আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

سنة إحدى وخمسين ومائتين

পৃষ্ঠা - ৮৭৭১
[ হিজরি ২৫১ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এর পর ২৫১ হিজরী শুরু হল।

মুস্তাইন, বুগা ও ওছিফ তিন জন বাগরে তুর্কী কে হত্যার পরিকল্পনা করেন। মুতাওয়াক্কীলের হত্যাকারীদের বড় নেতা ছিলেন উনি। উনার বিস্তৃত জমিদারীর ছিল। অনেক কর্মচারী। পরিকল্পনা মত তাকে হত্যা করে। তারপর তার কাতেবের ঘর লুট করে। বাগের তুর্কীর সমস্ত ধন সম্পদ লুট করে।

এর পর খলিফা দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে সামারা থেকে বাগদাদে চলে আসেন। তিনি চলে যাওয়ায় প্রশাসনে বিশৃঙখলা সৃষ্টি হয়। এটা মহরম মাসের ঘটনা। খলিফা বাগদাদে পৌছে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের বাড়িতে অবস্থান নেন।

এই বছরে বাগদাদ ও সামারাতে সৈন্যদের মধ্যে বড় ফেতনা সৃষ্টি হয়। সামারাবাসী মু’তায্যের হাতে বায়াত গ্রহন করার দাওয়াত দেয়। ওদিকে বাগদাদের অধিবাসীরা মুস্তাইনের খেলাফাতের উপর অটল থাকে।

মু’তায্য ও তার ভাই মুআইয়্যাদ কে জেলখানা থেকে বের করে সামারাবাসী মু’তায্যের হাতে বায়াত গ্রহন করে। এবং বাইতুল মাল দখল করে নেয়। বাতুলমালে তখন পাচ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা ছিল। আর মুস্তাইনের মায়ের দশ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা এবং তার ছেলে আব্বাস ইবনে মুস্তাইনের ছয় লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা জমা ছিল। এ দিয়ে সামারায় মু’তায্যের ক্ষমতা মজবুত হয়।

মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরকে বাগদাদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শহরের দুই প্রচির ও পরিখাকে মেরামতের নির্দেশ দেন মুস্তাইন। এ জন্য তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার দিনার বরাদ্ধ করেন। আর শহর হেফাজতের জন্য সব গেটে পাহারাদার নিযুক্ত করেন। প্রাচিরসমূহের উপর পাঁচটি মিনজানিক স্থাপন করেন। যার একটা অনেক বড় ছিল। যেটার নাম ছিল গযবান (রাগন্বিত / ক্ষিপ্ত)।
[سَنَةُ إِحْدَى وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ إِحْدَى وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِيهَا اجْتَمَعَ رَأْيُ الْمُسْتَعِينِ وَبُغَا الصَّغِيرِ وَوَصِيفٍ عَلَى قَتْلِ بَاغِرَ التُّرْكِيِّ وَكَانَ مِنَ الْقُوَّادِ الْكِبَارِ الَّذِينَ بَاشَرُوا قَتْلَ الْمُتَوَكِّلِ، وَقَدِ اتَّسَعَ إِقْطَاعُهُ، وَكَثُرَتْ أَعْمَالُهُ فَقُتِلَ وَنُهِبَتْ دَارُ كَاتِبِهِ دَلِيلِ بْنِ يَعْقُوبَ النَّصْرَانِيِّ، وَنُهِبَتْ أَمْوَالُهُ وَحَوَاصِلُهُ، فَرَكِبَ الْخَلِيفَةُ فِي حَرَّاقَةِ مَنْ سَامَرَّا إِلَى بَغْدَادَ ; فَاضْطَرَبَتِ الْأُمُورُ بِسَبَبِ خُرُوجِهِ إِلَيْهَا، وَذَلِكَ فِي خَامِسِ الْمُحَرَّمِ، فَنَزَلَ الْخَلِيفَةُ دَارَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ. وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ وَقَعَتْ فِتْنَةٌ شَنْعَاءُ بَيْنَ جُنْدِ بَغْدَادَ وَجُنْدِ سَامَرَّا، وَدَعَا أَهْلُ سَامَرَّا إِلَى بَيْعَةِ الْمُعْتَزِّ، وَاسْتَقَرَّ أَمْرُ أَهْلِ بَغْدَادَ عَلَى الْمُسْتَعِينِ، وَأُخْرِجَ الْمُعْتَزُّ وَأَخُوهُ الْمُؤَيَّدُ مِنَ السِّجْنِ فَبَايَعَ أَهْلُ سَامَرَّا الْمُعْتَزَّ، وَاسْتَحْوَذَ عَلَى حَوَاصِلَ بَيْتِ الْمَالِ بِهَا ; فَإِذَا بِهَا خَمْسُمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَفِي خِزَانَةِ أَمِّ الْمُسْتَعِينِ أَلْفُ أَلْفُ دِينَارٍ، وَفِي حَوَاصِلِ الْعَبَّاسِ ابْنِ الْمُسْتَعِينِ سِتُّمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَاسْتَفْحَلَ أَمْرُ الْمُعْتَزِّ بِسَامَرَّا، وَأَمَرَ الْمُسْتَعِينُ لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ أَنْ يُحَصِّنَ بَغْدَادَ وَيَعْمَلَ فِي السُّورَيْنِ وَالْخَنْدَقِ، وَغَرِمَ عَلَى ذَلِكَ ثَلَاثَمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ وَثَلَاثِينَ أَلْفَ دِينَارٍ، وَوَكَّلَ بِكُلِّ بَابٍ أَمِيرًا يَحْفَظُهُ، وَنَصَبَ عَلَى السُّورِ خَمْسَةَ مَجَانِيقَ، مِنْهَا وَاحِدٌ كَبِيرٌ جِدًّا
পৃষ্ঠা - ৮৭৭২
এবং ছয়টা পাথর নিক্ষেপ করার যন্ত্র (প্রচিন কালের বিশেষ যুদ্ধাস্ত্র) স্থাপন করেন।যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষার সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করেন। এবং জনবল তৈরি করতে থকেন। আর শহরের চারপাশের সেতু ভেঙ্গে দেন। যাতে শত্রুবাহিনী শহরে পৌছাতে না পারে।

এ সময় মু’তায্য মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের কাছে চিঠি পাঠান এবং তার সাথে মিলিত হতে বলেন। চিঠিতে তার পিতা মুতাওয়াক্কিল তাদের থেকে যে ওয়াদা অঙ্গিকার নিয়েছিল তা স্বরণ করান। তা হল আমার পর মু’তায্য খলিফা হবে। কিন্তু মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ এদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করেন নাই। বরং তার বিপরিত বিভিন্ন অযৌক্তিক অযুহাত খাড়া করেন। যা এখানে আলোচনা করলে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে।

মুস্তাইন ও মু’তায্য প্রত্যেকেই মুসা ইবনে বুগা কাবীরের কাছে চিঠি লিখল। প্রত্যেকেই তার নিজের সাথে মিলিত হওয়ার আহবান জানল। ঐ সময় তিনি শামের এক এলাকায় ছিলেন, হিমসের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। মু’তায্য তার কাছে কিছু ঝান্ড পাঠাল তার সাথি সঙ্গির মধ্যে যাকে ইচ্ছা দেওয়ার জন্য। আর মুস্তাইন লিখল যে, সে বাগদাদে তার কাছে আসলে উনি তাকে তার সহকারীর পদে নিয়োগ দিবে।

কিন্তু মুস ইবনে বুগা কবীর দ্রুত সফর করে সামাররায় চলে আসেন। এবং সে মুস্তাইনের বিপক্ষ হয়ে মু’তায্যের সাথে মিলে যান। অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ বুগা ছগীর বাগদাদে তার পিতার কাছ থেকে পালায়ে সামাররায় এসে মু’তায্যের সাথে মিলিত হন। উনি ছাড়াও আরো অনেক আমীর ও তুর্কী অধিবাসী মু’তায্যের সাথে মিলিত হয়।

মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের নেতৃত্বে একটি বাহিনী মুস্তাইনের সাথে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানোর সিন্ধান্ত নেন। সেজন্য সৈন্য-সামান্ত প্রস্তুত করে দেন। আবূ আহমাদ পঞ্চাশ হাজার তুর্কী ও অন্যান্য সৈন্য নিয়ে বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওনা হন। উকবারা নামক স্থানে পৌছে জুমার নামায পড়েন এবং তার ভাই মু’তায্যের জন্য দুআ করেন। অতঃপর তিনি সফরের সাত তারিখ রবিবার রাতে বাগদাদে পৌছেন। ওখানেও এক বড় বাহিনীও তার সাথে মিলিত হয়। ঐস্থানে আবূ আহমাদের সৈন্য বাহিনীর এক লোক যার নাম বাযেনজানা কিছু কবিতা আবৃতি করেন।
يُقَالُ لَهُ: الْغَضْبَانُ. وَسِتَّ عَرَّادَاتٍ، وَأَعَدُّوا آلَاتِ الْحَرْبِ وَالْحِصَارِ وَالْعُدَدَ وَقُطِعَتِ الْقَنَاطِرُ مِنْ كُلِّ نَاحِيَةٍ ; لِئَلَّا يَصِلَ الْجَيْشُ إِلَيْهِمْ. وَكَتَبَ الْمُعْتَزُّ إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ يَدْعُوهُ إِلَى الدُّخُولِ مَعَهُ فِي أَمْرِهِ، وَيُذَكِّرُهُ مَا كَانَ أَخَذَهُ عَلَيْهِمْ أَبُوهُ الْمُتَوَكِّلُ مِنَ الْعُهُودِ وَالْمَوَاثِيقِ أَنْ تَكُونَ الْخِلَافَةُ بَعْدَ الْمُنْتَصِرِ لَهُ، فَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَيْهِ بَلْ رَدَّ عَلَيْهِ، وَاحْتَجَّ بِحُجَجٍ يَطُولُ ذِكْرُهَا. وَكَتَبَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنَ الْمُسْتَعِينِ وَالْمُعْتَزِّ إِلَى مُوسَى بْنِ بُغَا الْكَبِيرِ وَهُوَ مُقِيمٌ بِأَطْرَافِ الشَّامِ لِحَرْبِ أَهْلِ حِمْصَ يَدْعُوهُ إِلَى نَفْسِهِ، وَبَعَثَ إِلَيْهِ بِأَلْوِيَةٍ يَعْقِدُهَا لِمَنِ اخْتَارَ مِنْ أَصْحَابِهِ، وَكَتَبَ إِلَيْهِ الْمُسْتَعِينُ يَأْمُرُهُ بِالْمَسِيرِ إِلَيْهِ إِلَى بَغْدَادَ وَيَأْمُرُهُ أَنْ يَسْتَنِيبَ فِي عَمَلِهِ، فَرَكِبَ مُسْرِعًا فَسَارَ إِلَى سَامَرَّا فَكَانَ مَعَ الْمُعْتَزِّ عَلَى الْمُسْتَعِينِ، وَكَذَلِكَ هَرَبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُغَا الصَّغِيرِ مِنْ عِنْدِ أَبِيهِ، مِنْ بَغْدَادَ إِلَى سَامَرَّا، وَكَذَلِكَ غَيْرُهُ مِنَ الْأُمَرَاءِ وَالْأَتْرَاكِ. وَعَقَدَ الْمُعْتَزُّ لِأَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ عَلَى حَرْبِ الْمُسْتَعِينِ، وَجَهَّزَ مَعَهُ جَيْشًا لِذَلِكَ، فَسَارَ فِي خَمْسَةِ آلَافٍ مِنَ الْأَتْرَاكِ وَغَيْرِهِمْ نَحْوَ بَغْدَادَ وَصَلَّى بِعُكْبَرَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَدَعَا لِأَخِيهِ الْمُعْتَزِّ، ثُمَّ وَصَلَ إِلَى بَغْدَادَ لَيْلَةَ الْأَحَدِ لِسَبْعٍ خَلَوْنَ مِنْ صَفَرٍ فَاجْتَمَعَتِ الْعَسَاكِرُ هُنَالِكَ، وَقَدْ قَالَ رَجُلٌ يُقَالُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৩
হে তাহেরের বংশধর আল্লাহর সৈন্য বহিনী তোমাদের কাছে এসেছে এদের ভয় কর।    কারণ মৃত্যুকে তারা ভয় করে না।
এই সৈন্য বাহিনীর মোকাবেলা কর না। যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবূ আহমাদ।    যিনি ভালো বন্ধু ও বড় সাহয্যকারী

তারপরে উভয় গ্রুফের মাঝে ভিষণ যুদ্ধ চলতে লাগল। অনেক ভয়ংকার অবস্থা সৃষ্টি হয়। যা ইবনে জারির  তার প্রশিদ্ধ কিতাব তারিখে তাবারিতে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

অতঃপর মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের সাহায্যের জন্য মূসা ইবনে আশনানের নেতৃত্বে  তিন হাজার সৈন্য পাঠান। তারা রবিউল আউয়াল মাসের শেষ দিন রাতে গিয়ে পৌছল। তারা সেখানে গিয়ে শহরের পশ্চিম পাশে বাবে কুতরাব্বুল (শহরে প্রবেশের একটা গেটের নাম) এর সামনে অবস্থান নিল। আর আবূ আহমাদ ও তার সঙ্গীগণ বাবে শাম্মাসিয়া (শহরের আরেকটি গেট) এর সামনে অবস্থান নিল। এ সময় তুমুল বেগে লড়াই চলছিল। বহু মানুষ মরতে লাগল।

যুদ্ধের অবস্থা বর্ণনা করার সময় ইবনে যারির লেখেন : মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের চিঠি লিখল। চিঠিতে বাগদাদবাসীদের সাথে লাড়ায়ের ক্ষেত্রে অবহেলার উপর ভাইকে তিরষ্কার করেন। চিঠির জবাবে আহমাদ নিচের কবিতাগুলো লিখল।

আমাদের কাছে মৃত্যু আসার একটাই রাস্তা  ۞  যামানা কখনো আমাদের অনুকুলে কখনো আবার প্রতিকুলে যায়।
আমাদের দিনগুলো লোকের জন্য শিক্ষনীয় থাকবে  ۞  যার কিছু বিপদ সকালের আসে কিছু রাতে।
যার কিছু মুসিবত এমন যা বাচ্চাকে বুড়ো বানায়  ۞  আর কিছু এমন যে কারণে এক বন্ধু অপর বন্ধুকে ফেলে রেখে যায়।
অনেক প্রশস্ত প্রাচির যার চূড়া এত উচু  ۞  আমাদের নজর সে পর্যন্ত পৌছে না এবং এক গভীর সমুদ্রও আছে।
ধংশকারী যুদ্ধ এবং প্রস্তুতকৃত এক তলোয়ার  ۞  বড় ভয়ংকার ও মজবুত দুর্গ
لَهُ: بَاذِنْجَانَةُ. كَانَ فِي عَسْكَرِ أَبِي أَحْمَدَ: يَا بَنِي طَاهِرٍ أَتَتْكُمْ جُنُودُ اللَّهِ ... وَالْمَوْتُ بَيْنَهَا مَنْثُورُ وَجُيُوشٌ أَمَامَهُنَّ أَبُو أَحْ ... مَدَ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ ثُمَّ جَرَتْ بَيْنَهُمَا حُرُوبٌ طَوِيلَةٌ وَفِتَنٌ مَهُولَةٌ جِدًّا قَدْ ذَكَرَهَا ابْنُ جَرِيرٍ مُطَوَّلَةً ثُمَّ بَعَثَ الْمُعْتَزُّ مَعَ مُوسَى بْنِ أَشْنَاسَ ثَلَاثَةَ آلَافٍ مَدَدًا لِأَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ، فَوَصَلُوا لِلَيْلَةٍ بَقِيَتْ مِنْ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ، فَوَقَفُوا فِي الْجَانِبِ الْغَرْبِيِّ عِنْدَ بَابِ قُطْرَبُّلَ، وَأَبُو أَحْمَدَ وَأَصْحَابُهُ عَلَى بَابِ الشَّمَّاسِيَّةِ، وَالْحَرْبُ مُسْتَعِرَةٌ، وَالْقِتَالُ كَثِيرٌ، وَالْقَتْلُ وَاقِعٌ. قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَذُكِرَ أَنَّ الْمُعْتَزَّ كَتَبَ إِلَى أَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ يَلُومُهُ عَلَى التَّقْصِيرِ فِي قِتَالِ أَهْلِ بَغْدَادَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ أَبُو أَحْمَدَ: لِأَمْرِ الْمَنَايَا عَلَيْنَا طَرِيقُ ... وَلِلدَّهْرِ فِينَا اتِّسَاعٌ وَضِيقُ فَأَيَّامُنَا عِبَرٌ لِلَأَنَامِ ... فَمِنْهَا الْبُكُورُ وَمِنْهَا الطَّرُوقُ وَمِنْهَا هَنَاتٌ تُشِيبُ الْوَلِيدَ ... وَيَخْذُلُ فِيهَا الصَّدِيقَ الصَّدِيقُ وَسُورٌ عَرِيضٌ لَهُ ذِرْوَةٌ ... تَفُوتُ الْعُيُونَ وَبَحْرٌ عَمِيقُ قِتَالٌ مُبِيدٌ وَسَيْفٌ عَتِيدٌ ... وَخَوْفٌ شَدِيدٌ وَحِصْنٌ وَثِيقُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৪
সকালে আহবানকারীর অনেক জোরে চিৎকার  ۞  হাতিয়ার হাতিয়ার বলে, কিন্তু তাতে কোন উপকার হচ্ছে না।
কেউ জমিনে পড়ে আছে, কেউ আহাত   ۞  কেউ আগুনে জ্বলছে আর কেউ সাগরে ডুবছে।
কেউ মরে পড়ে আছে আর কেউ বেহুশ হয়ে আছে  ۞  আবার কাউকে মিনজানিকের আঘাতে অঙ্গ প্রতঙ্গ ভেঙ্গে চুর্ণ বিচুর্ণ হয়েছে।
এখানে বেশি বেশি জবরদস্তি হয় এবং লুট করা হয়  ۞  এ এক বিরাণ ঘর বাড়ি যা মানুষ কে খুশি করে।
যখন আমরা কোন রাস্তায় চলতে থকি  ۞  একটু পরে দেখি সামনের রাস্তা বন্ধ।
আল্লাহরই সাহায্যে আমরা আমদের লক্ষ্যে পৌছব  ۞  আল্লাহরই সাহায্যেই দুঃসাধ্য বিষয় অর্জন করে বিজয় আনব।

ইবনে জারির বলেন : এ সমস্ত কবিতা আলী ইবনে উমাইয়ার রচিত। যা তিনি মাখলু ও মামুনের ফেতনার সময় আবৃতি করেন।

বাগদাদে আবূ আহমাদ ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের গ্রুফের মাঝে ফেতনা ফাসাদ এবং যুদ্ধ চলতে থাকল। সমস্ত শহর আবূ আহমাদ ঘেরাও করে রাখল। ঐ বছরের বাকি দিনগুলোতে বাগদাদের অধিবাসীরা কঠিন মসিবতে পড়েন। এ দুর্যোগপূর্ণ দিনসমূহে বিভিন্ন হামলায় উভয় গ্রুফের অনেক লোক মারা যায়। কখনো আবূ আহমাদ প্রাধান্যতা লাভ করেন। ফলে শহরের কিছু ফটক দখল করেন। আবার মুহাম্মাদ তাদের উপর হামল করে তাদের কে তাড়িয়ে দেন। অনেক লোককেও হত্যা করেন। তারপর নিজেদের জায়গায় ফিরে আসেন। এরপর কিছু সময় যুদ্ধ বিরত রাখেন।

কিন্তু কখনো কখনো বাগদাদে খাদ্য ও অন্যান্য আসবাবপত্রের আমদানী কমে যাচ্ছিল। তখন বাগদাদবাসীগণ কাপুরুষতার শিকার হচ্ছিল। অতঃপর জনসাধারণ মধ্যে এক কথা ছড়িয়ে গেল যে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ মুস্তাইন কে ছেড়ে মু’তায্যের হাতে বয়াত হওয়ার ইচ্ছা করছে। এটা বছরের শেষের দিকের অবস্থা। কিন্তু মুহাম্মাদ এ বিষয় অস্বীকার করল। খলিফা ও সারধারণ জনতার সামনে ওজর পেশ করল।
وَطُولُ صِيَاحٍ لِدَاعِي الصَّبَاحِ ... السِّلَاحَ السِّلَاحَ فَمَا يَسْتَفِيقُ فَهَذَا طَرِيحٌ وَهَذَا جَرِيحٌ ... وَهَذَا حَرِيقٌ وَهَذَا غَرِيقُ وَهَذَا قَتِيلٌ وَهَذَا تَلِيلٌ ... وَآخَرُ يَشْدُخُهُ الْمِنْجَنِيقُ هُنَاكَ اغْتِصَابٌ وَثَمَّ انْتِهَابٌ ... وَدُورٌ خَرَابٌ وَكَانَتْ تَرُوقُ إِذَا مَا سَمَوْنَا إِلَى مَسْلَكٍ ... وَجَدْنَاهُ قَدْ سُدَّ عَنَّا الطَّرِيقُ فَبِاللَّهِ نَبْلُغُ مَا نَرْتَجِيهِ ... وَبِاللَّهِ نَدْفَعُ مَا لَا نُطِيقُ قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: هَذَا الشِّعْرُ يُنْشَدُ لِعَلِيِّ بْنِ أُمَيَّةَ فِي فِتْنَةِ الْمَخْلُوعِ وَالْمَأْمُونِ. وَقَدِ اسْتَمَرَّتِ الْفِتْنَةُ وَالْقِتَالُ بِبَغْدَادَ بَيْنَ أَبِي أَحْمَدَ أَخِي الْمُعْتَزِّ وَبَيْنَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نَائِبِ الْمُسْتَعِينِ، وَالْبَلَدُ مَحْصُورٌ وَأَهْلُهُ فِي ضِيقٍ شَدِيدٍ جِدًّا بَقِيَّةَ شُهُورِ هَذِهِ السَّنَةِ، وَقُتِلَ مِنَ الْفَرِيقَيْنِ خَلْقٌ كَثِيرٌ فِي وَقَعَاتٍ مُتَعَدِّدَاتٍ، وَأَيَّامٍ نَحِسَاتٍ ; فَتَارَةً يَظْهَرُ أَصْحَابُ أَبِي أَحْمَدَ، وَيَأْخُذُونَ بَعْضَ الْأَبْوَابِ، فَتَحْمِلُ عَلَيْهِمُ الطَّاهِرِيَّةُ فَيُزِيحُونَهُمْ عَنْهَا، وَيَقْتُلُونَ مِنْهُمْ خَلْقًا، ثُمَّ يَتَرَاجَعُونَ إِلَى مَوَاقِفِهِمْ وَيُصَابِرُونَهُمْ مُصَابَرَةً عَظِيمَةً، لَكِنَّ أَهْلَ بَغْدَادَ كُلُّ مَا لَهُمْ إِلَى ضَعْفٍ بِسَبَبِ قِلَّةِ الْمِيرَةِ وَالْجَلَبِ إِلَى دَاخِلِ الْبَلَدِ. ثُمَّ شَاعَ بَيْنَ الْعَامَّةِ أَنْ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ يُرِيدُ أَنْ يَخْلَعَ الْمُسْتَعِينَ وَيُبَايِعَ لِلْمُعْتَزِّ، وَذَلِكَ فِي أَوَاخِرَ السَّنَةِ، فَتَنَصَّلَ مِنْ ذَلِكَ، وَاعْتَذَرَ إِلَى
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৫
এ বিষয়ে বিভিন্নভাবে কসম করতে থাকেন। তারপরেও জনসাধারণের মধ্যে সন্দেহ সংশয় থেকেই গেল। এক সময় জনসাধারণের বড় এক দল মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ির সামনে  একত্রিত হয়ে শোরগোল করতে লাগল। ঐ সময় খলিফাও সেখানে ছিল। তখন মানুষ চাইল খলিফা যেন মানুষের সম্মুখে আসেন। তারা খলিফাকে দেখবেন এবং মুহাম্মাদ সম্মর্কে মতামত জিজ্ঞাসা করবেন। আস্তে আস্তে মানুষের শোরগোল বাড়তে লাগল। অবশেষে খলিফা জনসম্মুখে বের হলেন। তখন তিনি কালো কাপড় পরে ছিলেন এবং তার উপরে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটা চাদর ছিল। আর হাতে একটা লাঠি ছিল।

তিনি জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি তোমাদের কে এই চাদর ও লাঠি ওয়ালার কসম দিয়ে বলতেছি যে, তোমরা বাড়ি ফিরে যাও। ইবনে আবূ তাহেরের ব্যাপারে শান্ত হও। কারণ সে আমার নিকট নিরাপরাধ ব্যক্তি। তখন শোরগোল শেষ হয়ে গেল। সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেল।

অতঃপর জিলহজ্জ শুরুর দিকে খলিফা ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ি থেকে বের হয়ে রিজ্ক আল খাদেরমের বাড়িতে গেলেন। সেখানে এক দ্বীপে ঈদুল আযহার নামায পড়ালেন। যে দ্বীপটা ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ির বিপরিত দিকে অসস্থিত। ঐ দিন খলিফা মানুষের সামনে আসলেন। তখন তাঁর সামনে বল্লম গায়ে নববী চাদর হাতে লাঠি ছিল। ঐ দিন বাগদাদের অধিবাসীদের জন্য এক স্বরণীয় দিন ছিল। কারণ তারা চারিদিক থেকে বেষ্টিত ছিল এবং সমস্ত জিনিসের চড়া দাম ছিল। যে অবস্থার প্রকাশ হয়েছে ক্ষুধা ও ভয়ের পোশাকে।
আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে সকলে সুস্থতা দান করুক।

যখন যুদ্ধের বিষয় আরো বিপদজনক হল। মানুষের অবস্থা আরো গুরুতর ও সংকির্ণ হল। পরিবার ক্ষুধার্ত থাকতে লাগল। সবাই পেরেশান হয়ে গেল। তখন ইবনে তাহের মুসতাইনের পদচ্যুতির যে ইচ্ছা মনের ভিতর গোপন রেখেছিল প্রথমে তা ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ করেন। পরে প্রকাশ্যে স্পষ্টভাবে বলতে লাগলেন। এমনকি খলিফা মুস্তাইনের সাথে বাগবিতান্ডও করতে লাগলেন। খলিফা কে বলতে লাগলেন এ অবস্থায় আপনার জন্য উচিৎ হল কিছু নগদ ও কিছু বাকি মালের বিনিময়ে খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি গ্রহন করেন। এ মর্মে তাদের সাথে সমঝোতা করেন। আর প্রত্যেক বছর আপনার প্রয়োজন পুরনের জন্য একটা ভাতা নির্ধারণ করে নেন। ইবনে তাহের তার এ চেষ্টা অব্যহত রাখেন।
الْخَلِيفَةِ وَإِلَى الْعَامَّةِ، وَحَلَفَ بِالْأَيْمَانِ الْغَلِيظَةِ، فَلَمْ تَبْرَأْ سَاحَتُهُ مِنْ ذَلِكَ حَقَّ الْبَرَاءَةِ عِنْدَ الْعَامَّةِ، وَاجْتَمَعَتِ الْعَامَّةُ وَالْغَوْغَاءُ إِلَى دَارِ ابْنِ طَاهِرٍ، وَالْخَلِيفَةُ نَازِلٌ بِهَا، فَسَأَلُوا أَنْ يُبْرِزَ لَهُمُ الْخَلِيفَةَ لِيَرَوْهُ وَيَسْأَلُوهُ عَنِ ابْنِ طَاهِرٍ ; أَهْوَ رَاضٍ عَنْهُ أَمْ لَا؟ وَمَا زَالَتِ الضَّجَّةُ وَالْأَصْوَاتُ مُرْتَفِعَةً حَتَّى بَرَزَ الْخَلِيفَةُ مِنْ فَوْقِ الْمَكَانِ الَّذِي هُمْ فِيهِ، وَعَلَيْهِ السَّوَادُ وَمِنْ فَوْقِهِ الْبُرْدَةُ النَّبَوِيَّةُ، وَبِيَدِهِ الْقَضِيبُ، وَقَالَ لَهُمْ فِيمَا خَاطَبَهُمْ بِهِ: أَقْسَمْتُ عَلَيْكُمْ بِحَقٍّ صَاحِبِ هَذِهِ الْبُرْدَةِ وَالْقَضِيبِ لَمَا رَجَعْتُمْ إِلَى مَنَازِلِكُمْ، وَرَضِيتُمْ عَنِ ابْنِ طَاهِرٍ ; فَإِنَّهُ غَيْرُ مُتَّهَمٍ لَدَيَّ. فَسَكَتَ الْغَوْغَاءُ وَرَجَعُوا إِلَى مَنَازِلِهِمْ ثُمَّ انْتَقَلَ الْخَلِيفَةُ مِنْ دَارِ ابْنِ طَاهِرٍ إِلَى دَارِ رِزْقٍ الْخَادِمِ، وَذَلِكَ فِي أَوَائِلِ شَهْرِ ذِي الْحِجَّةِ وَصَلَّى بِهِمُ الْعِيدَ يَوْمَ الْأَضْحَى فِي الْجَزِيرَةِ الَّتِي بِحِذَاءِ دَارَ ابْنِ طَاهِرٍ، وَبَرَزَ الْخَلِيفَةُ يَوْمَئِذٍ لِلنَّاسِ، وَبَيْنَ يَدَيْهِ الْحَرْبَةُ، وَعَلَيْهِ الْبُرْدَةُ، وَبِيَدِهِ الْقَضِيبُ، وَكَانَ يَوْمًا مَشْهُودًا بِبَغْدَادَ عَلَى مَا بِأَهْلِهَا مِنَ الْحِصَارِ، وَغَلَاءِ الْأَسْعَارِ الْمُتَرْجَمَيْنِ عَنْ لِبَاسِ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ، نَسْأَلُ اللَّهَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ. وَلَمَّا تَفَاقَمَ الْأَمْرُ، وَاشْتَدَّ الْحَالُ وَضَاقَ الْمَجَالُ، وَجَاعَ الْعِيَالُ، وَجَهِدَ الرِّجَالُ شَرَعَ ابْنُ طَاهِرٍ يُظْهِرُ مَا كَانَ كَامِنًا فِي نَفْسِهِ مِنْ خَلْعِ الْمُسْتَعِينِ، فَجَعَلَ يُعَرِّضُ لَهُ بِذَلِكَ وَلَا يُصَرِّحُ ثُمَّ كَاشَفَهُ بِهِ وَأَظْهَرَهُ لَهُ، وَنَاظَرَهُ فِيهِ، وَقَالَ لَهُ: إِنَّ الْمَصْلَحَةَ تَقْتَضِي أَنْ تُصَالِحَ عَنِ الْخِلَافَةِ عَلَى مَالٍ تَأْخُذُهُ سَلَفًا، وَتَعْجِيلًا، وَأَنْ يَكُونَ لَكَ مِنَ الْخَرَاجِ فِي كُلِّ عَامٍ مَا تَخْتَارُهُ وَتَحْتَاجُهُ. وَلَمْ يَزَلْ يَفْتِلُ فِي الذِّرْوَةِ،
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৬
অবশেষে খলিফা এ প্রস্তাব মানার জন্য তৈরি হয়ে যান। তখন খলিফা মুস্তাইন খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার জন্য যে শর্ত দেন তা একটি কাগজে লেখেন। অতঃপর জিলহজ্জ মাসের বিশ তারিখ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের রসাফা নামক স্থানে যান। কাজী ও বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামদের একত্রিত করেন। তাদেরকে দলে দলে মুস্তাইনের নিকট নিয়ে আসেন। যাতে তারা সাক্ষী থাকে যে খলিফা তাঁর নিজের সমস্ত বিষয় মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের উপর ন্যাস্ত করেছেন। অনুরূপভাবে খাদেম ও অন্যান্য কর্মচারীদের এক জামাতকেও সাক্ষী বানানোর জন্য নিয়ে আসেন। এরপর খেলাফাতের মোহরও নিয়ে নেন। এবং মুস্তাইনের কাছে রাতের অনেক সময় পর্যন্ত বসে থাকেন। তারপর যখন সকাল হল মানুষ তার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে লাগলেন।

অপরদিকে ইবনে তাহের ঐ চুক্তিপত্রের কাগজ আমীর-ওমারাদের এক জামাতের মাধ্যমে সামাররা এলাকায় মু’তায্যের কাছে পাঠান। যখন ঐ আমীর-ওমারাগণ তাঁর কছে পৌঁছে তখন তিনি তাদের অনেক ইজ্জত সম্মান করেন। আর অনেক দামী দামী বিভিন্ন হাদিয়া তোহফা দেন।

এ বিষয়ের বাকি কথা পরবর্তী বছরের আলোচনার শুরুতে আসছে।

এ বছরের রবিউল আওয়াল মাসে কজবিন ও ঝানজান নামক স্থানে আহলে বাইতের আরেক জনের আত্মপ্রকাশ হয়। যার নাম হুসাইন ইবনে আহমাদ ইবনে ইসমাইল ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল আরকাত ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। যিনি আল-কাওকাবী নামে প্রশিদ্ধ ছিল। তার সম্পর্কে আরো কথা পরে আলোচনায় আসবে।

এবছরে ইসমাইল ইবনে আলাবী আত্মপ্রকাশ করেন। যিনি মুসা ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাসানীর ভাগিন ছিলেন। তার বিষয়ের আলোচনাও সামনে আসবে।
وَالْغَارِبِ حَتَّى أَجَابَ إِلَى ذَلِكَ وَأَنَابَ. فَكَتَبَ بِمَا اشْتَرَطَهُ الْمُسْتَعِينُ فِي خَلْعِهِ نَفْسَهُ مِنَ الْخِلَافَةِ كِتَابًا. فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ السَّبْتِ لِعَشَرٍ بَقِينَ مِنْ ذِي الْحِجَّةِ رَكِبَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ إِلَى الرُّصَافَةِ، وَجَمَعَ الْقُضَاةَ وَالْفُقَهَاءَ، وَأَدْخَلَهُمْ عَلَى الْمُسْتَعِينِ فَوْجًا فَوْجًا يَشْهَدُونَ عَلَيْهِ أَنَّهُ قَدْ صَيَّرَ أَمْرَهُ إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ، وَكَذَلِكَ جَمَاعَةُ الْحُجَّابِ وَالْخَدَمِ ثُمَّ تَسَلَّمَ مِنْهُ جَوْهَرَ الْخِلَافَةِ، وَأَقَامَ عِنْدَ الْمُسْتَعِينِ إِلَى هَوِيٍّ مِنَ اللَّيْلِ، وَأَصْبَحَ النَّاسُ يَذْكُرُونَ، وَيَتَنَوَّعُونَ فِيمَا يَقُولُونَ مِنَ الْأَرَاجِيفِ، وَأَمَّا ابْنُ طَاهِرٍ، فَإِنَّهُ أَرْسَلَ بِالْكِتَابِ مَعَ جَمَاعَةٍ مِنَ الْأُمَرَاءِ إِلَى الْمُعْتَزِّ بِسَامَرَّا فَلَمَّا قَدِمُوا عَلَيْهِ بِذَلِكَ أَكْرَمَهُمْ، وَخَلَعَ عَلَيْهِمْ، وَأَجَازَهُمْ فَأَسْنَى جَوَائِزَهُمْ، وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ أَوَّلَ السَّنَةِ الدَّاخِلَةِ. وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ فِي رَبِيعٍ الْأَوَّلِ مِنْهَا كَانَ ظُهُورُ رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ أَيْضًا بِأَرْضِ قَزْوِينَ وَزَنْجَانَ ; وَهُوَ الْحُسَيْنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْأَرْقَطِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، وَيُعْرَفُ بِالْكَوْكَبِيِّ، وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ هُنَاكَ. وَفِيهَا خَرَجَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ الْعَلَوِيُّ، وَهُوَ ابْنُ أُخْتِ مُوسَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْحَسَنِيِّ. وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ أَيْضًا.
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৭
এই বছরেই কুফাতে বনি তালেবের একজন আত্মপ্রকাশ করেন। যার নাম হুসাইন ইবনে হামজা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। তখন খলিফা মুস্তাইন মুঝাহিম ইবনে খাক্বান কে তার সাথে মুকাবেলা করার জন্য পাঠান। তাদের মাঝে যুদ্ধ হল। এতে মুঝাহিম ইবনে খাক্বান হুসাইন আল আলাবী কে পরাজিত করেন। আর দলের অনেক লোককে হত্যা করল। এরপর মুঝাহিম কুফাতে প্রবেশ করল। এবং সেখানে এক হাজার বাড়ি ঘর জ্বলিয়ে দিল। আর যারা হুসাইনের সহযোগিতা করেছিল তাদের মাল সম্পদ লুট করল। তার কিছু আজাদকৃত বাদিদের বিক্রি করল।

এই বছর মক্কাতে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুসা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান ইবনে হাসান আলী ইবনে আবী তালেব আত্মপ্রকাশ করেন। তার ভয়ে মক্কার নায়েব জা’ফর ইবনে ফাযল ইবনে ঈসা ইবনে মূসা পলায়ন করেন। তখন ইসমাইল ইবনে ইউসুফ তার ও তার সাথি সঙ্গির বাড়ি ঘর লুট করেন। তার কিছু সৈন্য বাহিনী ও অন্যান্য কিছু লোকদের কে হত্যা করেন। কাবা ঘরে যে সমস্ত স্বর্ণ, রুপা, আতর, কাবার গেলাফ ইত্যাদি ছিল সব নিয়ে নেন। এবং মানুষের থেকে দুই লক্ষ দিনার কেড়ে নেন।

এরপর মুঝাহিম মদিনা মুনাওয়ারাতে চলে যান। ঐখানের নায়েব আলী ইবনে হুসাইন ইবনে ইসমাইলও তার ভয়ে পালিয়ে যান। তারপর রজব মাসে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ আবার মক্কাতে ফিরে আসেন। এবং মক্কাবাসীদের কে অবরোধ করে রাখল। ফলে ক্ষুধা ও পিপাশায় অনেক মানুষ মারা যায়। ঐ সময় পণ্যের দাম এত বেড়ে গেছিল যে, মাত্র তিন উকিয়া (৩৫৭ গ্রাম) রুটির দাম এক দিরহাম। আর এক রিতিল (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) গোশতের দাম চার দিরহাম। এক বোতল পানির দাম  তিন দিরহাম। মক্কাবাসী এদের কারণে অনেক মুসিবতের শিকার হয়েছে।
মক্কাতে ৫৭ দিন থাকার পর জিদ্দাতে যায়।
وَفِيهَا خَرَجَ بِالْكُوفَةِ أَيْضًا رَجُلٌ مِنَ الطَّالِبِيِّينَ، وَهُوَ الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ فَوَجَّهَ إِلَيْهِ الْمُسْتَعِينُ مُزَاحِمَ بْنَ خَاقَانَ فَاقْتَتَلَا فَهُزِمَ الْعَلَوِيُّ، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَلَمَّا دَخَلَ مُزَاحِمٌ الْكُوفَةَ حَرَّقَ بِهَا أَلْفَ دَارٍ، وَنَهَبَ أَمْوَالَ الَّذِينَ خَرَجُوا مَعَهُ، وَبَاعَ بَعْضَ جِوَارِي الْحُسَيْنِ بْنِ مُحَمَّدٍ هَذَا وَكَانَتْ مُعْتَقَةً عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ الْجَامِعِ. وَفِيهَا ظَهَرَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُوسَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ بِمَكَّةَ، فَهَرَبَ مِنْهُ نَائِبُهَا جَعْفَرُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ عِيسَى بْنِ مُوسَى، فَانْتَهَبَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ مَنْزِلَهُ، وَمَنَازِلَ أَصْحَابِهِ، وَقَتَلَ جَمَاعَةً مِنَ الْجُنْدِ وَغَيْرِهِمْ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ وَأَخَذَ مَا فِي الْكَعْبَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالطِّيبِ وَكُسْوَةَ الْكَعْبَةِ، وَأَخَذَ مِنَ النَّاسِ نَحَوًا مِنْ مِائَتَيْ أَلْفِ دِينَارٍ، ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَدِينَةِ النَّبَوِيَّةِ، فَهَرَبَ مِنْهُ عَامِلُهَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ ثُمَّ رَجَعَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ إِلَى مَكَّةَ فِي رَجَبٍ فَحَصَرَ أَهْلَهَا حَتَّى هَلَكُوا جُوعًا وَعَطَشًا فَبِيعَ الْخُبْزُ ثَلَاثُ أَوَاقٍ بِدِرْهَمٍ وَاللَّحْمُ الرِّطْلُ بِأَرْبَعَةٍ، وَشَرْبَةُ الْمَاءِ بِثَلَاثَةِ دَرَاهِمَ، وَلَقِيَ مِنْهُ أَهْلُ مَكَّةَ كُلَّ بَلَاءٍ، ثُمَّ رَجَعَ عَنْهُمْ إِلَى جُدَّةَ بَعْدَ مُقَامِ سَبْعَةٍ وَخَمْسِينَ يَوْمًا فَانْتَهَبَ أَمْوَالَ التُّجَّارِ هُنَالِكَ، وَأَخَذَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৮
সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের মাল লুট করে নেয়। তাদের বাহন কেড়ে নেয়। মক্কায় এক কাফেলা ইয়ামান থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছিল সেগুলোও লুট করে। এরপর আবার মক্কতে ফিরে আসে। আল্লাহ তায়ালাই মুসমানদের পক্ষ থেকে তার প্রতিশোধ নিক। হজ্জের সময় আরাফার দিন মানুষদের কে আরাফার ময়দানে অবস্থান করতে দেয় নি। দিনের বেলাও রাতেও না। অনেক হাজীদের কে হত্যা করে। তাদের মাল সম্পদ কেড়ে নেয়। ঐ বছর সে এবং তার সাথি সঙ্গি ছাড়া আর কেউ আরাফার ময়দানে অবস্থান করেনি। আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের কোন ইবাদত কবুল না করেন।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :

ইসহাক ইবনে মানসুর কাওসাজ
হুমাইদ ইবনে ঝানজাওয়াহ
আমর ইবনে উসমান ইবনে কাছির ইবনে দিনার হিমসী
আবূ নাকী হিশাম ইবনে আব্দুল মালিক আল ইয়াঝানী
الْمَرَاكِبَ، وَقَطَعَ الْمِيرَةَ عَنْ أَهْلِ مَكَّةَ حَتَّى جُلِبَتْ إِلَيْهَا مِنَ الْيَمَنِ، ثُمَّ عَادَ إِلَى مَكَّةَ لَا جَزَاهُ اللَّهُ خَيْرًا عَنِ الْمُسْلِمِينَ، فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ عَرَفَةَ لَمْ يُمَكِّنِ النَّاسَ مِنَ الْوُقُوفِ نَهَارًا وَلَا لَيْلًا، وَقَتَلَ مِنَ الْحَجِيجِ أَلْفًا وَمِائَةً، وَسَلَبَهُمْ أَمْوَالَهُمْ، وَلَمْ يَقِفْ بِعَرَفَةَ عَامَئِذٍ سِوَاهُ، وَمِنْ مَعَهُ مِنْ أَصْحَابِهِ، لَا تَقَبَّلَ اللَّهُ مِنْهُمْ صَرْفًا وَلَا عَدْلًا. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَفِيهَا تُوُفِّيَ مِنَ الْأَعْيَانِ: إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ الْكَوْسَجُ. وَحُمَيْدُ بْنُ زَنْجَوَيْهِ. وَعَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ دِينَارٍ الْحِمْصِيُّ. وَأَبُو النَّقِيِّ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْيَزَنِيُّ.