فصل في خلق السماوات والأرض
পৃষ্ঠা - ৮
অর্থাৎ---- সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি আদি-অন্ত, ব্যক্ত ও গুপ্ত এবং যিনি সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত ৷ তিনি আদি, তাই তাঁর আগে কিছু নেই ৷ তিনি অস্ত, তাই তাঁর পরে কিছু নেই ৷ তিনি ব্যক্ত, তাই তাঁর উপরে কিছু নেই ৷ তিনি গুপ্ত, তাই তাঁর পেছনে কিছু নেই ৷ তিনি আপন কামালিয়াতের যাবতীয় গুণাবলী অনাদি সহ অনন্ত, অক্ষয় , অব্যয় , চিরন্তন সত্তা ৷ আঁধার রাতে নিরেট পাথরের উপর কালো পিঁপড়ের পদচারণা এবং ক্ষুদ্র বালু-কণার সংখ্যা সম্পৃর্কেও তিনি সম্যক অবহিত ৷ তিনি উন্নত, মহান ও মহিমান্বিত ৷ তিনি মহা উন্নত ৷ সব কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন নিখুঁত পরিকল্পনা অনুসারে ৷
আকাশমণ্ডলীকে তিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ছাড়াই এবং সেগুলোকে সুশোভিত করেছেন উজ্জ্বল নক্ষত্রমালা দ্বারা, তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ্ত সুর্য এবং জ্যোতির্ময় চন্দ্র এবং তার উপরে তৈরি করেছেন সুউচ্চ, প্রশস্ত ও গোলাকার সিংহাসন ৷ তাহলো মহান আরশ ৷ যার আছে বিরাট বিরাট স্তম্ভ যা বহন করেন সম্মানিত ফেরেশতাগণ, যা ঘিরে আছেন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ, তাদের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক ৷ আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা গাওয়াই যাঁদের একমাত্র কাজ ৷ অনু্রূপভাবে আকাশমূহ পরিপূর্ণ রয়েছে ফেরেশতাকুলের দ্বারা ৷
প্রতিদিন তাঁদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার চতুর্থ আসমানে অবস্থিত বায়তুল মামূরে হাযির হন।দ্বিতীয়বার আর সেখানে তাঁদের আগমন ঘটে না ৷ তাসবীহ, তাহমীদ, তাকবীর এবং সালাত ও তাসলীমই তাঁদের একমাত্র ব্রত ৷
[فَصْلٌ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ]
فَصْلٌ
قَالَ اللَّهُ تَعَالَى فِي كِتَابِهِ الْعَزِيزِ: {اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ} [الزمر: 62] . فَكُلُّ مَا سِوَاهُ تَعَالَى فَهُوَ مَخْلُوقٌ لَهُ، مَرْبُوبٌ مُدَبَّرٌ، مُكَوَّنٌ بَعْدَ أَنْ لَمْ يَكُنْ، مُحْدَثٌ بَعْدَ عَدَمِهِ، فَالْعَرْشُ الَّذِي هُوَ سَقْفُ الْمَخْلُوقَاتِ إِلَى مَا تَحْتَ الثَّرَى وَمَا بَيْنَ ذَلِكَ مِنْ جَامِدٍ وَنَاطِقٍ، الْجَمِيعُ خَلْقُهُ وَمِلْكُهُ وَعَبِيدُهُ وَتَحْتَ قَهْرِهِ وَقُدْرَتِهِ وَتَحْتَ تَصْرِيفِهِ وَمَشِيئَتِهِ. {خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ} [الحديد: 4] . وَقَدْ أَجْمَعَ عُلَمَاءُ الْإِسْلَامِ قَاطِبَةً لَا يَشُكُّ فِي ذَلِكَ مُسْلِمٌ أَنَّ اللَّهَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ كَمَا دَلَّ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ الْحَكِيمُ، وَاخْتَلَفُوا فِي هَذِهِ الْأَيَّامِ أَهِيَ كَأَيَّامِنَا هَذِهِ، أَوْ كُلُّ يَوْمٍ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ؟ عَلَى قَوْلَيْنِ كَمَا بَيَّنَّا ذَلِكَ فِي التَّفْسِيرِ وَسَنَتَعَرَّضُ لِإِيرَادِهِ فِي مَوْضِعِهِ.
وَاخْتَلَفُوا هَلْ كَانَ قَبْلَ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ شَيْءٌ مَخْلُوقٌ قَبْلَهُمَا؟ فَذَهَبَ طَوَائِفُ مِنَ الْمُتَكَلِّمِينَ إِلَى أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ قَبْلَهُمَا شَيْءٌ، وَأَنَّهُمَا خُلِقَتَا مِنَ الْعَدَمِ الْمَحْضِ. وَقَالَ آخَرُونَ بَلْ كَانَ قَبْلَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ مَخْلُوقَاتٌ أُخَرُ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ} [هود: 7] . [هُودٍ: 7] .
পৃষ্ঠা - ৯
সৃষ্ট জীবের জন্য পানির তরঙ্গের উপর সৃজন করেছেন তিনি পৃথিবী, তার উপরে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বতমালা, আর আকাশ সৃষ্টিরও আগে চার দিনে তাতে ব্যবস্থা করেছেন তার জীবিকার এবং তাতে জােড়ায় জোড়ায়, সব কিছু সৃষ্টির বিষয়টি স্থির করেছেন ৷ শীতগ্রীষ্মে সর্বক্ষণ মানুষের যা কিছু প্রয়োজন, বুদ্ধিমানদের জন্য পথ-নির্দেশ স্বরুপ এবং তাদের প্রয়োজনীয় ও মালিকানাধীন জীবজন্তু ৷ মাটি থেকে তিনি মানব সৃষ্টির সুচনা করেছেন এবং নিরাপদ আধারে তৃচ্ছ পানির নির্যাস থেকে তার বংশধর সৃষ্টি করে উল্লেখযোগ্য কিছু না থাকারপর ত কে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন, আর শিক্ষা দান করে তাকে করেছেন সম্মানিত ৷ আদিপিতা আদম (আ)-কে নিজের পবিত্র হাতে সৃষ্টি করেছেন তিনি, গঠন করেছেন তার অবয়ব ৷নিজের পক্ষ থেকে তার মধ্যে সঞ্চার করেছেন আত্মা এবং ফেরেশতাদেরকে তার সামনে করিয়েছেন সিজদাবনত ৷ তারপর তার থেকে তার সহধর্মিনী আদি মাতা হাওয়া (আ)-কে সৃষ্টি করে দুর করে দিয়েছেন তার নিঃসঙ্গতা এবং তাদেরকে বাস করতে দিয়েছেন তার জান্নাতে এবং পুর্ণ মাত্রায় দান করেছেন অফুরস্ত নিয়ামত ৷
তারপর তার মহাপ্রজ্ঞাময় পুর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদেরকে নামিয়ে দেন পৃথিবীর মাটিতে এবং তাদের থেকে বিস্তার ঘটিয়েছেন অসং খ্য নর-নারীর ৷ তাদেরকে বিভক্ত করেছেন রাজা-প্রজা, গরীব ধনী, স্বাধীন ও অধীন নর-নারীতে এবং তাদেরকে বসবাস করতে দিয়েছেন পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ৷ বংশ পরম্পরায় বিচার দিনে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তাদের অধীন করে দিয়েছেন ছোট-বড় নদ-নদী উৎসারিত করে দিয়েছেন প্রয়োজন অনুসারে কুপ ও ঝর্ণারাজি এবং বারি বর্ষণ করে উৎপন্ন করেছেন রকমারী শস্য ও ফলমুল ৷ সর্বোপরি তাদেরকে দান করেছেন তিনি তাদের প্রয়োজন ও যাচঞা অনুসারে সবকিছু ৷ তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সং থ্যা নিন্য় করতে পারবে না ৷ মানুষ অবশ্যই অতিমাত্রায় জালিম, অকৃতজ্ঞ ৷ (১৪ : ৩৪) অতএব পবিত্রতা ঘোষণা করছি যে সত্তার, যিনি মহানুভব, মহান ও পরম সহনশীল ৷
মানব সৃষ্টি, তাদের জীবিকা প্রদান, তাদের পথ সুগম করে দেয়৷ এবং তাদেরকে বাকশক্তি দান করার পর ৰু তাদের প্ৰতি মহান আল্লাহর বিশেষ একটি নিয়ামত ও অনুগ্রহ হলো এই যে, তিনি তাদের নিকট প্রেরণ করেছেন তার নবী-রাসুলগণকে এবং নাযিল করেছেন তার হালাল-হারাম, যাবতীয় সমাচার ও বিধি-বিধান এবং সৃষ্টির সুচনা ও পুনরুথান সহ কিয়ামত পর্যন্ত সৎঘটিতব্য সব কিছুর বিশদ বিবরণ সম্বলিত কিতাবসমুহ ৷
সুতরাং ভাগ্যবান যে ব্যক্তি, যে সমাচড়ারসমুহকে সত্য বলে মেনে নেয় সাথে সাথে আদেশসমুহকে বশ্যত৷ ও নিষেধসমুহকে শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নিয়ে স্থায়ী নিয়াম৩ রাজি লাভে ধন্য হলো এবং যাক্কুম, ফুটন্ত পানি ও যস্ত্রণাদায়ক শাস্তি বিশিষ্ট জাহান্নামে মিথ্যাবাদীদের অবস্থান থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকল ৷
আমি মহান আল্লাহর বিপুল উত্তম ও বরকতময় প্রশংসা বর্ণনা করছি-যা ভরে দেবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীসমুহের প্রান্তরমালা কিয়ামত পর্যন্ত, অনম্ভকাল ধরে ৷ তার মাহাত্ম্য,
الْآيَةَ. وَفِي حَدِيثِ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ كَمَا سَيَأْتِي «كَانَ اللَّهُ وَلَمْ يَكُنْ قَبْلَهُ شَيْءٌ، وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ، وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَيْءٍ، ثُمَّ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ» . وَقَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَنْبَأَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ وَكِيعِ بْنِ حُدُسٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي رَزِينٍ لَقِيطِ بْنِ عَامِرٍ الْعُقَيْلِيِّ أَنَّهُ قَالَ: «يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيْنَ كَانَ رَبُّنَا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ؟ قَالَ: كَانَ فِي عَمَاءٍ مَا فَوْقَهُ هَوَاءٌ وَمَا تَحْتَهُ هَوَاءٌ، ثُمَّ خَلَقَ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ» . وَرَوَاهُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ هَارُونَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ بِهِ وَلَفْظُهُ أَيْنَ كَانَ رَبُّنَا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ خَلْقَهُ؟ وَبَاقِيهِ سَوَاءٌ، وَأَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ مَنِيعٍ، وَابْنِ مَاجَهْ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدِ بْنِ الصَّبَّاحِ، ثَلَاثَتُهُمْ عَنْ يَزِيدَ بْنِ هَارُونَ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: حَسَنٌ، وَاخْتَلَفَ هَؤُلَاءِ فِي أَيِّهَا خَلَقَ أَوَّلًا؟ فَقَالَ قَائِلُونَ: خَلَقَ الْقَلَمَ قَبْلَ هَذِهِ الْأَشْيَاءِ كُلِّهَا، وَهَذَا هُوَ اخْتِيَارُ ابْنِ جَرِيرٍ وَابْنِ الْجَوْزِيِّ وَغَيْرِهِمَا قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَبَعْدَ الْقَلَمِ السَّحَابَ الرَّقِيقَ وَاحْتَجُّوا بِالْحَدِيثِ الَّذِي رَوَاهُ الْإِمَامُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
পৃষ্ঠা - ১০
আল্লাহ তাআলা তার পবিত্র গ্রন্থে বলেন :
অর্থাৎ-পুর্বে যা ঘটেছে তার সংবাদ এভাবে আমি তোমার নিকট বিবৃত করি এবং আমি
আমার নিকট থেকে তোমাকে দান করেছি উপদেশ ৷ (২০ : ৯৯)
আল্লাহ তাআলা তার নবী (সা) এর নিকট সৃষ্টির সুচনা, পুর্ববর্তী জাতিসমুহের প্রসঙ্গ,
অনুগতদের প্রতি তার আনুকুল্য এবং অবাধ্যদের প্রতি শাস্তি ইত্যাদির বিবরণ দিয়েছেন ৷
আবার রাসুলুল্লাহ (সা) তার উম্মঙে র উদ্দেশে তার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন ৷ প্রতিটি পরিচ্ছেদে
ত্শ্লিষ্ট বিষয়ে বর্ণিত আয়াত তসমুহের পাশাপাশি আমরা রাসুলুল্লাহ (সা) থেকে আমাদের পর্বত
পৌছেছে এমন বর্ণনাসমুহ উপস্থাপন করব ৷ উল্লেখ্য যে, মহানবী (সা) আমাদের প্রয়োজনীয়
বিষয়ড়াবলী জানিয়ে দিয়েছেন আর যাতে আমাদের কোন উপকার নেই তা বর্জন করেছেন ৷ তবে
ইহুদী-খৃক্টান পণ্ডিতদের বেশ কিছু লোক তা জানা ও বুঝার জানা গলদঘর্ম হয়েছেন, যাতে
আমাদের অধিকাংশ লোকেরই কোন ফায়দা নেই ৷ আমাদের একদল আলিমও সেগুলো
অড়াদ্যেড়াপান্ত উদ্ধৃত করেছেন ৷ আমরা তাদের পথ অনুসরণ করবো না ৷ তবে আমরা
, সংক্ষিপ্তভাবে তা কিঞ্চিত উল্লেখ করব এবং আমাদের নিকট যা সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে,
তার সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ বিষয়াদি এবং যা তার বিপরীত বলে সমালোচিত হয়েছে তা আমরা
বর্ণনা করবো ৷ তবে ইমাম বুখারী(র) তার সহীহ বুখারীতে আমর ইবন আস (রা) সুত্রে এ
মর্মে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
১এ স্বেপুট্রি
অর্থাৎ “আমার পক্ষ থেকে একটি বাক্য হলেও তোমরা তা আমার পক্ষ থেকে পৌছিয়ে
দাও, বনী ইসরাঈল সুত্র থেকেও বর্ণনা করতে পার তাতে কোন অসুবিধা নেই এবং আমার পক্ষ
থেকে বর্ণনা কর, তবে আমার নামে মিথ্যা রটনা করো না ৷ ইচ্ছাকৃতভাবে যে ব্যক্তি আমার
নামে মিথ্যা রটনা করবে, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয় ৷” তা আমাদের মতে ঐ
সব ন্ইসরাঈলী রেওয়ায়েত সম্পর্কে প্রযোজ্য, যার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন বক্তব্য নেই ৷ সুতরাং
সেগুলোকে সত্য বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার মত কিছু আমাদের কাছে নেই ৷ তইি শিক্ষণীয় বিষয়
হিসাবে এসব রেওয়ায়ত বর্ণনা করা জায়েয আছে ৷ এ জাতীয় বর্ণনাই আমরা আমাদের এ
কিভাবে ব্যবহার করব ৷
পক্ষান্তরে আমাদের শরীয়ত যার সভ্যতার সাক্ষ্য দিয়েছে; আমাদের তা বর্ণনা করার
প্রয়োজন (নই-আমাদের কাছে যা আছে তা-ই আমাদের জন্য যথেষ্ট ৷ আর আমাদের শরীয়ত
যাকে বাতিল বলে সাক্ষ্য দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যাত এবং প্রত্যাখ্যান বাতিল ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে
বর্ণনা করা না জায়েয ৷ যা হোক, মহান আল্লাহ যখন আমাদের ও রাসুল (সা) দ্বারা অন্য সব
শরীয়ত থেকে এবং তার কিতাব দ্বারা অন্য সব কিতাব থেকে আমাদেরকে অমুখাপেক্ষী
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللَّهُ الْقَلَمُ، ثُمَّ قَالَ لَهُ اكْتُبْ فَجَرَى فِي تِلْكَ السَّاعَةِ بِمَا هُوَ كَائِنٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ» . لَفْظُ أَحْمَدَ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ، وَالَّذِي عَلَيْهِ الْجُمْهُورُ فِيمَا نَقَلَهُ الْحَافِظُ أَبُو الْعَلَاءِ الْهَمَذَانِيُّ وَغَيْرُهُ ; أَنَّ الْعَرْشَ مَخْلُوقٌ قَبْلَ ذَلِكَ. وَهَذَا هُوَ الَّذِي رَوَاهُ ابْنُ جَرِيرٍ مِنْ طَرِيقِ الضَّحَّاكِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ كَمَا دَلَّ عَلَى ذَلِكَ الْحَدِيثُ الَّذِي رَوَاهُ مُسْلِمٌ فِي صَحِيحِهِ حَيْثُ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلَانِيُّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «كَتَبَ اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلَائِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ قَالَ: وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ» .
قَالُوا: فَهَذَا التَّقْدِيرُ هُوَ كِتَابَتُهُ بِالْقَلَمِ الْمَقَادِيرَ، وَقَدْ دَلَّ هَذَا الْحَدِيثُ أَنَّ ذَلِكَ بَعْدَ خَلْقِ الْعَرْشِ، فَثَبَتَ تَقَدُّمُ خَلْقِ الْعَرْشِ عَلَى الْقَلَمِ الَّذِي كَتَبَ بِهِ الْمَقَادِيرَ كَمَا ذَهَبَ إِلَى ذَلِكَ الْجَمَاهِيرُ. وَيُحْمَلُ حَدِيثُ الْقَلَمِ عَلَى أَنَّهُ أَوَّلُ الْمَخْلُوقَاتِ مِنْ هَذَا الْعَالَمِ، وَيُؤَيِّدُ هَذَا مَا رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصِيْنٍ قَالَ: «قَالَ أَهْلُ الْيَمَنِ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: جِئْنَاكَ لِنَتَفَقَّهَ فِي الدِّينِ وَلِنَسْأَلَكَ عَنْ أَوَّلِ هَذَا الْأَمْرِ؟ فَقَالَ: كَانَ اللَّهُ وَلَمْ يَكُنْ شَيْءٌ قَبْلَهُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: مَعَهُ وَفِي رِوَايَةٍ: غَيْرُهُ «وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَيْءٍ
পৃষ্ঠা - ১১
অর্থাৎ “আল্লাহ ছিলেন, তার আগে কিছুই ছিল না, তখন তার আরশ ছিল পানির উপর ৷
আর স্মারকলিপিতে সব কিছু লিপিবদ্ধ করে পরে তিনি আকা ৷শমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেন ৷
ইমাম আহমদ (র) আবু রাযীন লাকীত ইবন আমির আকীলী (র) সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছিলেন, ইয়া রাসুলাল্পাহা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করার আগে আমাদের
প্ৰতিপালক কে ৷থায় ছিলেন ? রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন : মেঘমালার দেশে যার উপরেও শুন্য,
নিচেও শুন্য, তারপর পানির উপর তিনি তার আরশ সৃষ্টি করেন ৷
ইমাম আহমদ (র) য়াষীদ ইবন হারুন ও হা স্ফোদ ইবন সালামা (র) সুত্রেও হাদীছটি বর্ণনা
করেছেন ৷ তবে তার প্রথমাংশের শব্দ হলো মাখৃলুক সৃষ্টি করার আগে আমাদের প্রতিপালক
কোথায় ছিলেন? অবশিষ্টাৎশ একই রকম ৷
ইমাম তিবমিযী ও ইবন মাজাহ্ (র) ভিন্ন সুত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম তিবমিযী
(র) হাদীসটি হাসান বলে মন্তব্য করেছেন ৷
আবার এসবের মধ্যে কোনটা সর্বপ্রথম সৃষ্টি করা হয়েছে এ ব্যাপারেও আলিমগণের
মতভেদ রয়েছে ৷ একদল বলেন, সব কিছুর আগে কলম সৃষ্টি করা হয়েছে ৷ এটা ইবন জারীর
ও ইবন জাওযী (র) প্রমুখের অভিমত ৷ ইবন জারীর বলেন : আর কলমের পর সৃষ্টি করা
হয়েছে হালকা মেঘ ৷ তাদের দলিল হলো, যে হাদীস যা ইমাম আহমদ, আবু দাউদ ও
তিবমিযী (র) উবাদা ইবন সামিত (রা) সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
ان اول ما خلق الله القلم ثم قال له اكتب فجري في تلك الساعة كائن الي يوم القيامة
অর্থাৎ “আল্লাহ সর্বপ্রথম বা সৃষ্টি করেছেন তাহলো, কলম ৷ তারপর তাকে বললেন,
লিখ-তৎক্ষণাৎ সে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, তা লিখে চলল ৷ হাদীসে এ পাঠটি ইমাম
আহমদের ৷ ইমাম তিবমিযী (র) হাদীসটি হাসান সহীহ শরীর বলে মন্তব্য করেছেন ৷
পক্ষান্তরে হাফিজ আবুল আলা হামদানী (র) প্রমুখ এর বর্ণিত তথ্য মোতাবেক জমহুর
আলেমগণের অভিমত হলো সর্বপ্রথম মাখলুক হলো, আরশ’ ৷ ইবন জারীর যাহ্হাক সুত্রে
ইবন আব্বাস (রা) থেকে এটিই বর্ণনা করেছেন ৷ সহীহ মুসলিমে বর্ণিত ইমাম মুসলিমের
হাদীসটিও এর প্রমাণ বহন করে ৷ তাহলো : ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবন
আমর ইবন আস (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি !
অর্খাৎ আকা শমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চা ৷শ হাজার বছর আগেই আল্লাহ সৃষ্টি জগতের
তাকদীর লিপিবদ্ধ করে রাখেন ৷ তখন তার আরশ ছিল পানির উপর ৷
وَخَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ» . وَفِي لَفْظٍ «ثُمَّ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ» . فَسَأَلُوهُ عَنِ ابْتِدَاءِ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، وَلِهَذَا قَالُوا جِئْنَاكَ نَسْأَلُكَ عَنْ أَوَّلِ هَذَا الْأَمْرِ، فَأَجَابَهُمْ عَمَّا سَأَلُوا فَقَطْ، وَلِهَذَا لَمْ يُخْبِرْهُمْ بِخَلْقِ الْعَرْشِ كَمَا أَخْبَرَ بِهِ فِي حَدِيثِ أَبِي رَزِينٍ الْمُتَقَدِّمِ. قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ خَلَقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمَاءَ قَبْلَ الْعَرْشِ رَوَاهُ السُّدِّيُّ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ، وَعَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَنْ مُرَّةَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، وَعَنْ نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا: «إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ، وَلَمْ يَخْلُقْ شَيْئًا غَيْرَ مَا خَلَقَ قَبْلَ الْمَاءِ» ، وَحَكَى ابْنُ جَرِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ أَنَّهُ قَالَ: أَوَّلُ مَا خَلَقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ النُّورُ وَالظُّلْمَةُ، ثُمَّ مَيَّزَ بَيْنَهُمَا فَجَعَلَ الظُّلْمَةَ لَيْلًا أَسْوَدَ مُظْلِمًا، وَجَعَلَ النُّورَ نَهَارًا مُضِيئًا مُبْصِرًا قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَقَدْ قِيلَ إِنَّ الَّذِي خَلَقَ رَبُّنَا بَعْدَ الْقَلَمِ الْكُرْسِيُّ، ثُمَّ خَلَقَ بَعْدَ الْكُرْسِيِّ الْعَرْشَ، ثُمَّ خَلَقَ بَعْدَ ذَلِكَ الْهَوَاءَ وَالظُّلْمَةَ، ثُمَّ خَلَقَ الْمَاءَ فَوَضَعَ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ. وَاللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى أَعْلَمُ