আত্মপ্রকাশ করেন। তার নাম : আলী ইবনে যায়েদ আত-তালী। তখন খলীফার বাহিনী তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। অবশেষে আলী ইবনে যায়েদ বিজয় লাভ করে। ফলে কুফাতে তার কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তার দাপট বাড়তে থাকে। দিন দিন তিনি মারাত্মক রূপ ধারণ করেন।

এ বছর মুহাম্মাদ ইবনে ওয়াছেল আত-তামিমী ফারেসের প্রতিনিধি হারেস ইবনে সীমা আশ-শারাবীর উপর হামলা করেন। তাকে হত্যা করেন। তারপর ফারেস দখল করে নেন।

এ বছর রমযান মাসে রায় নামক শহর হুসাইন ইবনে যায়েদ আত-তালী দখল করেন। কিন্তু শাওয়াল মাসে খলীফা মু’তামিদের পক্ষ থেকে মুসা ইবনে বুগা তার উপর হামলা করেন। খলীফা নিজেই তাকে বিদায় জানানে বের হলেন।

এ বছর দিমাশকের ফটকের পাশে এক বড় ফেতনার উৎপত্তি হয়। দিমাশকের প্রতিনিধি আমাজুর এবং ইবনে ঈসা ইবনে শায়েখের মাঝে ভিষণ লড়াই হয়। আমাজুরের সাথে প্রায় চারশত ঘোর সওয়ার ছিল। আর ইবনে ঈসার সাথে বিশ হাজার লোকের বিশাল বাহিনী ছিল। কিন্তু আমাজুর তাকে পরাজিত করল।
অতঃপর খলীফা ইবনে শায়েখ কে আরমানিয়ার প্রতিনিধি বানালেন। তবে শর্ত দিলেন যে, তিনি শাম এলাকা ছেড়ে দিবেন। এ শর্ত তিনি মেনে নিলেন। এবং তিনি শাম এলাকা ছেড়ে চলে গেলেন।

এ বছর হজ্জ পরিচালনা করেন মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ ইবনে ঈসা ইবনে আবূ জা’ফার আল-মানসুর। এবং হাজীদের মধ্যে আবূ আহমাদ ইবনে মুতওয়াক্কিল ও ছিলেন। তিনি দ্রুততার সাথে হজ্জ সম্পান্ন করে দ্রুত সামরায় যান।
الْأَطْعِمَةِ وَغَيْرِهَا، وَاسْتَحْوَذَ بَعْدَ ذَلِكَ عَلَى الْأُبُلَّةِ وَعَبَّادَانَ وَغَيْرِهِمَا مِنَ الْبِلَادِ، وَخَافَ مِنْهُ أَهْلُ الْبَصْرَةِ خَوْفًا شَدِيدًا، وَكُلُّ مَا لِأَمْرِهِ يَقْوَى، وَلِجُيُوشِهِ تَكْثُرُ، وَلِعَدَدِهِ يَتَزَايَدُ، وَلَمْ يَزَلْ ذَلِكَ دَأْبَهُ إِلَى انْسِلَاخِهَا. وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ خَرَجَ رَجُلٌ آخَرُ بِالْكُوفَةِ يُقَالُ لَهُ: عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ الطَّالِبِيُّ، وَجَاءَهُ جَيْشٌ مِنْ جِهَةِ الْخَلِيفَةِ فَكَسَرَهُ الطَّالِبِيُّ، وَاسْتَفْحَلَ أَمْرُهُ بِالْكُوفَةِ وَقَوِيَتْ شَوْكَتُهُ، وَتَفَاقَمَ أَمْرُهُ. وَفِيهَا وَثَبَ مُحَمَّدُ بْنُ وَاصِلٍ التَّمِيمِيُّ عَلَى نَائِبِ فَارِسَ الْحَارِثِ بْنِ سِيمَا الشَّرَابِيِّ، فَقَتَلَهُ وَاسْتَحْوَذَ عَلَى بِلَادِ فَارِسَ. وَفِي رَمَضَانَ مِنْهَا تَغَلَّبَ الْحَسَنُ بْنُ زَيْدٍ الطَّالِبِيُّ عَلَى بِلَادِ الرَّيِّ فَتَوَجَّهَ إِلَيْهِ مُوسَى بْنُ بُغَا فِي شَوَّالٍ مِنْ عِنْدِ الْمُعْتَمَدِ، وَخَرَجَ الْخَلِيفَةُ لِتَوْدِيعِهِ. وَفِيهَا كَانَتْ وَقْعَةٌ عَظِيمَةٌ عَلَى بَابِ دِمَشْقَ بَيْنَ أَمَاجُورَ نَائِبِ دِمَشْقَ وَلَمْ يَكُنْ مَعَهُ إِلَّا قَرِيبٌ مِنْ أَرْبَعِمِائَةِ فَارِسٍ وَبَيْنَ ابْنٍ لِعِيسَى ابْنِ الشَّيْخِ، وَهُوَ فِي قَرِيبٍ مَنْ عِشْرِينَ أَلْفًا، فَهَزَمَهُ أَمَاجُورُ. وَجَاءَتْ مِنَ الْخَلِيفَةِ وِلَايَةٌ لِابْنِ الشَّيْخِ ; بِلَادَ أَرْمِينِيَّةَ عَلَى أَنْ يَتْرُكَ أَهْلَ الشَّامِ فَقَبِلَ ذَلِكَ وَانْصَرَفَ عَنْهُمْ. وَحَجَّ بِالنَّاسِ فِي هَذِهِ السَّنَةِ مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ الْمَنْصُورِ، وَكَانَ فِي جُمْلَةِ الْحُجَّاجِ أَبُو أَحْمَدَ ابْنُ الْمُتَوَكِّلِ، فَتَعَجَّلَ وَعَجَّلَ السَّيْرَ إِلَى سَامَرَّا،
পৃষ্ঠা - ৮৮১৭
তিনি ২৭ শে জিলহজ্জ বুধবারের দিন সামাররায় পৌছান।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :
এ বছর রজব মাসে খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ ইন্তেকাল করেন। যে আলোচনা পূর্বে করা হয়েছে।
যুবায়ের ইবনে বাক্কার ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুছআব ইবনে সাবেত ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের ইবনে আওয়াম আল-কুরায়শী আয-যুবায়েরী। যিনি মক্কা মুকারমার কাজী ছিলেন। তিনি বাগদাদে এসেছিলেন এবং এখানে হাদীস চর্চা করেছিলেন। এবং তার ‘আনসাবু কুরাইশ’ নামে তার একটি কিতাব আছে। নসব সম্পর্কে অনেক বড় জ্ঞানী ছিলেন। তার এ কিতাবে এ বিষয়ে পরিপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। ইমাম ইবনে মাজাহ ও অন্যান্যরা তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি এ বছরের জিলকদাহ মাসে মক্কা মুকাররমায় ইন্তেকাল করেন। ঐ সময় তার বয়স  ৮৪ বছর বয়সে হয়েছিল। তাকে মক্কাতেই দাফন করা হয়। আল্লাহ তায়ালা তাকে রহমত দান করুক।
সহীহ বুখারীর সংকলক ইমাম বুখারী রহ. এ বছর ইন্তেকাল করেন।

মুসান্নিফ রহ. বলেন : আমার লিখিত বুখারী শরীফের ব্যখ্যা গ্র‎েহ্নর শুরুতে ইমাম বুখারীর জীবনী বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখানে তা থেকে সমান্য কিছু আলোচনা করব। আল্লাহ তায়ালার কাছেই সাহায্য কামনা করি।
নাম ও বংশ : মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুগীরাহ ইবনে বারদিঝবাহ আল-জু’ফী। তার কুনিয়াত আবূ আব্দুল্লাহ আল-বুখারী। তিনি হাদীসের হাফেয ছিলেন। তার সময়ে হাদীস বিষরদদের ইমাম ছিলেন।
فَدَخَلَهَا لَيْلَةَ الْأَرْبِعَاءِ لِثَلَاثَ عَشْرَةَ بَقِيَتْ مِنْ ذِي الْحِجَّةِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَمِمَّنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ: الْخَلِيفَةُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ فِي رَجَبٍ، كَمَا تَقَدَّمَ. وَالزُّبَيْرُ بْنُ بَكَّارِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُصْعَبِ بْنِ ثَابِتِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ، الْقُرَشِيُّ الزُّبَيْرِيُّ، قَاضِي مَكَّةَ قَدِمَ بَغْدَادَ وَحَدَّثَ بِهَا، وَلَهُ كِتَابُ " أَنْسَابِ قُرَيْشٍ "، وَكَانَ مِنْ أَعْلَمِ النَّاسِ بِذَلِكَ، وَكِتَابُهُ فِي ذَلِكَ حَافِلٌ جِدًّا. وَقَدْ رَوَى عَنْهُ ابْنُ مَاجَهْ وَغَيْرُهُ، وَقَدْ وَثَّقَهُ الدَّارَقُطْنِيُّ وَالْخَطِيبُ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَعَلَى كِتَابِهِ. وَتُوُفِّيَ بِمَكَّةَ عَنْ أَرْبَعٍ وَثَمَانِينَ سَنَةً فِي ذِي الْقَعْدَةِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ، وَدُفِنَ بِمَكَّةَ رَحِمَهُ اللَّهُ. الْبُخَارِيُّ صَاحِبُ " الصَّحِيحِ ". وَقَدْ ذَكَرْنَا لَهُ تَرْجَمَةً حَافِلَةً فِي أَوَّلِ شَرْحِنَا " لِصَحِيحِهِ "، وَلْنَذْكُرْ هَاهُنَا نُبْذَةً يَسِيرَةً مِنْ ذَلِكَ، فَنَقُولُ وَبِاللَّهِ الْمُسْتَعَانُ: هُوَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ بَرْدِزَبَهَ، وَيُقَالُ: بَذْدِزَبَهَ، الْجُعْفِيُّ مَوْلَاهُمْ، أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْبُخَارِيُّ الْحَافِظُ، إِمَامُ أَهْلِ الْحَدِيثِ
পৃষ্ঠা - ৮৮১৮
তিনি তার সময়ে সকলের অনুস্বরণীয় ব্যক্তি ছিলেন। তার সমসাময়িক সকলের থেকে তিনি অগ্রগামী ছিলেন। তার কিতাব সহীহ বুখারী খতম করে বৃষ্টি চাইলে ফলপ্রসূ হয়। তার এ কিতাব গ্রহনযোগ্য ও তাতে বর্ণিত সমস্ত হদীস সহীহ হওয়ার ব্যাপারে সকল ওলামায়ে কেরাম একমত।

ইমাম বুখারী ১৩ ই শাওয়াল ১৯৪ সালে জুমআর রাতে তিনি জন্ম গ্রহন করেন। ছোট বেলায় তার পিতা মারা যায়। তার মায়ের কাছেই তিনি লালিত পালিত হন। মক্তবে ইলেম শিক্ষা করার সময় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অনেক হাদীস এমনিতেই মুখস্ত হয়ে যায়। ১৬ বছর বয়সে তিনি প্রশিদ্ধ কিতবসমূহ পড়ে শেষ করেন। এমনকি তার ব্যাপারে বলা হয় তিন ছোট বেলায় সত্তর হাজার হাদীস মুখস্ত হয়ে যায়। ১৮ বছর বয়সে তিন হজ্জ করেন। এবং তিনি মক্কায় অবস্থান করে সেখানে হাদীস শিখেন। তারপর তিনি বিভিন্ন শহরের মুহাদ্দিসদের কাছে গিয়ে হাদীস সংগ্রহ করেন। তিনি এক হাজারেরও বেশি উস্তাদ থেকে হাদীস গ্রহন করেছেন। আর তার থেকে অনেক মানুষ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

খতীবে বাগদাদী ইমাম বুখারীর ছাত্র ফিরাবরী থেকে বর্ণনা করেন যে, ফিরাবরী বলেন : ইমাম বুখারী থেকে প্রায় নব্বই হাজার ছাত্র বুখারী শুনেছে। কিন্তু বর্তমান আমি ছাড়া আর কেউ বেচে নেই। বর্তমানে মানুষের হাতে যে বুখারী আছে তা তার এই ছাত্র ফিরাবরী থেকে বর্ণিত। তিনি ছাড়াও হাম্মাদ ইবনে শাকের, ইবরাহীম ইবনে মা’কাল, তাহের ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মাখলাদ, আবূ তালহা মানসুর ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী আল-বাঝদাবী আন-নাসাফী প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেন।
فِي زَمَانِهِ، وَالْمُقْتَدَى بِهِ فِي أَوَانِهِ، وَالْمُقَدَّمُ عَلَى سَائِرِ أَضْرَابِهِ وَأَقْرَانِهِ، وَكِتَابُهُ " الصَّحِيحُ " يُسْتَسْقَى بِقِرَاءَتِهِ الْغَمَامُ، وَأَجْمَعَ عَلَى قَبُولِهِ وَصِحَّةِ مَا فِيهِ أَهْلُ الْإِسْلَامِ. وُلِدَ الْبُخَارِيُّ - رَحِمَهُ اللَّهُ - فِي لَيْلَةِ الْجُمُعَةِ الثَّالِثَ عَشَرَ مِنْ شَوَّالٍ سَنَةَ أَرْبَعٍ وَتِسْعِينَ وَمِائَةٍ، وَمَاتَ أَبُوهُ وَهُوَ صَغِيرٌ، فَنَشَأَ فِي حِجْرِ أُمِّهِ، فَأَلْهَمَهُ اللَّهُ حِفْظَ الْحَدِيثِ وَهُوَ فِي الْمَكْتَبِ، وَقَرَأَ الْكُتُبَ الْمَشْهُورَةَ وَهُوَ ابْنُ سِتَّ عَشْرَةَ سَنَةً حَتَّى قِيلَ: إِنَّهُ كَانَ يَحْفَظُ وَهُوَ صَبِيٌّ سَبْعِينَ أَلْفَ حَدِيثٍ سَرْدًا. وَحَجَّ وَعَمُرُهُ ثَمَانِي عَشْرَةَ سَنَةً، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ يَطْلُبُ بِهَا الْحَدِيثَ، ثُمَّ ارْتَحَلَ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى سَائِرِ مَشَايِخِ الْحَدِيثِ فِي الْبُلْدَانِ الَّتِي أَمْكَنَهُ الرِّحْلَةُ إِلَيْهَا، وَكَتَبَ عَنْ أَكْثَرَ مِنْ أَلْفِ شَيْخٍ، وَرَوَى عَنْهُ خَلَائِقُ وَأُمَمٌ. وَقَدْ رَوَى الْخَطِيبُ الْبَغْدَادِيُّ عَنِ الْفِرَبْرِيِّ، أَنَّهُ قَالَ: سَمِعَ " الصَّحِيحَ " مِنَ الْبُخَارِيِّ مَعِي نَحْوٌ مَنْ تِسْعِينَ أَلْفًا، لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ أَحَدٌ غَيْرِي. وَقَدْ رُوِيَ " الْبُخَارِيُّ " مِنْ طَرِيقِ الْفِرَبْرِيِّ - كَمَا هِيَ رِوَايَةُ النَّاسِ الْيَوْمَ مِنْ طَرِيقِهِ - وَحَمَّادِ بْنِ شَاكِرٍ، وَإِبْرَاهِيمَ بْنِ مَعْقِلٍ، وَطَاهِرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ مَخْلَدٍ، وَآخِرُ مَنْ حَدَّثَ عَنْهُ أَبُو طَلْحَةَ مَنْصُورُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ الْبَزْدَوِيُّ النَّسَفِيُّ،
পৃষ্ঠা - ৮৮১৯
এই নাসাফী ৩২৯ সালে ইন্তেকাল করেন। আমীর আবূ নাসর ইবনে মাকুলা তাকে তাওছিক করেছেন (ইলমে হাদীসের বিশেষ পরিভাষা। অর্থাৎ তিনি এমন ব্যক্তি যে তার থেকে বর্ণিত হাদীস গ্রহনযোগ্য)।
ইমাম মুসলিমও সহীহ মুসলিম ছাড়া অন্য কিতাবে তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুসলিম রহ. তার ছাত্র ছিলেন এবং তাকে উস্তাদ হিসেবে সম্মান করতেন। ইমাম তিরমিযীও তার প্রশিদ্ধ হাদীসের কিতাব জামেউত তিরমিযীতে এবং ইমাম নাসায়ী তার সুনানে নাসায়ীতে قال بعضهم (অর্থ- কেউ কেউ বলেন) অধ্যায়ে তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ইমাম বুখারী আট বার বাগদাদে গেছেন। প্রতিবার ইমাম আহমাদ ইবনে হামম্বালের সাথে সাক্ষাত করেছেন। ইমাম আহমাদ তাকে বাগদাদে থাকার প্রতি উৎসাহিত করতেন। খোরাসানে থাকার প্রতি নিরুৎসাহিত করতেন।

রাতে ইমাম বুখারী রহ. এর ঘুম ভেঙ্গে গেলে উঠে বাতি জ্বালাতেন। এবং ঐ সময় যে সমস্ত ইলমী বিষয়বস্তু মনে আসত সেগুলো লিখতেন। তারপর বাতি বন্ধ করে দিতেন। এরপর আবার ঘুম ভাঙ্গলে আবার এরুপ করতেন। এমনকি তিনি এক রাতে বিশ বার এমন করেছেন।

তার ছোট বেলায় কোন কারণে চোখে দেখতেন না। একদিন তার মা ইবরাহীম আ. কে সপ্নে দেখলেন। তখন ইবরাহীম আ. তাকে বললেন : হে উমুক ! তুমি বেশি বেশি দুআ করার কারণে আল্লাহ তায়ালা তোমার ছেলের চোখ ভালো করে দিছেন। (বর্ণনাকারীর সন্দেহ :) অথবা ইবরাহীম আ. বলেছেন : তুমি বেশি বেশি কান্দার কারণে আল্লাহ তায়ালা তোমার ছেলের চোখ ভালো করে দিছেন। অতঃপর সকলে দেখা গেল তার চোখ সম্পূর্ণ ভালে।

ইমাম বুখারী রহ. বলেন : একবার আমি আমার লিখিত হাদীসগুলো অনুমান করলাম তো দেখলাম সনদ বিশিষ্ট প্রায় দুই লাখ হাদীস আমি লিখেছি। সবগুলো তার মুখস্ত ছিল।

একবার ইমাম বুখারী রহ. সমরকন্দে গিছিলেন। সেখানে চারশত মুহাদ্দিস ওলামায়ে কেরাম একত্রিত হয়।
وَقَدْ تُوُفِّيَ النَّسَفِيُّ هَذَا فِي سَنَةِ تِسْعٍ وَعِشْرِينَ وَثَلَاثِمِائَةٍ، وَوَثَّقَهُ الْأَمِيرُ أَبُو نَصْرِ بْنُ مَاكُولَا. وَمِمَّنْ رَوَى عَنِ الْبُخَارِيِّ مُسْلِمٌ فِي غَيْرِ " الصَّحِيحِ "، وَكَانَ مُسْلِمٌ يُتَلْمِذُ لَهُ وَيُعَظِّمُهُ، وَرَوَى عَنْهُ التِّرْمِذِيُّ فِي " جَامِعِهِ "، وَالنَّسَائِيُّ فِي " سُنَنِهِ " فِي قَوْلِ بَعْضِهِمْ. وَقَدْ دَخَلَ بَغْدَادَ ثَمَانِ مَرَّاتٍ، وَفِي كُلٍّ مِنْهَا يَجْتَمِعُ بِالْإِمَامِ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ فَيَحُثُّهُ أَحْمَدُ عَلَى الْمُقَامِ بِبَغْدَادَ، وَيَلُومُهُ عَلَى الْإِقَامَةِ بِخُرَاسَانَ. وَقَدْ كَانَ الْبُخَارِيُّ يَسْتَيْقِظُ فِي اللَّيْلَةِ الْوَاحِدَةِ مِنْ نَوْمِهِ فَيُورِي السِّرَاجَ، وَيَكْتُبُ الْفَائِدَةَ تَمُرُّ بِخَاطِرِهِ ثُمَّ يُطْفِئُ سِرَاجَهُ، ثُمَّ يَقُومُ مَرَّةً أُخْرَى حَتَّى كَانَ يَتَعَدَّدُ ذَلِكَ مِنْهُ قَرِيبًا مِنْ عِشْرِينَ مَرَّةً. وَقَدْ كَانَ أُصِيبَ بَصَرُهُ وَهُوَ صَغِيرٌ، فَرَأَتْ أُمُّهُ إِبْرَاهِيمَ الْخَلِيلَ، عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ، فَقَالَ: يَا هَذِهِ، قَدْ رَدَّ اللَّهُ عَلَى وَلَدِكِ بَصَرَهُ بِكَثْرَةِ دُعَائِكِ، أَوْ قَالَ: بُكَائِكِ. فَأَصْبَحَ وَهُوَ بَصِيرٌ. وَقَالَ الْبُخَارِيُّ: فَكَّرْتُ الْبَارِحَةَ فَإِذَا أَنَا قَدْ كَتَبْتُ فِي مُصَنَّفَاتِي نَحْوًا مِنْ مِائَتَيْ أَلْفِ حَدِيثٍ مُسْنَدَةً. وَكَانَ يَحْفَظُهَا كُلَّهَا. وَدَخَلَ مَرَّةً إِلَى سَمَرْقَنْدَ فَاجْتَمَعَ بِهِ أَرْبَعُمِائَةٍ مِنْ عُلَمَاءِ الْحَدِيثِ بِهَا، فَرَكَّبُوا
পৃষ্ঠা - ৮৮২০
ন হুজ্র তার সম্পর্কে বলেন : তার মত জ্ঞানী কেহ নেই।
মাহমুদ ইবনে নায্র
তারা অনেক হাদীকে এলোমেলো করে ইমাম বুখারীর সামনে পেশ করলেন। এক স্থানের সনদ কে অন্য স্থানে লাগালেন। সনদে এক ব্যক্তির স্থানে অন্য ব্যক্তির নাম ঢুকিয়ে দিলেন। এক হাদীসে অন্য হাদীসের সনদ ঢুকিয়ে দিলেন। এভাবে অনেক পরিবর্তন করে ইমাম বুখারী কে পরিক্ষা করার জন্য তার সামনে পেশ করলেন। তখন তিনি কোন হাদীসে কোন সনদে বর্ণিত তা বলে দিলেন। কোন সনদে বা মূল হাদীসে কোথায় কি সমাস্য তা সঠিকভাবে বলে দিলেন।
অনুরূপ বাগদাদের একশত মুহাদ্দিস কেও এভাবে বলেছিলেন।

তার ব্যপারে বলা হত তিনি কোন কিতাব একবার দেখলে সে কিতাব তার মুখস্ত হয়ে যেত। এধরনের অনেক কথা তার ব্যপারে প্রশিদ্ধ ছিল।

তার জামানার মুরুব্বি ও তার সমবয়সী ওলামায়ে কেরাম তার অনেক প্রশংসা করেছেন-
ইমাম আহমাদ রহ. তার সম্পর্কে বলেন : খেরাসান তার মত আর কাউকে জন্ম দিতে পারেনি।
আলী ইবনে মাদানী তার সম্পর্কে বলেন : ইমাম বুখারী তার নিজের মত অন্য কাউকে দেখিনি। অর্থাৎ তার সময়ে তার মত কেউ ছিল না।
ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ তার সম্পর্কে বলেন : যদি তিনি হাসান বসরী যুগেও আসতেন তাহলেও মানুষ হাদীস ও ফেকহের জন্য তার মুখাপেক্ষী হত।
আবূ বকর ইবনে আবী শাইবা ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে নুমাইর তার সম্পর্কে বলেন : তার মত আর কাউকে দেখিনি।
আলী ইবনে হুজর তার সম্পর্কে বলেন : তার মত জ্ঞানী নেই।
মাহমুদ ইবনে নাযর আবূ সাহল শাফিয়ী তার ব্যাপারে বলেন : আমি বসরা, শাম, হেজাজ ও কুফাতে গেছি। এ সমস্ত এলাকার ওলামাদের কে দেখেছি যে, তাদের সামনে যখন মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীর আলোচনা করা হয় তখন সবাই তাকে নিজেদের থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন।
আবুল আব্বাস আদ-দাগুলী বলেন : বাগদাদবাসী ইমাম বুখারীর কাছে একটি কবিতা লিখে পাঠায়। নিম্নে কবিতাটির অর্থ দেয় হল-
لَهُ أَسَانِيدَ وَأَدْخَلُوا إِسْنَادَ الشَّامِ فِي إِسْنَادِ الْعِرَاقِ، وَخَلَطُوا الرِّجَالَ فِي الْأَسَانِيدِ، وَجَعَلُوا مُتُونَ الْأَحَادِيثِ عَلَى غَيْرِ أَسَانِيدِهَا، ثُمَّ قَرَءُوهَا عَلَى الْبُخَارِيِّ، فَرَدَّ كُلَّ حَدِيثٍ إِلَى إِسْنَادِهِ، وَقَوَّمَ تِلْكَ الْأَحَادِيثَ وَالْأَسَانِيدَ كُلَّهَا، وَمَا تَعَلَّقُوا عَلَيْهِ بِسَقْطَةٍ فِي إِسْنَادٍ وَلَا فِي مَتْنٍ. وَكَذَلِكَ صَنَعَ بِمِائَةِ مُحَدِّثٍ فِي أَهْلِ بَغْدَادَ. وَقَدْ ذَكَرُوا أَنَّهُ كَانَ يَنْظُرُ فِي الْكِتَابِ مَرَّةً وَاحِدَةً فَيَحْفَظُ مَا فِيهِ مِنْ نَظْرَةٍ وَاحِدَةٍ، وَالْأَخْبَارُ عَنْهُ فِي هَذَا الْمَعْنَى كَثِيرَةٌ. وَقَدْ أَثْنَى عَلَيْهِ عُلَمَاءُ زَمَانِهِ مِنْ شُيُوخِهِ وَأَقْرَانِهِ ; فَقَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: مَا أَخْرَجَتْ خُرَاسَانُ مِثْلَهُ. وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ: لَمْ يَرَ الْبُخَارِيُّ مِثْلَ نَفْسِهِ. وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ: لَوْ كَانَ فِي زَمَنِ الْحَسَنِ لَاحْتَاجَ النَّاسُ إِلَيْهِ لِمَعْرِفَتِهِ بِالْحَدِيثِ وَفِقْهِهِ. وَقَالَ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ: مَا رَأَيْنَا مِثْلَهُ. وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ: لَا أَعْلَمَ مِثْلَهُ. وَقَالَ مَحْمُودُ بْنُ النَّضْرِ أَبُو سَهْلٍ الشَّافِعِيُّ: دَخَلْتُ الْبَصْرَةَ وَالشَّامَ وَالْحِجَازَ وَالْكُوفَةَ، وَرَأَيْتُ عُلَمَاءَهَا كُلَّمَا جَرَى ذِكْرُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْبُخَارِيِّ فَضَّلُوهُ عَلَى أَنْفُسِهِمْ. وَقَالَ أَبُو الْعَبَّاسِ الدَّغُولِيُّ: كَتَبَ أَهْلُ بَغْدَادَ إِلَى الْبُخَارِيِّ:
পৃষ্ঠা - ৮৮২১
যতক্ষন পর্যন্ত আপনি মুসমানদের মাঝে বেচে থাকবেন ততক্ষন পর্যন্ত মুসলমানরা খায়ের বরকতের মধ্যে থাকবে  ۞  আর আপনার পরে তাদের মধ্যে খায়ের বরকত থাকবে না।
ফাল্লাস ইমাম বুখারী সম্পর্কে বলেন : যে হাদীস ইমাম বুখারী জানে না সেটা হাদীসই না। (অর্থাৎ সেটা সহীহ সনদে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত না)
নুআইম ইবনে হাম্মাদ তার সম্পর্কে বলেন : তিনি এই উম্মতের ফকীহ। অনুরূপ কথা ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম আদ-দাওরাকীও বলেছেন।
অনেকে ইমাম বুখারী রহ. কে ফেকহ হাদীসের দিক দিয়ে ইমাম আহমাদ রহ. ও ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহের উপর প্রাধান্য দিছেন।
কুতাইবা ইবনে সাঈদ ইমাম বুখারী সম্পর্কে বলেন : পূর্ব পশ্চিম সব দিকে থেকে আমার কাছে অনেক লোক আসছে। কিন্তু মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীর মত কেউ আসেনি।
রজা ইবনে মুরাজ্জা তার সম্পর্কে বলেন : তার যামানার ওলামাদের উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব মহিলার উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের মত। (তার পূর্ববর্তী সাহাবা তাবেয়ীনদের উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব নয়।)
কেউ বলেন : তিনি জমিনের উপর চলা ফেরা করে এমন, আল্লাহর এক নিদর্শন।
আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আদ-দারেমী তার সম্পর্কে বলেন : ইমাম বুখারী আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফকীহ, বড় আলেম, ইলমের সুক্ষ সুক্ষ বিষয় বেশি জানতেন ও সবার থেকে বেশি ইলম অন্নেষণ করতেন।
ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ বলেন : ইমাম বুখারী আমার থেকে বেশি দূরদর্শী ছিলেন।
আবু হাতেম রাজী বলেন : মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল বুখারীর থেকে বড় আলেম ইরাকে আসেনি।
ওবাইদ ইজলী বলেন :
الْمُسْلِمُونَ بِخَيْرٍ مَا حَيِيتَ لَهُمْ ... وَلَيْسَ بَعْدَكَ خَيْرٌ حِينَ تُفْتَقَدُ وَقَالَ الْفَلَّاسُ: كُلُّ حَدِيثٍ لَا يَعْرِفُهُ الْبُخَارِيُّ فَلَيْسَ بِحَدِيثٍ. وَقَالَ نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ: هُوَ فَقِيهُ هَذِهِ الْأُمَّةِ. وَكَذَا قَالَ يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ. وَمِنْهُمْ مَنْ فَضَّلَهُ فِي الْفِقْهِ وَالْحَدِيثِ عَلَى الْإِمَامِ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ، وَإِسْحَاقَ بْنِ رَاهَوَيْهِ. وَقَالَ قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ: رُحِلَ إِلَيَّ مِنْ شَرْقِ الْأَرْضِ وَغَرْبِهَا، فَمَا رَحَلَ إِلَيَّ مِثْلُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْبُخَارِيِّ. وَقَالَ رَجَاءُ بْنُ مُرَجَّى: فَضْلُ الْبُخَارِيِّ عَلَى الْعُلَمَاءِ - يَعْنِي فِي زَمَانِهِ - كَفَضْلِ الرِّجَالِ عَلَى النِّسَاءِ. وَقَالَ: هُوَ آيَةٌ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ يَمْشِي عَلَى الْأَرْضِ. وَقَالَ أَبُو مُحَمَّدٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدِّرَامِيُّ: مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْبُخَارِيُّ أَفْقَهُنَا وَأَعْلَمُنَا وَأَغْوَصُنَا وَأَكْثَرُنَا طَلَبًا. وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ: هُوَ أَبْصَرُ مِنِّي. وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ الرَّازِيُّ: مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ أَعْلَمُ مَنْ دَخَلَ الْعِرَاقَ. وَقَالَ عُبَيْدٌ الْعِجْلِيُّ: رَأَيْتَ
পৃষ্ঠা - ৮৮২২
আমি আবূ হাতেম ও আবূ ঝুরআ কে দেখেছি তারা ইমাম বুখারীর কাছে বসেন এবং তিনি যা বলেন তা শুনেন। কিন্তু ইমাম মুসলিম এই স্তরে পৌছতে পারেনি। তিনি মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াইয়া আয-যুহলী থেকে অনেক অনেক বড় আলেম ছিলেন। তিনি দ্বীনদার মহৎ ব্যক্তি ছিলেন। সবকিছু ভালো ভাবে জানতেন।
কেউ বলেন : আমি দেখেছি, মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াইয়া আয-যুহলী ইমাম বুখারীর কাছে আসমায়ে রিজাল, তাদের কুনিয়াত ও হাদীসের ইলাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন। আর ইমাম বুখারী তিরের মত উত্তর দিয়ে যাচ্ছেন। কেমন যেন তিনি সুরা ইখলাছ তেলাওয়াত করছেন।
আহমাদ ইবনে হমাদুন আল-কছ্ছার বলেন : আমি ইমাম মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ কে দেখেছি যে, তিনি ইমাম বুখারীর কাছে এসে ইমাম বুখারীর কপালে চুমা দিছেন। অতঃপর বললেন : হে উস্তাদের উস্তাদ, হে মুহাদ্দিসদের সর্দার, হে ইলালে হাদীসের ডাক্তার ! আমাকে অনুমতি দিন, আপনার পায়ে চুমা দিই। তারপর তাকে মজলিসের কাফ্ফারার হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তখন তিনি ঐ হাদীসের সমাস্যাগুলো বললেন। তারপর যখন তার প্রয়োজন শেষ হল তখন ইমাম মুসলিম বলেন : হিংসুক ছাড়া আর কেউ আপনার সাথে শত্রুতা পোষন করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনার মত দুনিয়াতে কেহ নেই।
ইমাম তিরমিযি বলেন : ইলালে হাদীস, ইতিহাস এবং হাদীসের সনদের ক্ষেত্রে ইমাম বুখারীর থেকে জ্ঞানী কাউকে আমি ইরাকেও দেখিনি খেরাসানেও না। আমরা একদিন আব্দুল্লাহ ইবনে মুনিরের কাছে বসে ছিলাম। তখন তিনি ইমাম বুখারীর জন্য দুআ করেছিলেন যে, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে এই উম্মতের জন্য অলংকার বানাক। তার দুআ কবুল হয়েছে।
ইবনে খুজাইমা বলেন : আসমানের নিচে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস সম্পর্কে বেশি জানে এবং বেশি মুখস্ত মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীর থেকে বেশি কাউকে দেখিনি।

ইমাম বুখারী রহ. এর হিফযে হাদীস, মজবুত ইলম, ফিকহ, খোদভিতি, পরহেযগারিতা, ইলমী বিষয়ে গভীর বুৎপত্তি ইত্যাদি বিষয়ে ইমামগণ ইমাম বুখারী সম্পর্কে যে সমস্ত প্রশংসামূলক উক্তি করেছে তা যদি লিখতে শুরু করি তাহলে এখানে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে। আমরা এ কিতাবে বিভিন্ন যামানার ঘটানাবলি বর্ণনা করছি। এ জন্য এখানে সংক্ষেপে এটুকু বলা হল। তার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাগ্র‎েহ্নর শুরুতে করা হয়েছে।
أَبَا حَاتِمٍ وَأَبَا زُرْعَةَ يَجْلِسَانِ إِلَيْهِ يَسْتَمِعَانِ مَا يَقُولُ، وَلَمْ يَكُنْ مُسْلِمٌ يَبْلُغُهُ، وَكَانَ أَعْلَمَ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى الذُّهْلِيِّ بِكَذَا وَكَذَا، وَكَانَ دَيِّنًا فَاضِلًا يُحْسِنُ كُلَّ شَيْءٍ. وَقَالَ غَيْرُهُ: رَأَيْتُ مُحَمَّدَ بْنَ يَحْيَى الذُّهْلِيَّ يَسْأَلُ الْبُخَارِيَّ عَنِ الْأَسَامِي وَالْكُنَى وَالْعِلَلِ، وَهُوَ يَمُرُّ فِيهِ كَالسَّهْمِ، كَأَنَّهُ يَقْرَأُ: {قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ} [الإخلاص: 1] . وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَمْدُونَ الْقَصَّارُ: رَأَيْتُ مُسْلِمَ بْنَ الْحَجَّاجِ جَاءَ إِلَى الْبُخَارِيِّ فَقَبَّلَ بَيْنَ عَيْنَيْهِ، وَقَالَ: دَعْنِي حَتَّى أُقَبِّلَ رِجْلَيْكَ يَا أُسْتَاذَ الْأُسْتَاذِينَ، وَسَيِّدَ الْمُحَدِّثِينَ، وَطَبِيبَ الْحَدِيثِ فِي عِلَلِهِ. ثُمَّ سَأَلَهُ عَنْ حَدِيثِ كَفَّارَةِ الْمَجْلِسِ، فَذَكَرَ لَهُ عِلَّتَهُ، فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ مُسْلِمٌ: لَا يُبْغِضُكَ إِلَّا حَاسِدٌ، وَأَشْهَدُ أَنْ لَيْسَ فِي الدُّنْيَا مِثْلُكَ. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: لَمْ أَرَ بِالْعِرَاقِ وَلَا بِخُرَاسَانَ فِي مَعْنَى الْعِلَلِ وَالتَّارِيخِ وَمَعْرِفَةِ الْأَسَانِيدِ أَعْلَمَ مِنَ الْبُخَارِيِّ. وَكُنَّا يَوْمًا عِنْدَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُنِيرٍ، فَقَالَ لِلْبُخَارِيِّ: جَعَلَكَ اللَّهُ زَيْنَ هَذِهِ الْأُمَّةِ. قَالَ التِّرْمِذِيُّ: فَاسْتُجِيبَ لَهُ فِيهِ. وَقَالَ ابْنُ خُزَيْمَةَ: مَا رَأَيْتُ تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ أَعْلَمَ بِحَدِيثِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَحْفَظَ لَهُ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْبُخَارِيِّ. وَلَوْ ذَهَبْنَا نُسَطِّرُ مَا أَثْنَى عَلَيْهِ الْأَئِمَّةُ فِي حِفْظِهِ وَإِتْقَانِهِ وَعِلْمِهِ وَفِقْهِهِ وَوَرَعِهِ وَزُهْدِهِ وَتَبَحُّرِهِ لَطَالَ عَلَيْنَا، وَنَحْنُ عَلَى عَجَلٍ مِنْ أَجْلِ الْحَوَادِثِ، وَقَدْ ذَكَرْنَا ذَلِكَ مَبْسُوطًا فِي أَوَّلِ شَرْحِ " الصَّحِيحِ "، وَاللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى هُوَ الْمُسْتَعَانُ.
পৃষ্ঠা - ৮৮২৩
ইমাম বুখারী রহ. অনেক বেশি লজ্জাশীল, সাহসী, দানশীল, আল্লাহভীরু, ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া থেকে আত্মসংযমী ও চিরস্থায়ী আখেরাতের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

ইমাম বুখারী বলেন : আমি আশাকরি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালার সাথে আমার এমন অবস্থায় সাক্ষাত হবে যে, আমি কারোর গিবত করেনি। তখন তাকে বলা হল, আপনি হাদীসের রাবীদের জরাহ তা’দিলের ক্ষেত্রে রাবিদের বিভিন্ন দোষ বলেছেন? তিনি বললেন : রাবীদের জরাহের জন্য যে দোষ বলা হয় তা গীবতের অন্তর্ভুক্ত না। এরপর তার জওয়াবের স্বপক্ষে একটি হাদীস বর্ণনা করেন-
“রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক মুনাফিক দেখা করার অনুমতি চাইল। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন অনুমতি দাও। তবে লোকটি ভালো না।”
আর আমরা যা বলি তা শুধু মুহাদ্দিসদের থেকে নকল করি। নিজেদের পক্ষ থেকে কিছু বলি না।

ইমাম বুখারী রহ. প্রতিদিন রাতে তের রাকাত (তাহাজ্জুদ ও বিতির) নামায পড়তেন। এবং তিনি রমযানের প্রতি রাতে একবার কোরআন খতম করতেন। তার অনেক ধন-সম্পদ ছিল। তা তিনি প্রকাশ্যে গোপনে সবভাবে খরচ করতেন। তিনি দিনে রাতে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে অনেক ছদকা করতেন। তিনি মুসতাজাবুদ দুআ (অর্থাৎ এমন ব্যক্তি যার দুআ কবুল হয়) ছিলেন। তার দিকে তির চলত না। তিনি খুব ভদ্রলোক ছিলেন।

কোন সুলতান তার কাছে খবর পাঠালেন তিনি যেন শাহী মহলে আসেন। এবং সুলতানের সন্তানদের দরস দেন। তিনি উত্তরে পাঠালেন : ইলম তার ঘরেই দেয়া হয়। যদি আপনার চান তাহলে আমার এখানে আসেন। তিনি তাদের কাছে যেতে অস্বিকার করলেন। সে সুলতান হলেন বুখারায় নিযুক্ত খলীফার প্রতি খালেদ ইবনে আহমাদ যুহলী। ইমাম বুখারী তার কাছে যেতে অস্বীকার করার কারণে তার মনে খোভ পয়দা হল। ঘটনাক্রমে নায়সাবুর থেকে মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহ ইয়া যুহলীর পক্ষ থেকে তার কাছে একটা চিঠি আসল। যাতে লেখা ছিল ‘ইমাম বুখারী কুরআনের শব্দকে মাখলুক বলেন’। [ এ সময় মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহ ইয়া যুহলী ও ইমাম বুখারীর মাঝে এ বিষয়ে ইখতেলাফ চলছিল। এ বিষয়ে ইমাম বুখারী রহ. ‘খলকু আফআলিল ইবাদ’ নামে একটা কিতাবও লিখে ছিলেন।] তখন ইমাম যুহলী চাইলেন মানুষ কে ইমাম বুখারী থেকে হাদীস শুনা থেকে বিরত রাখবেন। আর তখন মানুষ ইমাম বুখারী কে অনেক বেশি সম্মান করতেন। এমনকি যখন ইমাম বুখারী বাহির থেকে তার পরিবার পরিজনের উদ্দেশ্যে বুখারায় ফিরে যেতেন তখন মানুষ তার মাথার উপর সোন চাঁদি ছড়িয়ে দিতেন।
وَقَدْ كَانَ الْبُخَارِيُّ، رَحِمَهُ اللَّهُ، فِي غَايَةِ الْحَيَاءِ وَالشَّجَاعَةِ وَالسَّخَاءِ وَالْوَرَعِ وَالزُّهْدِ فِي الدُّنْيَا دَارِ الْفَنَاءِ، وَالرَّغْبَةِ فِي الْآخِرَةِ دَارِ الْبَقَاءِ. قَالَ: أَرْجُو أَنْ أَلْقَى اللَّهَ وَلَيْسَ أَحَدٌ يُطَالِبُنِي أَنِّي اغْتَبْتُهُ. فَذُكِرَ لَهُ " التَّارِيخُ " وَمَا ذَكَرَ فِيهِ مِنَ الْجَرْحِ وَالتَّعْدِيلِ وَغَيْرِ ذَلِكَ، فَقَالَ: لَيْسَ هَذَا مِنْ هَذَا، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ائْذَنُوا لَهُ، فَلَبِئْسَ أَخُو الْعَشِيرَةِ» وَنَحْنُ إِنَّمَا رَوَيْنَا ذَلِكَ رِوَايَةً، وَلَمْ نَقُلْهُ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِنَا. وَقَدْ كَانَ - رَحِمَهُ اللَّهُ - يُصَلِّي فِي كُلِّ لَيْلَةٍ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، وَكَانَ يَخْتِمُ الْقُرْآنَ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ خَتْمَةً، وَكَانَتْ لَهُ جِدَةٌ وَمَالٌ جَيِّدٌ يُنْفِقُ مِنْهُ سِرًّا وَجَهْرًا، وَكَانَ يُكْثِرُ الصَّدَقَةَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَعَلَانِيَةً، وَكَانَ مُسْتَجَابَ الدَّعْوَةِ، مُسَدَّدَ الرَّمْيَةِ، شَرِيفَ النَّفْسِ ; بَعَثَ إِلَيْهِ بَعْضُ السَّلَاطِينِ لِيَأْتِيَهُ حَتَّى يَسْمَعَ أَوْلَادُهُ عَلَيْهِ، فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ: فِي بَيْتِهِ يُؤْتَى الْحَكَمُ، إِنْ كُنْتُمْ تُرِيدُونَ ذَلِكَ فَهَلُمُّوا إِلَيَّ، وَأَبَى أَنْ يَذْهَبَ إِلَيْهِمْ - وَهُوَ خَالِدُ بْنُ أَحْمَدَ الذُّهْلِيُّ، نَائِبُ الظَّاهِرِيَّةِ بِبُخَارَى - فَبَقِيَ فِي نَفْسِ الْأَمِيرِ مِنْ ذَلِكَ ; فَاتَّفَقَ أَنْ جَاءَهُ كِتَابٌ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى الذُّهْلِيِّ مِنْ نَيْسَابُورَ بِأَنَّ الْبُخَارِيَّ يَقُولُ بِأَنَّ لَفْظَهُ بِالْقُرْآنِ مَخْلُوقٌ - وَكَانَ وَقَدْ وَقَعَ بَيْنَ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى الذُّهْلِيِّ وَبَيْنَ الْبُخَارِيِّ فِي ذَلِكَ كَلَامٌ، وَصَنَّفَ الْبُخَارِيُّ فِي ذَلِكَ كِتَابَ " خَلْقِ أَفْعَالِ الْعِبَادِ " - فَأَرَادَ أَنْ يَصْرِفَ النَّاسَ عَنِ السَّمَاعِ مِنَ الْبُخَارِيِّ، وَقَدْ كَانَ النَّاسُ يُعَظِّمُونَهُ جِدًّا، وَحِينَ رَجَعَ إِلَيْهِمْ نَثَرُوا عَلَى رَأْسِهِ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ يَوْمَ دَخَلَ بُخَارَى عَائِدًا إِلَى أَهْلِهِ، وَكَانَ
পৃষ্ঠা - ৮৮২৪
ইমাম বুখারীর জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা ছিল যেখানে বসে তিনি হাদীসের দরস দিতেন আর ছাত্ররা তার থেকে হাদীস লিখে নিতেন। সুলতান লোকদের কে তার থেকে হাদীস শিখতে নিষেধ কারার পরেও লোকেরা সুলতানের কথা না মানেনি। তখন সুলতান ইমাম বুখারীকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার দির্দেশ দেন। তখন ইমাম বুখারী সেখান থেকে চলে গেলেন। আর খালেদ ইবনে আহমাদের জন্য বদদুআ করেছিলেন। ফলে এক মাস না যেতেই ইবনে তাহের নির্দেশ দিল খালেদ ইবনে আহমাদ কে গাধার উপরে উঠায়ে শহরে ঘুরাতে। এ বদদুআ ফলে তার রাজত্ব চলে গেল। তাকে বাগদাদের জেলখানায় বন্ধি করে রাখা হল। অবশেষে জেলখানাতেই তিনি মুত্যুবরণ করেন। আর খালেদ ইবনে আহমাদের সহযোগী যারা ছিল সবাই বিভিন্ন ধরনের কঠিন কঠিন মুসিবতে পড়েছিলেন।

ইমাম বুখারী তার শহর থেকে বের হয়ে খরতানকু নামক শহরে গেলেন। যে শহর সমকান্দ থেকে দুই ফারসাখ (প্রায় দশ কিলোমিটার) দুরে অবস্থিত। সেখানে তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে গেলেন। ফেতনা যখন বাড়তে লাগল তখন তিনি দুআ করতে লাগলেন, হে আল্লাহ আমাকে তোমার কাছে নিয়ে নিও। কারণ হাদীসে দুআ আছে ‘হে আল্লাহ যখন তুমি জাতিকে ফেতনাতে ফেলার ইচ্ছা কর তখন ফেতনায় পতিত হওয়ার আগে আমাকে মৃত্যু দিয়ে তোমার নিয়ে নিও।’ এরপর তিনি রোগে আক্রান্ত হলেন। তিনি ঈদুর ফিতরের রাতে ইশার নামাযের সময় ইন্তেকাল করেন। সেটি ছিল শনিবারের রাত। আর এ বছর অর্থাৎ ২৫৬ সালে ঈদুর ফিতরের দিন জোহরের পরে তার জানাযা পড়া হয়। তার অসিয়ত মোতাবেক তাকে তিনটি সাদা কাপড়ে দাফন করা হয়। যাতে জামা পাগড়ি ছিল না। তাকে দাফনের পর তার কবর থেকে খুব সুঘ্রাণ বের হচ্ছিল। যা মেশকের চেয়েও বেশি সুঘ্রাণ। এ ঘ্রাণ বেশ কয়েক দিন ছিল। তারপর তার কবর বরাবর সাদা নুরের লম্বা খুটি প্রকাশ পেয়েছিল। ইমাম বুখারী রহ. ৬২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

ইমাম বুখারী রহ. সমস্ত মুসলমানে জন্য অনেক ইলমে নাফে রেখে গেছেন। এ কারণে তার মুত্যুর পরে তার আমলনামা বন্ধ হয়নি। বরং তার আমলনামায় সর্বদা নেক আমল যুক্ত হচ্ছে। এ কথা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস থেকে প্রমানিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘বনী আদম মারা যায় তখন তার আমালনামা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিন জিনিসের সওয়াব সে পেতে থাকে। তার মধ্যে একটা হল ইলমে নাফে।’ -মুসলিম শরীফ।
لَهُ مَجْلِسُ الْإِمْلَاءِ بِجَامِعِهَا، فَلَمْ يَقْبَلُوا مِنَ الْأَمِيرِ، فَأَمَرَ عِنْدَ ذَلِكَ بِنَفْيِهِ مِنَ الْبِلَادِ، فَخَرَجَ مِنْهَا وَدَعَا عَلَى خَالِدِ بْنِ أَحْمَدَ، فِلَمْ يَمْضِ شَهْرٌ حَتَّى أَمَرَ ابْنُ طَاهِرٍ بِأَنْ يُنَادَى عَلَى خَالِدِ بْنِ أَحْمَدَ عَلَى أَتَانٍ، وَزَالَ مُلْكُهُ وَسُجِنَ فِي بَغْدَادَ حَتَّى مَاتَ، وَلَمْ يَبْقَ أَحَدٌ سَاعِدَهُ عَلَى ذَلِكَ إِلَّا ابْتُلِيَ بِبَلَاءٍ شَدِيدٍ. فَنَزَحَ الْبُخَارِيُّ مِنْ بَلَدِهِ إِلَى بَلْدَةٍ يُقَالُ لَهَا: خَرْتَنْكُ. عَلَى فَرْسَخَيْنِ مِنْ سَمَرْقَنْدَ فَنَزَلَ عِنْدَ أَقَارِبَ لَهُ بِهَا، وَجَعَلَ يَدْعُو اللَّهَ أَنْ يَقْبِضَهُ إِلَيْهِ حِينَ رَأَى الْفِتَنَ ; كَمَا جَاءَ فِي الْحَدِيثِ: «وَإِذَا أَرَدْتَ بِقَوْمٍ فِتْنَةً فَتَوَفَّنَا إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونِينَ» . ثُمَّ اتَّفَقَ مَرَضُهُ عَلَى إِثْرِ ذَلِكَ، فَكَانَتْ وَفَاتُهُ لَيْلَةَ عِيدِ الْفِطْرِ، وَكَانَتْ لَيْلَةَ السَّبْتِ، عِنْدَ صَلَاةِ الْعِشَاءِ وَصُلِّيَ عَلَيْهِ يَوْمَ الْعِيدِ بَعْدَ الظُّهْرِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ - أَعْنِي سَنَةَ سِتٍّ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ - وَكُفِّنَ فِي ثَلَاثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلَا عِمَامَةٌ، وَفْقَ مَا أَوْصَى بِهِ، وَحِينَ دُفِنَ فَاحَتْ مِنْ قَبْرِهِ رَائِحَةُ غَالِيَةٍ أَطْيَبُ مِنَ الْمِسْكِ، فَدَامَ ذَلِكَ أَيَّامًا، ثُمَّ عَلَتْ سَوَارٍ بَيْضٌ مُسْتَطِيلَةٌ بِحِذَاءِ قَبْرِهِ. وَكَانَ عُمْرُهُ يَوْمَ مَاتَ - رَحِمَهُ اللَّهُ - ثِنْتَيْنِ وَسِتِّينَ سَنَةً. وَقَدْ تَرَكَ - رَحِمَهُ اللَّهُ - بَعْدَهُ عِلْمًا نَافِعًا لِجَمِيعِ الْمُسْلِمِينَ، فَعَمَلُهُ فِيهِ لَمْ يَنْقَطِعْ بَلْ هُوَ مَوْصُولٌ بِمَا أَسْدَاهُ مِنَ الصَّالِحَاتِ فِي الْحَيَاةِ ; وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا مَاتَ ابْنُ آدَمَ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ، مِنْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ» الْحَدِيثَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ.
পৃষ্ঠা - ৮৮২৫
ইমাম বুখারী রহ. এর হাদীসের কিতাব সহীহ বুখারীতে হাদীস গ্রহনের শর্ত অনান্য সহীহ হাদীসের কিতাবের থেকে বেশি উচ্চতর। এমনকি সহীহ মুসলিম ও অনান্য সহীহ হাদীসের কিতাবও তার বরবর নয়।
একজন বিশুদ্ধভাষী কবি কবিতার মাধ্যমে অনেক সুন্দর বলেছেন। কবিতাগুলো অর্থ-
যদি মানুষ সহীহ বুখারীর সাথে ইনসাফ করত  ۞  তাহলে স্বর্ণের পানি দিয়ে ছাড়া তা লিখত না।
এ কিতাব অন্ধ ও চক্ষু বিশিষ্ঠে মাঝে পার্থক্যকারী  ۞  এ কিতাব শক্তিশালী ও দুর্বলের মাঝে প্রতিবন্ধক।
এর সনদসমূহ আসমানের নক্ষত্রের মত ۞ উজ্জল তারকার মতই এ কিতাব সমস্ত হদীসের মতনের কিতাবরে ইমামের স্তরে।
এ কিতাবের মাধ্যমে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দ্বীনের দাড়িপাল্লা কায়েম হয়েছে ۞ এ কিতাবের মাধ্যমে আরবদের পরে অনারবরাও দ্বীন পেয়েছে।
নিঃসন্দেহে এ কিতাব মানুষ কে জাহান্নাম থেকে বাচাবে ۞  এ কিতাব আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বিষয়ের মাঝে পার্থক্য করে দেয়।
এ কিতাব রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌছানোর মাঝে পাতলা পর্দা ۞ সন্দেহ দূর করার জন্য স্পষ্ট দলিল।
হে আলেমে দ্বীন ! সমস্ত আলেমগণ একমত হয়েছে ۞ এ কিতাবের মর্যাদার স্তর সমস্ত কিতাবের উপরে।
হে এ কিতাবের সংকলক ! আপনি হাদীস একত্রিত করার ক্ষেত্রে সমস্ত ইমামদের থেকে অগ্রগামী হয়েছেন  ۞  ইমামদের স্বীকারউক্তি মতে আপনি সফলতার চুড়ায় পৌছেছেন।
আপনি দুর্বল বর্ণনাকারীদের কে পৃথক করেছেন ۞ এবং যাদের ক্ষেত্রে মিথ্যার অভিযোগ আছে তাদেরকেও পৃথক করেছেন।
এ কিতাবকে অনেক সুন্দরভাবে বিন্যাস্ত করতে আপনি সফল হয়েছেন ۞ এবং অনেক সুন্দর সুন্দর শিরোনাম নির্ধারণ করেছেন যা খুব আশ্চর্যের।
দুআ করি রব্বুল আলামীন আপনার সমস্ত চাহিদা পূরণ করেন ۞ তিনি আপনাকে যে প্রতিদান দিবে তা যেন পরিপূর্ণ দেন।
وَشَرْطُهُ فِي " صَحِيحِهِ " هَذَا أَعَزُّ مِنْ شَرْطِ كُلِّ كِتَابٍ صُنِّفَ فِي " الصَّحِيحِ "، لَا يُوَازِيهِ فِيهِ غَيْرُهُ، لَا " صَحِيحُ مُسْلِمٍ " وَلَا غَيْرُهُ. وَمَا أَحْسَنَ مَا قَالَ بَعْضُ الْفُصَحَاءِ مِنَ الشُّعَرَاءِ: صَحِيحُ الْبُخَارِيِّ لَوْ أَنْصَفُوهُ ... لَمَا خُطَّ إِلَّا بِمَاءِ الذَّهَبْ هُوَ الْفَرْقُ بَيْنَ الْهُدَى وَالْعَمَى ... هُوَ السَّدُ بَيْنَ الْفَتَى وَالْعَطَبْ أَسَانِيدُ مِثْلُ نُجُومِ السَّمَاءِ ... أَمَامَ مُتُونٍ كَمِثْلِ الشُّهُبْ بِهَا قَامَ مِيزَانُ دِينِ الرَّسُولِ ... وَدَانَ بِهِ الْعُجْمُ بَعْدَ الْعَرَبْ حِجَابٌ مِنَ النَّارِ لَا شَكَّ فِيهِ ... تَمَيَّزَ بَيْنَ الرِّضَا وَالْغَضَبْ وَسِتْرٌ رَقِيقٌ إِلَى الْمُصْطَفَى ... وَنَصٌّ مُبِينٌ لِكَشْفِ الرِّيَبْ فَيَا عَالِمًا أَجْمَعَ الْعَالِمُونَ ... عَلَى فَضْلِ رُتْبَتِهِ فِي الرُّتَبْ سَبَقْتَ الْأَئِمَّةَ فِي مَا جَمَعْتَ ... وَفُزْتَ عَلَى زَعْمِهِمْ بِالْقَصَبْ نَفَيْتَ الضَّعِيفَ مِنَ النَّاقِلِينَ ... وَمَنْ كَانَ مُتَّهَمًا بِالْكَذِبْ وَأَبْرَزْتَ فِي حُسْنِ تَرْتِيبِهِ ... وَتَبْوِيبِهِ عَجَبًا لِلْعَجَبْ فَأَعْطَاكَ مَوْلَاكَ مَا تَشْتَهِيهِ ... وَأَجْزَلَ حَظَّكَ فِيمَا وَهَبْ