আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

سنة خمس وخمسين ومائتين

পৃষ্ঠা - ৮৭৯৫
[ হিজরি ২৫৪ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এরপর ২৫৪ হিজরী শুরু হল।

এই বছর মুফলিহ ও হাসান ইবনে যায়েদ আত-তালীর মাঝে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মুফলিহ জয় লাভ করেন। তারপর আমুল ও তবারিসতানে প্রবেশ করেন। হাসান ইবনে যায়েদের ঘব-বাড়ি জালিয়ে দেন। এরপর তিনি দায়লামে প্রবেশ করেন।।

এ বছর ইয়াকুব ইবনে লায়েছ ও আলী ইবনে হুসাইন ইবনে কুরাইশ ইবনে শিবলির মধ্যে ভিষণ যুদ্ধ হয়। আলী ইবনে হুসাইন তার পক্ষ থেকে তওক ইবনে মুগাল্লিস কে পাঠান। তিনি ইয়াকুব ইবনে লায়েছের সাথে দীর্ঘ এক মাস মোকাবেলা করেন। অবশেষে ইয়াকুব ইবনে লায়েছ তওকের উপর বিজয় লাভ করেন। তাকে এবং তার অধিকংশ সাথীদের কে বন্ধি করেন। এরপর আলী ইবনে হুসাইনের দিকে রওয়ানা হন। সেখানে পৌছে তাকেও বন্ধি করেন। তার শহর দখল করে নেন। যে শহরের নাম ছিল কারমান। এছাড়াও তার অধিনে থাকা অন্যান্য শহরও নিজ আয়ত্বে নিয়ে নেন। অতঃপর ইয়াকুব ইবনে লায়েছ অনেক মূল্যবান উপঢৌকন খলীফা মু’তাযযের কাছে পাঠান। যেমন ঘোড়, শিকারে জন্য বাজপাখি, মূল্যবান কাপড় ইত্যাদি।

এ বছর রবিউল আওয়াল মাসে সুলাইমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের কে বাগদাদের প্রতিনিধি বানান।

এ বছর সালেহ ইবনে ওসিফ, মু’তাযযের কাতেব (লেখক) আহমাদ ইবনে ইসরাইল কে এবং মু’তাযযের মা ফারিহার কাতেব (লেখক) হাসান ইবনে মাখলাদ আর আবু নুহ ঈসা ইবনে ইবরাহীম কে গ্রেফতার করেন। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাইতুলমালের সম্পদ ভক্ষন করতেন। এ সকল ব্যক্তিগণ বাইতুলমালের হিসাব রক্ষক ও অন্যান্য পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
[سَنَةُ خَمْسٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ خَمْسٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِيهَا كَانَتْ وَقْعَةٌ بَيْنَ مُفْلِحٍ وَبَيْنَ الْحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ الطَّالِبِيِّ فَهَزَمَهُ مُفْلِحٌ وَدَخَلَ آمُلَ طَبَرِسْتَانَ وَحَرَقَ مَنَازِلَ الْحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ، ثُمَّ سَارَ وَرَاءَهُ إِلَى الدَّيْلَمِ. وَفِيهَا كَانَتْ مُحَارَبَةٌ شَدِيدَةٌ بَيْنَ يَعْقُوبَ بْنِ اللَّيْثِ وَبَيْنَ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ قُرَيْشِ بْنِ شِبْلٍ فَبَعَثَ عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ رَجُلًا مِنْ جِهَتِهِ يُقَالُ لَهُ: طَوْقُ بْنُ الْمُغَلِّسِ فَصَابَرَهُ أَكْثَرَ مِنْ شَهْرٍ، ثُمَّ ظَفِرَ يَعْقُوبُ بِطَوْقٍ فَأَسَرَهُ وَأَسَرَ وُجُوهَ أَصْحَابِهِ، ثُمَّ سَارَ إِلَى عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ هَذَا فَأَسَرَهُ أَيْضًا، وَأَخَذَ بِلَادَهُ - وَهِيَ كَرْمَانُ - فَأَضَافَهَا إِلَى مَا بِيَدِهِ مِنْ مَمْلَكَةِ سِجِسْتَانَ ثُمَّ بَعَثَ يَعْقُوبُ بْنُ اللَّيْثِ بِهَدِيَّةٍ سَنِيَّةٍ إِلَى الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ ; دَوَابًّ وَبُزَاةٍ وَثِيَابٍ فَاخِرَةٍ. وَفِيهَا وَلَّى الْخَلِيفَةُ سُلَيْمَانَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نِيَابَةَ بَغْدَادَ وَالسَّوَادِ فِي رَبِيعٍ الْأَوَّلِ مِنْهَا. وَفِيهَا أَخَذَ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ أَحْمَدَ بْنَ إِسْرَائِيلَ كَاتِبَ الْمُعْتَزِّ وَالْحَسَنَ بْنَ مَخْلَدٍ كَاتِبَ قَبِيحَةَ أَمِّ الْمُعْتَزِّ، وَأَبَا نُوحٍ عِيسَى بْنَ إِبْرَاهِيمَ، وَكَانُوا قَدْ تَمَالَئُوا عَلَى أَكْلِ أَمْوَالِ بَيْتِ الْمَالِ، وَكَانُوا دَوَّاوِينَ وَغَيْرَهُمْ فَضَرَبَهُمْ وَأَخَذَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৬
তিনি তাদেরকে মারধর করলেন। তারা যে বাইতুল মাল থেকে অনেক মাল নিয়েছেন এ বিষয়ে তাদের থেকে দস্তরখত নিয়ে নিলেন। তিনি এসস্ত কাজ খলীফা মু’তাযযের জানানো ছাড়াই গোপনে করেছেন। তাদের স্থবর অস্থবর সমস্ত মাল-সম্পদ নিয়ে নিলেন। তাদেরকে খিয়ানতকারী নাম রাখলেন। তাদের থেকে দায়িত্ব জোর ছিনিয়ে নিয়ে অন্যদের দিয়ে দিলেন।

এ বছর রজব মাসে ঈসা ইবনে জা’ফারের এবং আলী ইবনে যায়েদ কুফাতে আত্মপ্রকাশ করেন। বংশীয় দিক থেকে উভয়ে হাসান রা. এর বংশধর ছিলেন। এবং উভয়ে মিলে ঐখানে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে দাউদ ইবনে ঈসা কে হত্যা করেন। সেখানে তাদের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।

খলীফা মু’তাযযের মৃত্যু :
এ বছর ২৭ শে রজব খলীফা মু’তায্য বিল্লাহ খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। শাবানের ২ তারিখে তার মৃত্যুর ঘেষণা দেওয়া হয়। পদত্যাদের কারণ হল, সমস্ত সৈন্য বাহিনী একসাথে তাদের বকেয়া মাসিত ভাতা চাইল। তখন তার কাছে দেওয়ার মত কিছুই ছিল না। তাই সে তার মার কাছে কিছু করজ চাইল। যাতে সৈন্য বাহিনীদের কে কিছু দিতে পারে। কিন্তু তার মা করজ দিল না। এমন ভাব প্রকাশ করল যে, তার কাছে দেওয়ার মত কিছু নেই। তখন সমস্ত তুর্কীগণ তার খেলাফত থেকে অব্যহতির ব্যপারে একমত হয়ে গেল। তারা তার কাছে খবর পাঠাল যেন তিনি তাদের সামনে আসেন। কিন্তু তিনি ওজর পেশ করলেন যে, তিনি ঔষধ সেবন করেছেন। শরির অনেক দুর্বল সে বের হতে পারবেন না। তিনি বলে পাঠালেন যে, তোমাদের কয়েকজন আমার কাছে আসুক। তখন কয়েকজন আমীর তার কাছে গেলেন। তারা লোহার পিন নিয়ে ঢুকল। তাকে অনেক মারল। তার পা ধরে টেনে বাহিরে নিয়ে আসল। যখন বাহিরে নিয়ে আসল তখন তার গায়ে ছেড়া জামা ছিল। যা রক্তে রঞ্জিত ছিল। কঠিন গরমে দারুল খেলাফাতের মাঝে তাকে দাড় করিয়ে রাখল। কঠিন গরমের কারণে পা পরিবর্তন করে করে এক পায়ে দাড়াচ্ছিল। আর কেউ কেউ তাকে চড় মারতে লাগল। আর সে কাঁদছিল। যারা তাকে মারছিল তারা মারতে মারতে বলছিল খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাদ কর পদত্যাগ কর। অন্যরা তাকে ঘিরে দাড়িয়ে ছিল।
خُطُوطَهُمْ بِأَمْوَالٍ جَزِيلَةٍ يَحْمِلُونَهَا، وَذَلِكَ بِغَيْرِ رِضًا مِنَ الْمُعْتَزِّ فِي الْبَاطِنِ، وَاحْتِيطَ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَحَوَاصِلِهِمْ وَضِيَاعِهِمْ، وَسُمُّوا الْكُتَّابَ الْخَوَنَةَ وَوَلَّى الْخَلِيفَةُ عَنْ قَهْرٍ غَيْرَهُمْ. وَفِي رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ عِيسَى بْنُ جَعْفَرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ الْحَسَنِيَّانِ بِالْكُوفَةِ، وَقَتَلَا بِهَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ دَاوُدَ بْنِ عِيسَى وَاسْتَفْحَلَ أَمْرُهُمَا بِهَا. مَقْتَلُ الْخَلِيفَةِ الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ وَلِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ خُلِعَ الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ بِاللَّهِ وَلِلَيْلَتَيْنِ مَضَتَا مِنْ شَعْبَانَ أُظْهِرَ مَوْتُهُ. وَكَانَ سَبَبَ خَلْعِهِ أَنَّ الْجُنْدَ اجْتَمَعُوا فَطَلَبُوا مِنْهُ أَرْزَاقَهُمْ، فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ مَا يُعْطِيهِمْ فَسَأَلَ مِنْ أُمِّهِ أَنْ تُقْرِضَهُ مَالًا يَدْفَعُهُمْ عَنْهُ بِهِ فَلَمْ تُعْطِهِ وَأَظْهَرَتْ أَنَّهُ لَا شَيْءَ عِنْدَهَا فَاجْتَمَعَ الْأَتْرَاكُ عَلَى خَلْعِهِ فَأَرْسَلُوا إِلَيْهِ ; لِيَخْرُجَ إِلَيْهِمْ فَاعْتَذَرَ بِأَنَّهُ قَدْ شَرِبَ دَوَاءً وَأَنَّ عِنْدَهُ ضَعْفًا، وَلَكِنْ لِيَدْخُلْ إِلَيَّ بَعْضُكُمْ. فَدَخَلَ إِلَيْهِ بَعْضُ الْأُمَرَاءِ فَتَنَاوَلُوهُ بِالدَّبَابِيسِ يَضْرِبُونَهُ وَجَرُّوا بِرِجْلِهِ وَأَخْرَجُوهُ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ مُخَرَّقٌ مُلَطَّخٌ بِالدَّمِ فَأَقَامُوهُ فِي وَسَطِ دَارِ الْخِلَافَةِ فِي حَرٍّ شَدِيدٍ حَتَّى جَعَلَ يُرَاوِحُ بَيْنَ قَدَمَيْهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ، وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَلْطِمُهُ وَهُوَ يَبْكِي، وَيَقُولُ لَهُ الضَّارِبُ: اخْلَعْهَا وَالنَّاسُ مُجْتَمِعُونَ. ثُمَّ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৭
তারপর তাকে এক সংকির্ণ ঘরে ঢুকালো। সেখানে তাকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে সে নিজেই খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাদ করেন। তার পরে মুহতাদী বিল্লাহ খেলাফাতের দায়িত্ব গ্রহন করেন। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আলোচনা আসছে। তারপর তাকে এমন কিছু ব্যক্তিদের কাছে অর্পন করা হল যারা তাকে বিভিন্ন ধরনের কঠিন শাস্তি দিতে লাগল। তিন দিন পর্যন্ত তাকে কোন খাদ্য পানি খেতে দেয়নি। এমন কি তিনি কুপ থেকে এক ঢোক পানি চাইতে লাগলেন। কিন্তু তাকে এক ঢোক পানিও পান করানো হল না। তারপর তাকে চুন ভর্তি এক গর্তে ফেলে দিল। ওখানেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। তারা তাকে চুনা থেকে ভালো শরিরে বের করা হল। আমীর-ওমারদের এক দল কে সাক্ষী রাখলেন যে তিনি সাভাবিক ভাকে মারা গেছেন। তার উপর কঠোরতার কোন চি‎হ্ন রাখলেন না। এটা এ বছর ২ রা শাবান শনিবারের দিনের ঘটনা। মুহতাদী বিল্লাহ তার জানাযা পড়ালেন। কসরুস ছওয়ামে’ এর পাশে তার ভাই মুনতাসের পাশে দাফন করা হয়। তার বয়স ২৪ বছর হয়েছিল। তিনি চার বছর ছয় মাস তেইশ দিন খেলাফাতের দায়িত্ব পালন কারেন।

খলীফা মু’তায্য লম্বা সাস্থ্যবান ছিলেন। নাক লম্বা ছিল। চেহারা গেলাকার হাস্যউজ্জল ছিল। শরিরের রং সাদা ছিল। চুল খুব কালো ছিল। তার দাড়ি খুব ঘন ছিল। চোখ ও চেহারা খুব সুন্দুর ছিল। কপাল ছোট ছিল  চেহারার লাল বর্ণের ছিল। আল্লাহ তায়ালা তার উপর রহম করুক।

একবার তার পিতার জীবতদশায় পিতার সাথে হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বালের কছে যান। তখন ইমাম আহমাদ তার ভালো মেধা সুন্দর বুঝশক্তি আদব-আখলাকের প্রসাংশা করেন।

খতীব বাগদাদী আলী ইবনে হারব থেকে বর্ণনা করেন, আলী ইবনে হারব বলেন : আমি খলীফা মু’তাযযের কাছে গেলাম তার থেকে সুন্দর চেহারার কোন খলীফা আমি দেখিনি। আমি যখন তাকে দেখলাম তখন তাকে সেজদা করলাম। তিনি বলেন : আপনি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করছেন? আমি বললাম :
أَدْخَلُوهُ حُجْرَةً مُضَيَّقًا عَلَيْهِ فِيهَا. وَمَا زَالُوا عَلَيْهِ بِأَنْوَاعِ الْعَذَابِ حَتَّى خَلَعَ نَفْسَهُ مِنَ الْخِلَافَةِ وَوَلِيَ بَعْدَهُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ، كَمَا سَيَأْتِي، ثُمَّ سَلَّمُوهُ إِلَى مَنْ يَسُومُهُ سُوءَ الْعَذَابِ بِأَنْوَاعِ الْمَثُلَاتِ وَمُنِعَ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ حَتَّى جَعَلَ يَطْلَبُ شَرْبَةً مِنْ مَاءِ الْبِئْرِ فَلَمْ يُسْقَ ثُمَّ أَدْخَلُوهُ سِرْبًا فِيهِ جَصُّ جِيرٍ فَدَسُّوهُ فِيهِ فَأَصْبَحَ مَيِّتًا فَاسْتَلُّوهُ مِنَ الْجَصِّ سَلِيمَ الْجَسَدِ فَأَشْهَدُوا عَلَيْهِ جَمَاعَةً مِنَ الْأَعْيَانِ أَنَّهُ مَاتَ وَلَيْسَ بِهِ أَثَرٌ، وَكَانَ ذَلِكَ فِي الْيَوْمِ الثَّانِي مِنْ شَعْبَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ وَكَانَ يَوْمَ السَّبْتِ وَصَلَّى عَلَيْهِ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَدُفِنَ مَعَ أَخِيهِ الْمُنْتَصِرِ إِلَى جَانِبِ قَصْرِ الصَّوَامِعِ، عَنْ أَرْبَعٍ وَعِشْرِينَ سَنَةً. وَكَانَتْ خِلَافَتُهُ أَرْبَعَ سِنِينَ وَسِتَّةَ أَشْهُرٍ وَثَلَاثَةً وَعِشْرِينَ يَوْمًا وَكَانَ طَوِيلًا جَسِيمًا وَسِيمًا أَقْنَى الْأَنْفِ مُدَوَّرَ الْوَجْهِ حَسَنَ الضَّحِكِ أَبْيَضَ، أَسْوَدَ الشَّعْرِ جَعْدَهُ كَثِيفَهُ كَثِيفَ اللِّحْيَةِ حَسَنَ الْعَيْنَيْنِ وَالْوَجْهِ ضَيِّقَ الْجَبِينِ أَحْمَرَ الْوَجْنَتَيْنِ رَحِمَهُ اللَّهُ. وَقَدْ أَثْنَى الْإِمَامُ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ عَلَى جَوْدَةِ ذِهْنِهِ وَحُسْنِ فَهْمِهِ وَأَدَبِهِ حِينَ دَخَلَ عَلَيْهِ فِي حَيَاةِ أَبِيهِ الْمُتَوَكِّلِ بِسَامَرَّا، كَمَا قَدَّمْنَا فِي تَرْجَمَةِ الْإِمَامِ أَحْمَدَ. وَرَوَى الْخَطِيبُ الْبَغْدَادِيُّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حَرْبٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ فَمَا رَأَيْتُ خَلِيفَةً أَحْسَنَ وَجْهًا مِنْهُ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُ سَجَدْتُ فَقَالَ: يَا شَيْخُ تَسْجُدُ لِأَحَدٍ مِنْ دُونِ اللَّهِ؟ فَقُلْتُ: حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ النَّبِيلُ،
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৮
আবূ আসেম জহ্হক ইবনে মাখলাদ আন-নাবীল বর্ণনা করেছেন, তিনি বাক্কার ইবনে আব্দুল আযিয ইবনে বাকরাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি তার পিতা থেকে, তার পিতা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আনন্দের কোন কিছু দেখতেন বা তাকে খুশির কোন সংবাদ দেয়া হত তখন তিনি শুকরিয়া স্বরূপ আল্লাহ তায়ালার সেজদা করতেন।

যাবাইর ইবনে বাক্কার বলেন : আমি মু’তাযযের কাছে গেলাম। তখন তিনি খলীফা ছিলেন। তিনি যখন আমার আসার খবর শুনলেন তখন তাড়াতাড়ি আমার দিকে আসলেন। হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন। এর পর কিছু কবিতা আবৃতি করলেন যার অর্থ :
জবানের হোঁচটেই মানুষের প্রকৃত মৃত্যু হয়  ۞  পায়ের হোঁচটে প্রকৃত মৃত হয় না।
মুখের কারণে যে হোঁচট খায় তাতে মাথাকে নিক্ষেপ করে দেয়। অর্থাৎ অপমানিত হতে হয়  ۞  আর পায়ে যে হোঁচট খায় তা কয়েকদিন পরে ঠিক হয়ে যায়।

ইবনে আসাকির বর্ণনা করেন মু’তাযযের পিতার জিবতদশায়ের কথা। যখন তিনি কুরআন খতম করেন তখন তার পিতা আমীর-উমারা ও বড় বড় সম্মানী ব্যক্তিবর্গদের কে নিয়ে সুররা মান রাআ (সামাররা) নামক এলাকায় বড় এক অনুষ্ঠান করনে। কয়েকদিন ধরে মানুষ আসা যাওয়া করতে থাকে। অনেক বড় আকারে অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে থাকে। এ সময় ছোট মু’তায্য মেম্বারে বসে তার পিতাকে সালাম দিলেন। মানুষের সামনে বয়ান করলেন। তখন দারুল খেলাফাতে হিরা জাওহার স্বর্ণ চাদি ধনী গরীব সকলের মাঝে বিলিয়ে দেন। যে হিরা জাওহার বিলিয়ে দিয়েছিল তার মূল্য এক লক্ষ্য দিনার। এবং সে পরিমান স্বর্ণ ও আরো দশ লক্ষ্য দিরহামও মানুষকে দিয়েছিল। তাছাড়াও আরো অনেক মূল্যবাদ পেশাক মানুষের মাঝে দেন। এ দিনটি মানুষের কাছে স্বরণীয় ছিল। কারণ এমন খুশির দিন দারুল খেলাফাতে আগে আসে নাই। এবং মু’তাযযের মা কবিহাকে অনেক মূল্যবান পোশাক পরিয়েছিলেন। অনুরূপভাবে তার উস্তাদ মুহাম্মাদ ইবনে ইমরান কেও মূল্যবান পেশাক জাওহার স্বর্ণ অন্যান্য আরো অনেক কিছু দিয়েছিলেন।
ثَنَا بَكَّارُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَأَى مَا يَفْرَحُ بِهِ، أَوْ بُشِّرَ بِمَا يَسُرُّهُ، سَجَدَ شُكْرًا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ» . وَقَالَ الزُّبَيْرُ بْنُ بَكَّارٍ: صِرْتُ إِلَى الْمُعْتَزِّ وَهُوَ أَمِيرٌ، فَلَمَّا سَمِعَ بِقُدُومِي خَرَجَ مُسْتَعْجِلًا إِلَيَّ فَعَثَرَ، فَأَنْشَأَ يَقُولُ: يَمُوتُ الْفَتَى مِنْ عَثْرَةٍ بِلِسَانِهِ ... وَلَيْسَ يَمُوتُ الْمَرْءُ مِنْ عَثْرَةِ الرِّجْلِ فَعَثْرَتُهُ مِنْ فِيهِ تَرْمِي بِرَأْسِهِ ... وَعَثْرَتُهُ فِي الرِّجْلِ تَبْرَأُ عَلَى مَهْلِ وَذَكَرَ الْحَافِظُ ابْنُ عَسَاكِرَ: أَنَّ الْمُعْتَزَّ لَمَّا حَذَقَ الْقُرْآنَ فِي حَيَاةِ أَبِيهِ الْمُتَوَكِّلِ اهْتَمَّ أَبُوهُ لِذَلِكَ وَاجْتَمَعَتِ الْأُمَرَاءُ الْكُبَرَاءُ وَالرُّؤَسَاءُ بِسُرَّ مَنْ رَأَى، وَاخْتَلَفُوا لِذَلِكَ أَيَّامًا عَدِيدَةً وَجَرَتْ أَحْوَالٌ عَظِيمَةٌ. وَلَمَّا جَلَسَ وَهُوَ صَبِيٌّ عَلَى الْمِنْبَرِ وَسَلَّمَ عَلَى أَبِيهِ بِالْخِلَافَةِ، وَخَطَبَ النَّاسَ نُثِرَتِ الْجَوَاهِرُ فِي الصَّوَانِيِ، وَالذَّهَبُ وَالْفِضَّةُ عَلَى الْخَوَاصِّ وَالْعَوَامِّ بِدَارِ الْخِلَافَةِ، فَكَانَ قِيمَةُ مَا نُثِرَ مِنَ الْجَوَاهِرِ مَا يُسَاوِي مِائَةَ أَلْفِ دِينَارٍ، وَمِثْلَهَا ذَهَبًا، وَأَلْفَ أَلْفِ دِرْهَمٍ، غَيْرَ مَا كَانَ مِنْ خِلَعٍ وَأَسْمِطَةٍ وَأَقْمِشَةٍ مِمَّا يَفُوتُ الْحَصْرَ وَكَانَ وَقْتًا مَشْهُودًا لَمْ يَكُنْ سُرُورٌ بِدَارِ الْخِلَافَةِ أَبْهَجَ مِنْهُ وَلَا أَحْسَنَ وَخَلَعَ الْخَلِيفَةُ عَلَى أُمِّ وَلَدِهِ الْمُعْتَزِّ - وَهِيَ قَبِيحَةُ - خِلَعًا سَنِيَّةً وَأَعْطَاهَا وَأَجْزَلَ لَهَا الْعَطَاءَ، وَكَذَلِكَ خَلَعَ عَلَى مُؤَدَّبِ الْمُعْتَزِّ - وَهُوَ مُحَمَّدُ بْنُ عِمْرَانَ - مِنَ الْجَوْهَرِ وَالذَّهَبِ وَغَيْرِ ذَلِكَ شَيْئًا كَثِيرًا جِدًّا وَاللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى أَعْلَمُ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৯
মুহতাদী বিল্লাহ এর খেলাফাত কাল :
নাম ও বংশ : আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ওছেক হারুন ইবনে মু’তাসেম।
এ বছর ২৬ রজব তিনি বায়াত গ্রহন করেন। তা এভাবে যে, মু’তায্য নিজেই পদত্যাগ করেন। এবং নিজের বিপরিতে এ স্বিকার উক্তি করতে বাধ্য হলেন যে, তিনি এখন খেলাফাতের দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম। আর একথাও স্বিকার করেন যে, তিনি নিজেই খেলাফাতের জন্য এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করেছেন যে খেলাফাতের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবে। তিনি হলেন মুহাম্মাদ ইবনে ওছেক বিল্লাহ। তারপর সর্বপ্রথম মু’তায্য নিজেই হাত বাড়িয়ে তার হাতে বায়াত হন। তারপর বিশেষ ব্যক্তিবর্গ বায়াত হন। তারপর জনসাধারণ বায়াত হন। মু’তাযযের খেলাফাত থেকে পদত্যাগ ও মুহতাদী বিল্লাহের বায়াতের ব্যাপারে তার থেকে লিখিতভাবে নেন।

এ বছর রজব মাসের শেষে বাগদাগে এক ভয়ানক ফেতনা দেখা দেয়। তা হল বাগদাদের অধিবাসীরা এখানের খলীফার প্রতিনিধি আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের কাছে একত্রিত হল। যিনি মু’তাযযের ভাই ছিলেন। বাগদাদের লোকেরা তার হাতে বায়াত হওয়ার জন্য সবাইকে আহবান করতে লাগল। এ ঘটনা এ জন্য হল যে বাগদাদের অধিবাসীরা জানত না যে সামাররাতে মুহতাদী বিল্লাহ ইবনে ওছেক বায়াত গ্রহন করেছেন। এ সময় বাগদাদ ও ইরাকের অনেক লোক কে হত্যা করা হল এবং অনেক লোককে ডুবিয়ে মারা হল। এরপর ৭ই শাবান ব্যাপকভাবে মুহতাদী বিল্লাহের হাতে মানুষ বায়াত হতে শুরু করল। আর এ খবর বাগদাদে পৌছলে তখন বাগদাদবাসী জানার পর চুপ হয়ে গেল আবূ আহমাদের হাতে বায়াতের আহবান বন্ধ করে দিল। আর মুহতাদী বিল্লাহের খেলাফাত দৃঢ় হল।

এ বছর রমযান মাসে মু’তাযযের মা কবিহার কাছে অনেক সম্পদ ও অগনিত জওহার পাওয়া গেল। যার মূল্য প্রায় বিশ লাখ দিনার। এবং এক মাক্কুল (চার শত সাতাত্তর কেজিরও বেশি) মূল্যবান ঝামরাদ পাথর ছিল যা সাধারণত মানুষ দেখেনি। এবং এক মাক্কুল দামী বড় মণি-মুক্তা। এক কলিজা পরিমান লাল ইয়াকুত পাথর ছিল যা সাধারণত মানুষ দেখত পেত না। এ সমস্ত মাল সালেহ ইবনে ওসিফের কাছে গোপনে রেখেছিল।
خِلَافَةُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدِ بْنِ الْوَاثِقِ هَارُونَ بْنِ الْمُعْتَصِمِ وَكَانَتْ بَيْعَتُهُ يَوْمَ الْأَرْبِعَاءِ لِلَّيْلَةِ بَقِيَتْ مِنْ رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ بَعْدَ خَلْعِ الْمُعْتَزِّ نَفْسَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَإِشْهَادِهِ عَلَى نَفْسِهِ بِأَنَّهُ عَاجِزٌ عَنِ الْقِيَامِ بِأَمْرِ الْخِلَافَةِ، وَأَنَّهُ قَدْ رَغِبَ إِلَى مَنْ يَقُومُ بِأَعْبَائِهَا مُحَمَّدِ بْنِ الْوَاثِقِ بِاللَّهِ. ثُمَّ مَدَّ يَدَهُ فَبَايَعَهُ قَبْلَ النَّاسِ كُلِّهِمْ، ثُمَّ بَايَعَهُ الْخَاصَّةُ ثُمَّ كَانَتْ بَيْعَةُ الْعَامَّةِ وَكُتِبَ عَلَى الْمُعْتَزِّ كِتَابٌ أُشْهِدَ عَلَيْهِ فِيهِ بِالْخَلْعِ وَالْعَجْزِ وَالْمُبَايَعَةِ لِلْمُهْتَدِي. وَفِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ رَجَبٍ هَذَا وَقَعَتْ بِبَغْدَادَ فِتْنَةٌ هَائِلَةٌ وَثَبَتَ فِيهَا الْعَامَّةُ عَلَى نَائِبِهَا سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ وَدَعَوْا إِلَى بَيْعَةِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ أَخِي الْمُعْتَزِّ ; وَذَلِكَ لِعَدَمِ عِلْمِ أَهْلِ بَغْدَادَ بِمَا وَقَعَ بِسَامَرَّا مِنْ بَيْعَةِ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ ابْنِ الْوَاثِقِ، وَقُتِلَ مِنْ أَهْلِ بَغْدَادَ وَغَرِقَ مِنْهُمْ خَلْقٌ كَثِيرٌ، ثُمَّ لَمَّا بَايَعَ النَّاسُ بَيْعَةَ الْعَامَّةِ لِلْمُهْتَدِي بِاللَّهِ فِي سَابِعِ شَعْبَانَ، وَبَلَغَ أَهْلَ بَغْدَادَ ذَلِكَ، سَكَنُوا وَاسْتَقَرَّتِ الْأُمُورُ وَاسْتَقَلَّ الْمُهْتَدِي بِالْخِلَافَةِ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ. وَفِي رَمَضَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ عِنْدَ قَبِيحَةَ أُمِّ الْمُعْتَزِّ أَمْوَالٌ عَظِيمَةٌ، وَجَوَاهِرُ نَفِيسَةٌ ; كَانَ مِنْ جُمْلَةِ ذَلِكَ مَا يُقَارِبُ أَلْفَيْ أَلْفِ دِينَارٍ وَمِنَ الزُّمُرُّدِ الَّذِي لَمْ يُرَ مِثْلُهُ مِقْدَارُ مَكُّوكٍ، وَمِنَ الْحَبِّ الْكِبَارِ مَكُّوكٌ وَكَيْلَجَةُ يَاقُوتٍ أَحْمَرَ مِمَّا لَمْ يُرَ مِثْلُهُ أَيْضًا. وَقَدْ كَانَتْ قَبْلَ ذَلِكَ مُخْتَفِيَةً عِنْدَ صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ
পৃষ্ঠা - ৮৮০০
তারপর তার সাথে বিবাহ বসেন। (অন্য মুদ্রনে نزحت এর স্থানে تزوجت আছে। এখানে تزوجت ধরেই অনুবাদ করা হয়ে)। কিন্তু তিনি সবসময় সালেহ ইবনে ওসিফের জন্য বদ দুআ করতেন যে, হে আল্লাহ তুমি তাকে বদলা দাও। যেমন সে আমার গোপন রহস্য প্রকাশ করে দিছে। আমার ছেলে কে হত্যা করেছে। আমার সুখ-শান্তি শেষ করে দিছে। আমার সমস্ত মাল-সম্পদ ছিনিয়ে নিছে। আমাকে ঘর ছাড়া করেছে। আমাকে জোর করে তার বিছানায় নিয়ে গেছে। এ সব ঐ অবস্থার কথা যখন তার ছেলে মু’তাযযের কাছে তুর্কীরা তাদের বকেয়া ভাতা পঞ্চাশ হাজার টাকা চেয়েছিল। আর মু’তায্যকে মারার জন্য সালেহ ইবনে ওসিফের দায়িত্ব দিছিল। কিন্তু তার কাছে টাকা ছিল না। তাই তার মা কবিহার কাছে কর্জ চাইছিলেন (আল্লাহ তায়ালা তার মাকে অঙ্গল করুক) কিন্তু তার মা এমন ভাব প্রকাশ করেছিল যে, তার কাছে কিছুই নেই। অতঃপর তার ছেলে কে হত্যা করার পরে তার থেকে এ সমস্ত মাল-সম্পদ বের হয়ে আসল। ঐ সময় তার যে বৎসরিক খোরাকী নির্ধারিত ছিল তার মূল্য দশ হাজার দিনার। (এত কিছু থাকার পরেও তিনি তার ছেলে কে সহায্য করেন নাই।)

মোট কথা মুহতাদী বিল্লাহ খলীফা হিসেবে স্থির হয়ে গেলেন। আলহামদুলিল্লাহ তিনি একজন নেককার খলীফা ছিলেন। একদিন তিনি আমীর-উমারাদের বললেন আমার মা এমন না যে তার খোরাকী শুধু দশ লাখ দিনার পরিমাণ। আমি তো শুধু পেট ভরা পরিমাণ রুজি চাই। এর থেকে বেশি নিজের জন্য কিছু চাই না। তবে আমার কয়েক জন ভাই আছে যারা গরীব। তাদের প্রয়োজন মিটাতে চাই।

২৭ শে রমযান বৃহস্পতিবার আহমাদ ইবনে ইসরাইল কে যিনি উজির ছিলেন এবং ঈসা ইবনে ইবরাহীম কে যিনি বাস্তবে খৃষ্টান ছিলেন কিন্তু নিজেকে মুসলমান হিসেবে প্রকাশ করতেন, এবং তিনি কবিহার লেখকও ছিলেন। এদের উভয় কে মারার জন্য সালেহ ইবনে ওসিফ হুকুম দিলেন। হুকুম অনুপাতে প্রথমে তাদের মাল সম্পদ নিয়ে নেয়া হল। তারপর প্রত্যেক কে পাঁচশত বেত্রাঘাত মারা হল। তারপর তাদেরে কে উল্টা করে গাধার পিঠে চড়ায়ে শহরে ঘুরানো হয়। অবশেষে এ অবস্থায় তারা মারা যায়। তাদের সাথে এ ব্যবহারে খলীফা মুহতাদী বিল্লাহের রাজি ছিলেন না।
ثُمَّ نَزَحَتْ عَنْهُ، فَكَانَتْ تَدْعُو عَلَيْهِ ; تَقُولُ: اللَّهُمَّ أَخْزِ صَالِحَ بْنَ وَصِيفٍ كَمَا هَتَكَ سِتْرِي، وَقَتَلَ وَلَدِي وَبَدَّدَ شَمْلِي وَأَخَذَ مَالِي وَغَرَّبَنِي عَنْ بَلَدِي، وَرَكِبَ الْفَاحِشَةَ مِنِّي. هَذَا وَقَدْ كَانَ الْأَتْرَاكُ قَدْ طَلَبُوا مِنَ ابْنِهَا الْمُعْتَزِّ خَمْسِينَ أَلْفَ دِينَارٍ تُصْرَفُ فِي أَرْزَاقِهِمْ وَضَمِنُوا لَهُ أَنْ يَقْتُلُوا صَالِحَ بْنَ وَصِيفٍ فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ فَطَلَبَ مِنْ أُمِّهِ قَبِيحَةَ - قَبَّحَهَا اللَّهُ - أَنْ تُقْرِضَهُ ذَلِكَ، فَأَظْهَرَتْ أَنَّهُ لَا شَيْءَ عِنْدَهَا. ثُمَّ لَمَّا قُتِلَ ابْنُهَا - وَكَانَ مَا كَانَ - ظَهَرَ عِنْدَهَا مِنَ الْأَمْوَالِ مَا ذَكَرْنَا. وَقَدْ كَانَ لَهَا مِنَ الْغَلَّاتِ فِي كُلِّ سَنَةٍ مَا يَعْدِلُ عَشَرَةَ آلَافِ أَلْفِ دِينَارٍ. وَاسْتَقَرَّتِ الْخِلَافَةُ لِلْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَكَانَ - وَلِلَّهِ الْحَمْدُ - خَلِيفَةً صَالِحًا. قَالَ يَوْمًا لِلْأُمَرَاءِ: إِنِّي لَيْسَتْ لِي أُمٌّ لَهَا مِنَ الْغَلَّاتِ مَا يُقَاوِمُ عَشَرَةَ آلَافِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَلَسْتُ أُرِيدُ إِلَّا الْقُوتَ فَقَطْ، وَلَا أُرِيدُ فَضْلًا عَلَى ذَلِكَ إِلَّا لِإِخْوَتِي فَإِنَّهُمْ قَدْ مَسَّتْهُمُ الْحَاجَةُ. وَفِي يَوْمِ الْخَمِيسِ لِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ رَمَضَانَ أَمَرَ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ بِضَرْبِ أَحْمَدَ بْنِ إِسْرَائِيلَ الَّذِي كَانَ وَزِيرًا، وَأَبِي نُوحٍ عِيسَى بْنِ إِبْرَاهِيمَ الَّذِي كَانَ نَصْرَانِيًّا فَأَظْهَرَ الْإِسْلَامَ، وَكَانَ كَاتِبَ قَبِيحَةَ فَضُرِبَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا خَمْسَمِائَةِ سَوْطٍ بَعْدَ اسْتِخْلَاصِ أَمْوَالِهِمَا، ثُمَّ طِيفَ بِهِمَا عَلَى بَغْلَيْنِ مُنَكَّسَيْنِ فَمَاتَا، وَهُمَا كَذَلِكَ وَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ عَنْ رِضَا الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ، وَلَكِنْ لَا يَقْدِرُ عَلَى
পৃষ্ঠা - ৮৮০১
কিন্তু সালেহ ইবনে ওসিফের কাজে সরাসরি বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।

এ বছর রমযান মাসে বাগদাদে বড় গেলযোগ শুরু হয়। যার এক পক্ষে ছিল মুহাম্মাদ ইবনে আউস ও তার অনুসারী এবং সৈন্য বাহিনী। অপর পক্ষে ছিল সাধারণ জনগণ। জনসাধারণ প্রায় এক লক্ষ ছিল। তীর, বর্শা, তরবারী ইত্যাদি দ্বারা যুদ্ধ হয়। এখানে অনেক মানুষ মারা যায়। অবশেষে মুহাম্মাদ ইবনে আউস ও তার সাথি সঙ্গিরা পরাজিত হয়। তখন জনগণ তার যে মাল-সম্পদ পেয়েছিল সব লুটে নিল। যা আনুমানিক বিশ লাখ হবে। এরপর সবাই একমত হল যে, মুহাম্মাদ ইবনে আউস কে বাগদাদ থেকে বের করে দেওয়া হবে। তারপর সে দেশের যেখানে ইচ্ছা চলে যাবে। তখন সে ভীত-সন্ত্রাস্ত হয়ে একাই বাগদাদ থেকে বের হয়ে গেলেন। জনসাধারণ এ হাঙ্গামা করার কারণ হল, তার ব্যবহার মানুষের পছন্দনীয় ছিল না। তিনি অহঙ্কারী, জেদী, সেচ্ছাচারী শাসক, বড় ফাসেক ছিলেন।

খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ নাচ গানকারীদের কে সামাররা থেকে বের করে দিতে নির্দেশ দিলেন। শাহী বালাখানায় বিনেদনের জন্য যে সমস্ত হিংস্র জন্তু চিতা ইত্যাদি তা মেরে ফেলতে বলেন। অনুরূপভাবে শিকারের জন্য যে সমস্ত কুকুর রাখা ছিল তাও মেরে ফেলতে নির্দেশ দেন। খেল-ধুলার জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলতে বলেন। মাজলুমের অধিকার তাকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। সৎ কাজে আদেশ অসৎ কাজে নিষেধের উপদেশ দেন। খলীফা নিজে জনসাধারণের অবস্থা জানার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে বৈঠক করতে লাগলেন।
এভাবে শাম ও দুনিয়ার অনেক এলাকায় তার রাজত্ব কায়েম হয়ে গেল। অতঃপর খলীফা মুহতাদী মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর কে তার দরবারে ডাকলেন। যাতে তার মাধ্যমে তার এলাকায় যে সমস্ত তুর্কীগণ আছে তাদেকে আয়ত্বে আনতে পারেন। যাতে তার হুকুমত মজবুত হয়ে যায়। কিন্তু মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর তার নিজের এলাকায় যুদ্ধ জিহাদ হওয়ার ভয়ে খলীফার ডাকে সাড়া দিতে অস্বিকৃতী জানালেন।
الْإِنْكَارِ عَلَى صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ فِي بَادِئِ الْأَمْرِ. وَفِي رَمَضَانَ فِي هَذِهِ السَّنَةِ وَقَعَتْ فِتْنَةٌ بِبَغْدَادَ أَيْضًا بَيْنَ مُحَمَّدِ بْنِ أَوْسٍ وَمَنِ اتَّبَعَهُ مِنَ الشَّاكِرِيَّةِ وَالْجُنْدِ وَغَيْرِهِمْ وَبَيْنَ الْعَامَّةِ وَالرَّعَاعِ فَاجْتَمَعَ مِنَ الْعَامَّةِ نَحْوٌ مَنْ مِائَةِ أَلْفٍ، وَكَانَ بَيْنَ النَّاسِ قِتَالٌ بِالنِّبَالِ وَالرِّمَاحِ وَالسُّيُوفِ، وَقُتِلَ خَلْقٌ كَثِيرٌ، ثُمَّ انْهَزَمَ مُحَمَّدُ بْنُ أَوْسٍ وَأَصْحَابُهُ فَنَهَبَتِ الْعَامَّةُ مَا وَجَدُوا مِنْ أَمْوَالِهِ، وَكَانَ مِنْهُ شَيْءٌ يُعَادِلُ أَلْفَيْ أَلْفٍ، أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ. ثُمَّ اتَّفَقَ الْحَالُ عَلَى إِخْرَاجِ مُحَمَّدِ بْنِ أَوْسٍ مِنْ بَغْدَادَ إِلَى أَيْنَمَا أَرَادَ مِنْ سَائِرِ الْبِلَادِ فَخَرَجَ مِنْهَا خَائِفًا طَرِيدًا ; وَذَلِكَ لِأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ عِنْدَ النَّاسِ مَرْضِيَّ السِّيرَةِ بَلْ كَانَ جَبَّارًا عَنِيدًا، وَشَيْطَانًا مَرِيدًا وَفَاسِقًا شَدِيدًا وَأَمَرَ الْخَلِيفَةُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ بِأَنْ يُنْفَى الْقِيَانُ وَالْمُغَنِّيُونَ مَنْ سَامَرَّا، وَأَمَرَ بِقَتْلِ السِّبَاعِ وَالنُّمُورِ الَّتِي فِي دَارِ السُّلْطَانِ، وَالْكِلَابِ الْمُعَدَّةِ لِلصَّيْدِ أَيْضًا، وَإِبْطَالِ الْمَلَاهِي وَرَدِّ الْمَظَالِمِ، وَأَنْ يُؤْمَرَ بِالْمَعْرُوفِ وَيُنْهَى عَنِ الْمُنْكَرِ وَجَلَسَ لِلْعَامَّةِ. وَكَانَتْ وِلَايَتُهُ وَالدُّنْيَا كُلُّهَا مِنْ أَرْضِ الشَّامِ وَغَيْرِهَا مُفْتَرِقَةٌ، ثُمَّ اسْتَدْعَى الْخَلِيفَةُ الْمُهْتَدِي مُوسَى بْنَ بُغَا الْكَبِيرِ إِلَى حَضْرَتِهِ ; لِيَتَقَوَّى بِهِ عَلَى مَنْ عِنْدَهُ مِنَ الْأَتْرَاكِ ; لِتَجْتَمِعَ كَلِمَةُ الْخِلَافَةِ وَاعْتَذَرَ مِنَ اسْتِدْعَائِهِ بِمَا هُوَ فِيهِ مِنَ الْجِهَادِ بِتِلْكَ الْبِلَادِ.
পৃষ্ঠা - ৮৮০২
বসরাতে এক খারেজী আহলে বাইতের দাবী করেন :
এ বছর শাওয়াল মাসে বসরাতে এক খারেজী দাবী করেন সে আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। সে তার বংশ এভাবে বর্ণনা করেন যে, আলী ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ ইবনে ঈসা ইবনে যায়েদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। কিন্তু সে এ ক্ষেত্রে সে মিথ্যা বলেছেন। বাস্তবে সে আব্দুল কয়েস গেত্রের লোক। তার বংশক্রম মূলত এমন যে, আলী ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহীম। তার মা হল কুরাহ বিনতে আলী ইবনে রাহীব ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে হাকীম। তার মা বনি আসাদ ইবনে খুজাইমার গোত্রের। রায় নামক শহরের কোন এক অঞ্চল হল তার আসল ঠিকানা।  -ঐতিহাসী ইবনে জারির এমনই বর্ণনা করেছেন।
ইবনে জারির আরো বলেন : ২৪৯ সালে আরো একবার তিনি আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তখন সে দাবী করেছিলেন তার বংশক্রম হল- মুহাম্মাদ ইবনে ফযল ইবনে হুসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ইবনে আলী ইবনে আবী তালেব। তখন তিনি হিজর নামক এলাকার লোকদের কে তার আনুগত্য করার আহবান করেন। তখন ঐখানের কিছু লোক তার আহবানে সাড়া দিয়ে তার অনুস্বরণ করে। যার কারণে সেখানে অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ অনেক বড় বড় ফেতনা সৃষ্টি হয়।
ذِكْرُ خَارِجِيٍّ آخَرَ ادَّعَى أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ ظَهَرَ بِالْبَصْرَةِ وَفِي النِّصْفِ مِنْ شَوَّالٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ رَجُلٌ بِظَاهِرِ الْبَصْرَةِ زَعَمَ أَنَّهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ زَيْدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، وَلَمْ يَكُنْ صَادِقًا فِي دَعْوَاهُ هَذَا النَّسَبَ، وَإِنَّمَا كَانَ عَبْقَسِيًّا - مَنْ عَبْدِ الْقَيْسِ - وَاسْمُهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحِيمِ، وَأُمُّهُ قُرَّةُ بِنْتُ عَلِيِّ بْنِ رَحِيبِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ حَكِيمٍ مِنْ بَنِي أَسَدِ بْنِ خُزَيْمَةَ، وَأَصْلُهُ مِنْ قَرْيَةٍ مِنْ قُرَى الرَّيِّ. قَالَهُ ابْنُ جَرِيرٍ. قَالَ: وَقَدْ خَرَجَ أَيْضًا فِي سَنَةِ تِسْعٍ وَأَرْبَعِينَ وَمِائَتَيْنِ بِالْبَحْرَيْنِ فَادَّعَى أَنَّهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْفَضْلِ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، فَدَعَا النَّاسَ بِهَجَرَ إِلَى طَاعَتِهِ فَاتَّبَعَهُ جَمَاعَةٌ مِنْ أَهْلِهَا، فَوَقَعَ بِسَبَبِهِ قِتَالٌ كَثِيرٌ وَفِتَنٌ كِبَارٌ وَحُرُوبٌ كَثِيرَةٌ وَمُنْتَشِرَةٌ.
পৃষ্ঠা - ৮৮০৩
তিনি যখন দ্বিতীয় বার বসরাতে ভিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ করেন তখনও কিছু লোক তার শাগরেদ হয়ে যায়। তারা কৃষক ও শ্রমিক ছিল। তারপর তিনি ঐ সমস্ত লোকদের নিয়ে দজলার তিরে গেলেন। সেখানে দীনারী নামক এলাকাতে অবস্থান করেন। তিনি দাবী করতেন যে, কুরআনের কয়েকটা বড় বড় সূরা তিনি একবার দেখে মুখস্ত করে ফেলেছেন। যে সুরাগুলো অন্য কেউ অনেক লম্বা সময়েও মুখস্ত করতে পারবে না। সে সুরাগুলো হল- সূরা ইসরা, সূরা কাহাফ, সূরা সদ।
তার সম্পর্কে আরো বলা হয়, একদা গ্রামে বসে চিন্তা করছিলেন যে, তিনি কোন শহরে যাবেন? তখন আসমান থেকে বলা হল বসরা যেতে। তখন তিনি বসরাতে যান। যখন তিনি বসরার নিকটবর্তী হন তখন বসরাবাসীকে সা’দিয়া ও বিলালিয়া নামে দুই গ্রুফে বিভক্ত পান। তখন তিনি চাইলেন দু গ্রুফের এক গ্রুফের সাথে মিশে অপর গ্রুফের উপর হামলা করতে। কিন্তু তিনি তাতে সফল হতে পারেন নি।

তারপর তিনি বাগদাদে যান। এখানে এক বছর অবস্থান করেন। এখনে এসে তার বংশ পরিচয় এভাবে দেন- মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ ইবনে ঈসা ইবনে যায়েদ। তার সম্পর্কে ধারণা করা হত যে, তিনি তার শাগরেদদের মনের কথা জানেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে এ সব জানিয়ে দেন। এ কথা শুনে কিছু মুর্খ্য নিচু শ্রিণির সাধারণ লোক তার অনুসারী হয়ে যায়।

তারপর তিনি এ বছর রমযান মাসে আবার বসরায় ফিরে আসেন। তখন বেশ কিছু লোক তার শাগরেদ হয়ে যায়। কিন্তু এখনো তার শাগরেদ এ পরিমান হয়নি যা নিয়ে কারো সাথে লড়াই করা যায়। তারপর বসরার একপ্রান্ত থেকে এক সৈন্য বাহিনী তার সাথে লড়াই করার জন্য আসে। তখন এই খারেজীর বাহিনীতে মাত্র তিনটি তরবারি ছাড়া আর কিছু ছিল না। অপর দিকে ঐ সৈন্য বহিনীতে অনেক সৈন্য ছিল এবং যুদ্ধের আসবাব পত্রও যতেষ্ঠ পরিমাণে ছিল। তারপরেও এই খারেজী বাহিনী এই বিশাল বাহিনীকে পারাজিত করল। অথচ তার বাহিনীতে মাত্র চার হাজার যোদ্ধা ছিল। তারপর এই খারেজী তার শাগরেদদের নিয়ে বসরাতে গেলেন।
وَلَمَّا خَرَجَ خَرْجَتَهُ هَذِهِ الثَّانِيَةَ بِظَاهِرِ الْبَصْرَةِ الْتَفَّ عَلَيْهِ خَلْقٌ مِنَ الزَّنْجِ الَّذِينَ كَانُوا يَكْسَحُونَ السِّبَاخَ فَعَبَرَ بِهِمْ دِجْلَةَ فَنَزَلَ الدِّينَارِيَّ، وَكَانَ يَزْعُمُ لِبَعْضِ الْجَهَلَةِ مِنْ أَتْبَاعِهِ أَنَّهُ يَحْيَى بْنُ عُمَرَ أَبُو الْحُسَيْنِ الْمَقْتُولُ بِنَاحِيَةِ الْكُوفَةِ وَكَانَ يَدَّعِي أَنَّهُ حَفِظَ سُوَرًا مِنَ الْقُرْآنِ فِي سَاعَةٍ وَاحِدَةٍ جَرَى بِهَا لِسَانُهُ لَا يَحْفَظُهَا غَيْرُهُ فِي مُدَّةٍ ; وَهُنَّ " سُبْحَانَ " وَالْكَهْفُ " وَص " وَأَنَّهُ فَكَّرَ يَوْمًا وَهُوَ فِي الْبَادِيَةِ إِلَى أَيِّ الْبِلَادِ يَصِيرُ، فَخُوطِبَ مِنْ سَحَابَةٍ أَنْ يَقْصِدَ الْبَصْرَةَ فَقَصَدَهَا، وَلَمَّا اقْتَرَبَ مِنْهَا وَجَدَ أَهْلَهَا مُفْتَرِقِينَ عَلَى شُعْبَتَيْنِ ; سَعْدِيَّةٍ وَبِلَالِيَّةٍ فَطَمِعَ أَنْ يَنْضَمَّ إِلَيْهِ إِحْدَاهُمَا فَيَسْتَعِينَ بِهَا عَلَى الْأُخْرَى فَلَمْ يَقْدِرْ عَلَى ذَلِكَ، فَارْتَحَلَ إِلَى بَغْدَادَ فَأَقَامَ بِهَا سَنَةً وَانْتَسَبَ بِهَا إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ زَيْدٍ، وَكَانَ يَزْعُمُ بِهَا أَنَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي ضَمَائِرِ أَصْحَابِهِ، وَأَنَّ اللَّهَ يُعْلِمُهُ بِذَلِكَ فَتَبِعَهُ عَلَى ذَلِكَ جَهَلَةٌ مِنَ الطَّغَامِ، وَطَائِفَةٌ مِنْ رَعَاعِ النَّاسِ الْعَوَامِّ. ثُمَّ عَادَ إِلَى أَرْضِ الْبَصْرَةِ فِي رَمَضَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ فَاجْتَمَعَ مَعَهُ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَلَكِنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُمْ عُدَدٌ يُقَاتِلُونَ بِهَا فَأَتَاهُمْ جَيْشٌ مِنْ نَاحِيَةِ الْبَصْرَةِ فَاقْتَتَلُوا جَمِيعًا، فَلَمْ يَكُنْ فِي جَيْشِ هَذَا الْخَارِجِيِّ سِوَى ثَلَاثَةِ أَسْيَافٍ وَأُولَئِكَ الْجَيْشُ مَعَهُمْ عُدَدٌ وَعَدَدٌ وَلَبُوسٌ وَمَعَ هَذَا هَزَمَ أَصْحَابُ هَذَا الْخَارِجِيِّ ذَلِكَ الْجَيْشَ وَكَانُوا فِي أَرْبَعَةِ آلَافِ مُقَاتِلٍ ثُمَّ مَضَى نَحْوَ الْبَصْرَةِ بِمَنْ
পৃষ্ঠা - ৮৮০৪
ওখানে যাওয়ার পর একজন তাকে একটি ঘোড়া হাদিয়া দিল। কিন্তু সে ঘেড়ার জিন ছিল না, লেগামও ছিল না। কিন্তু সে একটা রশি বেধে ঐ ঘোড়াই সওয়ার হলেন। এবং খেজুরের ছাল দ্বারা তৈরি রশি দ্বারা ঘোড়ার মুখ বেধে নিলেন। পথি মধ্যে এক ব্যক্তির উপর হামলা করেন। তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার থেকে একশত পঞ্চাশ দিনার ও এক হাজার দেরহাম নিলেন। এটাই তার এ এলাকা থেকে প্রথম গনিমতের মাল অর্জন হল। তারপর অপর আরেক ব্যক্তির উপর হামলা করেন। তার থেকে তিনিটি তুর্কী ঘোড়া ছিনিয়ে নিলেন। অন্য এক জায়গা থেকে অনেক অস্ত্র ও আসবাবপত্র লুটে নিলেন। এভাবে তার তার বাহিনীতে কিছু ঘোড়া কিছু অস্ত্র আসল। তারপর তার মাঝে ও বসরার প্রতিনিধির সৈন্য বাহিনীর মাঝে কয়েক বার যুদ্ধ হল। আর প্রত্যেকবারই তিনি তাদের কে পরাজিত করেন। প্রতি বারই তিনি এমন কিছু মাল-সম্পদ পান যাতে তার শক্তি বাড়তে থাকে। তার শাগরেদও দিন দিন বাড়তে থাকে। তার সৈন্য বাহিনী বড় হতে থাকে। তার এ ক্ষমতা ও সফলতা সত্তেও সে সাধারণ মানুষের মালের দিকে হাত বাড়াতেন না। তার উদ্দেশ্য ছিল শুধু মাত্র বাদশা ও শাসকদের মাল ছিনিয়ে নেয়া।

ঘটনাক্রমে একবার তার শাদরেদগন এক যুদ্ধে পরাজিত হয়। তারপর সবাই তার কাছে ফিরে আসে এবং তার চারপাশে একত্রিত হয়। তখন তিনি পুনঃরায় আবার বসরাতে হামলা করতে পাঠান। তাদেরকে পরাজিত করনে। তাদের অনেক লোককে হত্যা করেন। আর অনেককে বন্ধি করেন। তার কাছে যে বন্ধিকে আনা তাকে সাথে সাথে কতল করেন। এভাবে তার ক্ষমতা আরো মজবুত হল। বসরাবাসী তকে ভয় পেতে লাগল। তখন খলীফা এক বিশেষ সৈন্য বাহিনীকে পাঠান। এই হবশী খারেজীর বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্য। আল্লাহ তায়ালা তাকে অমঙ্গল করুক। এ সময় তার বিশেষ কিছু শাগরেদ তাকে পরামর্শ দিল যে, তিনি নিজেই যেন হটাৎ বসরাতে হামলা করে জোর পূর্বক বসরা দখল করে নেন। কিন্তু তিনি এ পরামর্শ গ্রহন করেননি। তিনি বললেন আমরা আস্তে আস্তে তাদের নিকটতম হয়ে যাব। তখন বসরাবাসী নিজেরাই তাদের সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের কে ডাকবে। এই খারেজী ও বসরাবসী সম্পর্কে আরো আলোচনা পরবর্তী বছরের আলোচনায় আসবে। ইনশাআল্লাহ।
مَعَهُ فَأَهْدَى لَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ جُبَّا فَرَسًا، فَلَمْ يَجِدْ لَهَا سَرْجًا وَلَا لِجَامًا، فَأَلْقَى عَلَيْهَا حَبْلًا وَرَكِبَهَا، وَشَنَقَ حَنَكَهَا بِلِيفٍ، ثُمَّ صَادَرَ رَجُلًا فَتَهَدَّدَهُ بِالْقَتْلِ فَأَخَذَ مِنْهُ مِائَةً وَخَمْسِينَ دِينَارًا وَأَلْفَ دِرْهَمٍ فَكَانَ هَذَا أَوَّلَ مَالٍ غَنِمَهُ مِنْ هَذِهِ الْبِلَادِ، وَأَخَذَ مِنْ آخَرَ ثَلَاثَةَ بَرَاذِينَ، وَأَخَذَ مِنْ مَوْضِعٍ آخَرَ شَيْئًا مِنَ الْأَسْلِحَةِ وَالْأَمْتِعَةِ، فَسَارَ فِي جَيْشِهِ قَلِيلُ سِلَاحٍ وَخُيُولٍ، ثُمَّ جَرَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ جُيُوشٍ مِنْ جِهَةِ نَائِبِ الْبَصْرَةِ وَقْعَاتٌ مُتَعَدِّدَةٌ يَهْزِمُهُمْ فِيهَا وَكُلُّ مَا لِأَمْرِهِ يَقْوَى وَيَتَزَايَدُ أَصْحَابُهُ وَيَعْظُمُ جَيْشُهُ، وَهُوَ مَعَ ذَلِكَ لَا يَتَعَرَّضُ لِأَمْوَالِ النَّاسِ، وَإِنَّمَا يُرِيدُ أَخْذَ أَمْوَالِ السُّلْطَانِ. وَقَدِ انْهَزَمَ أَصْحَابُهُ فِي بَعْضِ تِلْكَ الْحُرُوبِ هَزِيمَةً فَظِيعَةً ثُمَّ تَرَاجَعُوا إِلَيْهِ وَاجْتَمَعُوا حَوْلَهُ، ثُمَّ كَرُّوا إِلَى أَهْلِ الْبَصْرَةِ فَهَزَمُوهُمْ وَقَتَلُوا مِنْهُمْ خَلْقًا وَأَسَرُوا آخَرِينَ، فَكَانَ لَا يُؤْتَى بِأَحَدٍ مِنَ الْأَسْرَى إِلَّا قَتَلَهُ، ثُمَّ قَوِيَ أَمْرُهُ بَعْدَ ذَلِكَ، وَخَافَهُ أَهْلُ الْبَصْرَةِ وَبَعَثَ الْخَلِيفَةُ إِلَيْهَا مَدَدًا يَكُونُونَ لَهُمْ عَلَى صَاحِبِ الزَّنْجِ - هَذَا الْخَارِجِيِّ قَبَّحَهُ اللَّهُ - ثُمَّ أَشَارَ عَلَيْهِ رُءُوسُ أَصْحَابِهِ أَنْ يَهْجُمَ بِهِمْ عَلَى أَهْلِ الْبَصْرَةِ فَيَدْخُلُونَهَا عَنْوَةً، فَهَجَّنَ آرَاءَهُمْ، وَقَالَ: بَلْ نَكُونُ مِنْهَا قَرِيبًا حَتَّى يَكُونُوا هُمُ الَّذِينَ يَطْلُبُونَنَا إِلَيْهَا، وَيَخْطُبُونَنَا عَلَيْهَا. وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ،
পৃষ্ঠা - ৮৮০৫
এ বছর হুসাইন ইবনে ইসমাইল ইবনে আব্বাস ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস মানুষদের নিয়ে হজ্জ করেন।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :
জাহেয যিনি ধর্মতত্ববিদ ছিলেন, মু’তাঝিলী ছিলেন। তার নামেই জাহেযিয়্যাহ ফেরকার নামকরণ হয়েছে। তার পুরো নাম : আবূ উসমান আমর ইবনে বাহার ইবনে মাহবুব কিনানী লায়ছী বাসরী। তিনি জাহেয নামে প্রশিদ্ধ। তার চোখ স্ফীত থাকার কারণে তাকে এ নাম করণ করা হয়। এ কারণে তাকে ‘হাদাকী’ও বলা হয়। তিনি দেখতে খুব বদ সুরাত কুৎসিত চেহারার ছিলেন। তার আকীদাও খারাপ ছিল। তাকে বেদআতী ও গোমরাহ বল হত। কেউ কেউ তো তাকে কাফেরও বলতেন। এমনকি প্রবাদ হিসেবে প্রশিদ্ধ ছিল যে, বড় আফসোস ঐ ব্যাক্তির উপর যাকে জাহেয কাফের বলেছে। (অর্থাৎ জাহেযের মত ব্যাক্তি যাকে কাফের বলে তার থেকে খারাপ আর কে হতে পারে?) আল্লাহ তায়ালাই তার অবস্থা ভালো জানে।
কিন্তু ইলেমের দিক থেকে তিনি অনেক বড় আলেম ছিলেন। সব বিষয়ে তিনি দক্ষ আলেম ছিলেন। তিনি অনেক বিষয়ে বিভিন্ন কিতাব লিখেছেন। যে সমস্ত কিতাব থেকে তার প্রখর মেধা, উপস্থি বুদ্ধি ও ইলমী দক্ষতা বুঝা যায়। তার লিখিত কিতাব সমূহের মধ্যে সবচেয়ে প্রশিদ্ধ কিতাব হল ‘আল-হাওয়ান’ ও ‘আল-বয়ান ওয়াত তাবয়ীন’
ইবনে খালদুন তার প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন : তার লিখিত কিতাবগুলোর মধ্যে সবথেকে উত্তম এই দুই কিতাব। তিনি তার বর্ণনাকৃত ঘটনা থেকে অনেক ঘটনা বর্ণনা করে তার সম্পর্কে অনেক লম্বা আলোচনা করেছেন। তার শেষ বয়সে পক্ষাঘাত রোগ হয়। ইবনে খালদুন তার থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন : আমার বাম পাশে পক্ষাঘাত রোগ হয়েছে যার ফলে এমন অনুভুতিহীন হয়ে গেছে যে, যদি কাঁচি দিয়ে কাটা হয় তাহলেও আমি বুঝতে পারব না।
وَأَمْرِ أَهْلِ الْبَصْرَةِ فِي السَّنَةِ الْمُسْتَقْبَلَةِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى. وَحَجَّ بِالنَّاسِ فِي هَذِهِ السَّنَةِ عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ الْعَبَّاسِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَمِمَّنْ تُوُفِّيَ فِي هَذِهِ السَّنَةِ مِنَ الْأَعْيَانِ: الْجَاحِظُ الْمُتَكَلِّمُ الْمُعْتَزِلِيُّ. وَإِلَيْهِ تُنْسَبُ الْفِرْقَةُ الْجَاحِظِيَّةُ مِنْهُمْ، وَهُوَ أَبُو عُثْمَانَ عَمْرُو بْنُ بَحْرِ بْنِ مَحْبُوبٍ الْكِنَانِيُّ اللَّيْثِيُّ الْبَصْرِيُّ، الْمَعْرُوفُ بِالْجَاحِظِ ; لِجُحُوظِ عَيْنَيْهِ، وَيُقَالُ لَهُ: الْحَدَقِيُّ. وَكَانَ شَنِيعَ الْمَنْظَرِ سَيِّئَ الْمَخْبَرِ رَدِيءَ الِاعْتِقَادِ يُنْسَبُ إِلَى الْبِدْعَةِ، وَرُبَّمَا جَاوَزَ بِهِ بَعْضُهُمْ إِلَى الِانْحِلَالِ حَتَّى يُقَالَ فِي الْمَثَلِ: يَا وَيْحَ مَنْ كَفَّرَهُ الْجَاحِظُ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِحَالِهِ. وَكَانَ بَارِعًا فَاضِلًا، قَدْ أَتْقَنَ عُلُومًا كَثِيرَةً، وَصَنَّفَ كُتُبًا جَمَّةً تَدُلُّ عَلَى قُوَّةِ ذِهْنِهِ وَجَوْدَةِ تَصَرُّفِهِ. وَمِنْ أَجَلِّ كُتُبِهِ كِتَابُ " الْحَيَوَانِ "، وَكِتَابُ " الْبَيَانِ وَالتَّبْيِينِ ". قَالَ ابْنُ خِلِّكَانَ: وَهُمَا أَحْسَنُ مُصَنَّفَاتِهِ وَأَمْتَعُهَا، وَقَدْ أَطَالَ تَرْجَمَتَهُ بِحِكَايَاتٍ ذَكَرَهَا عَنْهُ. وَذَكَرَ: أَنَّهُ أَصَابَهُ الْفَالِجُ فِي آخِرِ عُمُرِهِ، وَحَكَى عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: أَنَا مِنْ جَانِبِي الْأَيْسَرِ مَفْلُوجٌ، لَوْ قُرِضَ بِالْمَقَارِيضِ مَا عَلِمْتُ وَجَانِبِي
পৃষ্ঠা - ৮৮০৬
আর ডান পার্শ এমন অনুভুতি আছে যদি একটি মাছিও হেটে যায় তাও বুঝতে পারি।
তিনি অধিকাংশ সময় কিছু কবিতা পড়তেন যার অর্থ -
তুমি কি এ আশা কর যে, বৃদ্ধা বয়সে তুমি ঐ রকম থাকবে  ۞  যে রকম তুমি যুবক বয়সে ছিলে।
তাহলে নিশ্চিত তোমার নফস তোমাকে ধোকায় রাখিয়াছে  ۞  পুরাতন কাপড় নতুন কাপড়ের মত নয়।
এ বছর আরো মৃত্যু বরণ করেন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান আবূ মুহাম্মাদ আদ-দারেমী। প্রশিদ্ধ হাদীসের কিতাব মুসনাদে দারেমীর সংকলক। তিনি একজন মহান ব্যক্তি।
আব্দুল্লাহ ইবনে হাশেম আত-তুসী
এ বছর রজব মাসে খলীফা আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ মু’তায্য বিল্লাহ ইবনে জা’ফার আল-মুতাওয়াক্কিল আলাল আল্লাহ ইন্তেকাল করেন। যে আলোচনা ইতিপূর্বে চলে গেছে।
এ বছর আরো মারা যান মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রাহীম। যার ডাক নাম ছয়ী’কা।
মুহাম্মাদ ইবনে কাররাম। ধর্মতত্ববিদ ছিলেন। তার নাম থেকেই কাররামীয়্যাহ ফেরকার নামকরণ হয়েছে। তিনি নিজে হাদীস বানিয়ে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবা কেরাম ও অন্যদের নামে বর্ণনা করতেন।
الْأَيْمَنُ مُنْقَرَسٌ فَلَوْ مَرَّتْ بِهِ ذُبَابَةٌ لَأَلِمْتُ، وَبِي حَصَاةٌ وَأَشَدُّ مَا عَلَيَّ سِتٌّ وَتِسْعُونَ سَنَةً. وَكَانَ يُنْشِدُ: أَتَرْجُو أَنْ تَكُونَ وَأَنْتَ شَيْخٌ ... كَمَا قَدْ كُنْتَ أَيَّامَ الشَّبَابِ لَقَدْ كَذَبَتْكَ نَفْسُكَ لَيْسَ ثَوْبٌ ... دَرِيسٌ كَالْجَدِيدِ مِنَ الثِّيَابِ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو مُحَمَّدٍ الدَّارِمِيُّ، صَاحِبُ الْمُسْنَدِ الْمَشْهُورِ، وَقَدْ سَمِعْنَاهُ بِعُلُوٍّ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ الطُّوسِيُّ. وَالْخَلِيفَةُ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدٌ الْمُعْتَزُّ بِاللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ الْمُتَوَكِّلِ عَلَى اللَّهِ فِي رَجَبٍ - كَمَا تَقَدَّمَ - وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ الْمُلَقَّبُ صَاعِقَةَ. وَمُحَمَّدُ بْنُ كَرَّامٍ. الْمُتَكَلِّمُ الَّذِي تُنْسَبُ إِلَيْهِ الْفِرْقَةُ الْكَرَّامِيَّةُ. وَقَدْ نُسِبَ إِلَيْهِمْ جَوَازُ وَضْعِ الْأَحَادِيثِ عَلَى الرَّسُولِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابِهِ وَغَيْرِهِمْ ; وَهُوَ مُحَمَّدُ بْنُ كَرَّامٍ - بِفَتْحِ الْكَافِ وَتَشْدِيدِ الرَّاءِ، عَلَى وَزْنِ جَمَّالٍ - بْنِ
পৃষ্ঠা - ৮৮০৭
আরো মারা যান- ইরাক ইবনে হুঝাবাহ ইবনে বারা
আবূ আব্দুল্লাহ আস-সিজিসতানী আল-আবেদ। বলা হয় তিনি নিঝার বংশের ছিলেন।
মুহাম্মাদ ইবনে কেরাম। মুহাম্মাদ ইবনে কাররাম ও মুহাম্মাদ ইবনে কেরাম ভিন্ন ভিন্ন দু ব্যক্তি নাকি একই ব্যক্তি? এ বিষয়ে মতভেদ আছে। ইমাম বাইহাকী র. এর মতে ভিন্ন ভিন্ন দুই ব্যক্তি। দু নামের পার্থক্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন : একজন হলেন- মুহাম্মাদ ইবনে কাররাম, যার নাম থেকেই কাররামীয়্যাহ ফেরকার নামকরণ হয়েছে। যিনি বাইতুল মাকদিসে বসবাস করতেন। সেখানেই মৃত্যু বরণ করেছেন। অপর জন অর্থাৎ মুহাম্মাদ ইবনে কেরাম হলেন নায়সাবুর এলাকার বাসিন্দা। তবে হাকেম আবূ আব্দুল্লাহ ও হাফেয আবুল কাসেম ইবনে আসাকির প্রমুখ ঐতিহাসীদের মত থেকে বুঝা যায বিশুদ্ধ মত হল ভিন্ন ভিন্ন দুই ব্যক্তি নয় বরং একজন ব্যক্তিরই নাম।

মুহাম্মাদ ইবনে কাররাম এর উস্তাদগণ হলেন - আলী ইবনে হুজর, আলী ইবনে ইসহাক আল-হানযালী সমকানদী থেকে হাদীস বর্ণনা করেন। এবং তিনি মুহাম্মাদ ইবনে মারওয়ান থেকে তাফসির শুনেছেন আর তিনি কালবী থেকে শুনেছেন। তাছাড়া ইবরাহীম ইবনে ইউসুফ আল-মাকিয়ানী, মালেক ইবনে সুলাইমান আল-হারয়ী, আহমাদ ইবনে হারব, আ’তীক ইবনে মুহাম্মাদ আল-জুরশী, আহমাদ ইবনে আযহার নায়সাবুরী, আহমাদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল-জুয়াইবারী, মুহাম্মাদ ইবনে তামীম আল-ফারায়াবী থেকেও হাদীস বর্ণনা করেন। আহমাদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল-জুয়াইবারী, মুহাম্মাদ ইবনে তামীম আল-ফারায়াবী এই দুজন মিথ্যাবাদী ছিলেন এবং হাদীস বানিয়ে বর্ণনা করতেন।
عِرَاقِ بْنِ حُزَابَةَ بْنِ الْبَرَاءِ، أَبُو عَبْدِ اللَّهِ السِّجِسْتَانِيُّ الْعَابِدُ، يُقَالُ: إِنَّهُ مِنْ بَنِي نِزَارٍ. وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ: مُحَمَّدُ بْنُ كِرَامٍ - بِكَسْرِ الْكَافِ وَتَخْفِيفِ الرَّاءِ - جَمْعُ كَرِيمٍ. وَفَرَّقَ الْبَيْهَقِيُّ بَيْنَهُمَا، فَجَعَلَ الَّذِي يُنْسَبُ إِلَيْهِ الْكَرَّامِيَّةُ - بِفَتْحِ الْكَافِ وَتَشْدِيدِ الرَّاءِ - وَهُوَ الَّذِي سَكَنَ بَيْتَ الْمَقْدِسِ إِلَى أَنْ مَاتَ بِهَا، وَجَعَلَ الْآخَرَ شَيْخًا مِنْ أَهْلِ نَيْسَابُورَ. وَالصَّحِيحُ الَّذِي يَظْهَرُ مِنْ كَلَامِ الْحَاكِمِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الْحَاكِمِ، وَالْحَافِظِ أَبِي الْقَاسِمِ ابْنِ عَسَاكِرَ أَنَّهُمَا وَاحِدٌ. وَقَدْ رَوَى ابْنُ كَرَّامٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُجْرٍ وَعَلِيِّ بْنِ إِسْحَاقَ الْحَنْظَلِيِّ السَّمَرْقَنْدِيِّ، سَمِعَ مِنْهُ التَّفْسِيرَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ مَرْوَانَ عَنِ الْكَلْبِيِّ وَإِبْرَاهِيمَ بْنِ يُوسُفَ الْمَاكِيَانِيِّ وَمَالِكِ بْنِ سُلَيْمَانَ الْهَرَوِيِّ وَأَحْمَدَ بْنِ حَرْبٍ وَعَتِيقِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْجُرَشِيِّ وَأَحْمَدَ بْنِ الْأَزْهَرِ النَّيْسَابُورِيِّ وَأَحْمَدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْجُوَيْبَارِيِّ وَمُحَمَّدِ بْنِ تَمِيمٍ الْفَارَيَانِيِّ - وَكَانَا كَذَّابَيْنِ وَضَّاعَيْنِ - وَغَيْرِهِمْ.
পৃষ্ঠা - ৮৮০৮
আর তার থেকে মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইসহাক, আবূ ইসহাক ইবনে সুফিয়ান, আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আল-কিরাতী ও ইবরাহীম ইবনে হাজ্জাজ আন-নিসাবুরী আরো অনেকে রেওয়াত করেন।

ঐতিহাসীক হাকেম বর্ণনা করেন : তিনি তাহের ইবনে আব্দুল্লাহের বন্ধিখানায় বন্ধি ছিলেন। যখন তাকে মুক্তি দিলেন তখন তিনি শামের সিমান্ত এলাকায় চলে যায়। তারপর ঐখান থেকে আবার নায়সাবুরে ফিরে আসেন। তখন আবার মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ কয়েদখানায় বন্ধি করেন। দীর্ঘদিন তাকে বন্ধি করে রাখেন। একদিনের ঘটনা। তিনি জুমাআর নামাযের জন্য প্রস্তুতি নিলেন। তারপর তিনি কারারক্ষকের কাছে গিয়ে বললেন আমাকে ছেড়ে দেন আমি জুমাআর নামায পড়তে যাব। কিন্তু কারারক্ষক যেতে দেননি। তখন তিনি বললেন : হে আল্লাহ তুমি জান আমি নিজে জুমআর নামায ছেড়ে দিচ্ছি না। কারারক্ষক আমাকে যেতে দিচ্ছে না।

কেউ কেউ বলেন : তিনি বাইতুল মাকদিসে চার বছর অবস্থান করে ছিলেন। তিনি মাশহাদে ঈসা নামক খুটির পাশে ওয়াজ নসিহাতের মজলিস কায়েম করতেন। তার মজলিসে অনেক লোক জমা হত। কিন্তু যখন মানুষের কাছে তার আকীদা প্রকাশ পেল। তিনি আকীদা পেষণ করতেন যে, ইমান হল- আমল ছাড়া শুধু মাত্র মুখে কালেমা পড়ার নাম। আমলের কোন দরকার নেই। তখন মানুষ তার থেকে দুরে সরে গেল। বাইতুল মাকদিসের মুতাওয়াল্লি তাকে ঝুগারের নিম্ম এলাকায় নির্বাসিত করলেন। ঐখানেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর পর তার লাশ দাফনের জন্য বাইতুল মকদিসে আনা হয়। তিনি এ বছর ছফর মাসে ইন্তেকাল করেন।
হাকেম বর্ণনা করেন : তিনি রাতে বাইতুল মাকদিসে ইন্তেকাল করেন। তাকে নবীদের কবরের পাশে বাবে আরিহার নিকটে দাফন করা হয়। বাইতুল মাকদিসে তার প্রায় বিশ হাজার শাগরেদ ছিল। আল্লাহ তায়ালাই সবকিছু ভালো জানেন।
وَعَنْهُ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِسْحَاقَ وَأَبُو إِسْحَاقَ بْنُ سُفْيَانَ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْقِيرَاطِيُّ وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ الْحَجَّاجِ النَّيْسَابُورِيُّ. وَذَكَرَ الْحَاكِمُ: أَنَّهُ حُبِسَ فِي حَبْسِ طَاهِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، فَلَمَّا أَطْلَقَهُ ذَهَبَ إِلَى ثُغُورِ الشَّامِ ثُمَّ عَادَ إِلَى نَيْسَابُورَ فَحَبَسَهُ مُحَمَّدُ بْنُ طَاهِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ فَطَالَ حَبْسُهُ وَكَانَ يَتَأَهَّبُ لِصَلَاةِ الْجُمُعَةِ، وَيَأْتِي إِلَى السَّجَّانِ فَيَقُولُ: دَعْنِي أَخْرُجْ إِلَى الْجُمُعَةِ. فَيَمْنَعُهُ السَّجَّانُ، فَيَقُولُ: اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنَّ الْمَنْعَ مِنْ غَيْرِي. وَقَالَ غَيْرُهُ: أَقَامَ بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ أَرْبَعَ سِنِينَ، وَكَانَ يَجْلِسُ لِلْوَعْظِ عِنْدَ الْعَمُودِ الَّذِي عِنْدَ مَشْهَدِ عِيسَى عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَاجْتَمَعَ عَلَيْهِ خَلْقٌ كَثِيرٌ ثُمَّ تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ يَقُولُ: إِنَّ الْإِيمَانَ قَوْلٌ بِلَا عَمَلٍ. فَتَرَكَهُ أَهْلُهَا وَنَفَاهُ مُتَوَلِّيهَا إِلَى غَوْرِ زُغَرَ فَمَاتَ بِهَا، وَنُقِلَ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ وَكَانَتْ وَفَاتُهُ فِي صَفَرٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ. وَقَالَ الْحَاكِمُ: تُوُفِّيَ بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ لَيْلًا وَدُفِنَ بِبَابِ أَرِيحَا عِنْدَ قُبُورِ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ، وَلَهُ بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ مِنَ الْأَصْحَابِ نَحْوٌ مِنْ عِشْرِينَ أَلْفًا. وَاللَّهُ أَعْلَمُ.