سنة إحدى عشرة من الهجرة
فصل: إيراد ما بقي علينا من متعلقات السيرة الشريفة
كتاب الشمائل
باب ذكر أخلاقه وشمائله الطاهرة صلى الله عليه وسلم
ذكر مزاحه عليه الصلاة والسلام
পৃষ্ঠা - ৪৬২৬
নিজ চোখে ভুনা বকরী দেখেছেন বলে আমার জানা নেই ৷ তারই বরাতে বর্ণিত বুখারীরই
অপর একটি রিওয়ায়াতে রয়েছে : রাসুলুল্পাহ্ (সা) কখনও খাঞ্চায় কিংবা তশত তে আহার
করেননি এবং৩ তার জন্য কখনও চাপাতি রুটি বানানো হয়নি ৷ তখন আমি (কাতাদা)
আনাসকে বললাম, তাহলে তারা কিসে খেতে ন ? তখন তিনি বললেন, এই সকল সাধারণ
দস্তরখানে ৷ এছাড়াও কাতাদার হাদীস সংগ্রহ থেকে হযরত আনাস সুত্রে তার (ইমাম বুখারীর)
বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে যবের রুচি ও গরম চর্বি নিয়ে
গেলেন ৷ আর ইতিপুর্বে তিনি পোষ্য পরিজনের জন্য যবের বিনিময়ে জনৈক ইয়াহুদীর কাছে
তার বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন ৷ আর একদিন আমি তাকে বলতে শুনেছি, মুহাম্মাদ (না)-এর
পরিবারের কাছে কখনও এক সা’১ পরিমাণ খেজুর কিৎবা এক সা” পরিমাণ শস্যদানা মজুদ
থাকেনি ৷ ইমাম আহমদ, আফ্ফান আনাস ইবন মালিক সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
অতিথিদের ভিড়ের পরিস্থিতি ব্যতীত রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কখনও দুপুর ও রাতের দু’বেলা রুচি
ও গোশতের খাবার জুটেনি ৷ ইমাম তিরমিযী তার শামাইল’-এ আবদুল্লাহ ইবন আবদুর
রহমান সুত্রে হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর এ সনদটি বুথারী ও মুসলিমের
শর্তানুযায়ী ৷ আবু দাউদ তায়ালিসী ও ’ব৷ সিমাক ইবন হাবৃব সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
বলেছেন, আমি নুমান ইবন বশিরকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, (একবার) আমি উমর
ইবনুল খাত্তাবকে খুৎবা দিতে শুনলাম, তখন তিনি তার সময়ে আল্লাহ্ মানুষকে যে সম্পদ ও
প্রাচুর্ষ দান করেছেন তার উল্লেখ করলেন ৷৩ তারপর বললেন, আমি তাে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ণ্ক
ক্ষুধার তাড়নায় কুকড়ে যেতে দেখেছি, পেট ভরার মত দাকাল’২ খেজুরও৩ তার জুটাতা না ৷
ও বার হাদীস সংগ্রহ থেকে মুসলিম তা বর্ণনা করেছেন ৷ সহীহ্ বুখারীতে রয়েছে যে, (একবার)
হযরত আবু তালহ৷ তার ত্রীকে বললেন, হে উম্মু সুলায়ম! আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর স্বরে
ক্ষুধার আভাস পেলাম ৷ আর হাদীসখানি দালাইলুন্ নবুওয়্যা গ্রন্থে এবং আবুল হায়ছাম ইবন
তায়হান এর কাহিনীতে আসছে যে (একবার) হযরত আবু বকর ও উমর ক্ষুধার তাড়নায়
বাড়ি থেকে বের হলেন, এমন সময় হঠাৎ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বের হলেন, তখন তিনি তাদেরকে
জিজ্ঞেস করলেন, কী তোমাদের ঘর-ছাড়৷ করল ? তারা বললেন, ক্ষুধা ৷ তখন তিনি বললেন,
শপথ ঐ সভার, যার কুদরতি ৩হাতে আমার প্রাণ, ণ্তামাদেরাক যা ঘর ছাড়া করেছে আমাকেও
তাই ঘর ছাড়া করেছে ৷ এরপর তারা সকলে হায়ছাম ইবন তায়হানের বাগানে গেলেন, তখন
তিনি তাদেরকে গাছপালা (তরতাজা) খেজুর খাওয়ালেন এবং তাদের জন্য একটি বকরীও
জবাই করলেন, তখন তারা তা খেলেন এবং ঠাণ্ডা পানিও পান করলেন ৷ এ সময় নবীজী
বললেন, এই হল এ নিআমত যে সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে ৷
ইমাম তিরমিযী আবদৃল্লাহ্ আবু যিয়াদ সুত্রে হযরত আবু তালহ৷ থেকে বর্ণনা করেন ৷
একবার আমরা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে ক্ষুধার অনুযােগ করে আমাদের পেটে বাধা একটি
পাথর বের করে দেখালাম, তখন নবীজী তার পেটে বাধা দু’টি পাথর আমাদেরকে দেখালেন ৷
তারপর তিনি বলেন, হাদীসখানি গরীব ৷
১ অতি নিকৃষ্ট ও নিম্নমানের খেজুর ৷-অনুবাদক সােয়৷ তিন কেজি পরিমাণ ৷ ষ্সম্পাদক
২ ব্যক্তিগত জীবনে কৃচ্ছতাপালনকারী হলেও অতিথিদের আগমণে নবীগৃহে গোশতের ব্যবস্থা করা
হতো ৷-জালালাবাদী (সম্পাদক)
[ذِكْرُ مِزَاحِهِ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ]
قَالَ ابْنُ لَهِيعَةَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسٍ قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَفْكَهِ النَّاسِ مَعَ صَبِيٍّ.» وَقَدْ تَقَدَّمَ حَدِيثُهُ فِي مُلَاعَبَتِهِ أَخَاهُ أَبَا عُمَيْرٍ، وَقَوْلُهُ: «أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ؟» يُذَكِّرُهُ بِمَوْتِ نُغَرٍ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ؛ لِيُخْرِجَهُ بِذَلِكَ، كَمَا جَرَتْ بِهِ عَادَةُ النَّاسِ مِنَ الْمُدَاعَبَةِ مَعَ الْأَطْفَالِ الصِّغَارِ.
وَقَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: ثَنَا خَلَفُ بْنُ الْوَلِيدِ، ثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، «أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَحْمَلَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " إِنَّا حَامِلُوكَ عَلَى وَلَدِ نَاقَةٍ " فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَصْنَعُ بِوَلَدِ نَاقَةٍ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " وَهَلْ تَلِدُ الْإِبِلَ إِلَّا النُّوقُ!» . وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ عَنْ وَهْبِ بْنِ بَقِيَّةَ، وَالتِّرْمِذِيِّ عَنْ قُتَيْبَةَ، كِلَاهُمَا عَنْ خَالِدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْوَاسِطِيِّ الطَّحَّانِ بِهِ. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: صَحِيحٌ غَرِيبٌ.
পৃষ্ঠা - ৪৬২৭
হিশাম ইবন উরওয়ার হাদীস সংগ্রহ থেকে হযরত আইশার বরাতে বুখারী ও মুসলিমে
রয়েছে যে, (একবার) তাকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিছানা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি
বললেন, তা ছিল খেজুর গাছের আশ ভর্তি চামড়ার তােষক ৷ হাসান ইবন আরাফা হযরত
আইশা সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, (একবার) জনৈক আনাসারী নারী আমার কক্ষে
প্রবেশ করল, তখন সে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিছানা দেখল, আর তা ছিল দু ভাজ করা আবা১
তখন স্লে গিয়ে তৎক্ষণাৎ আমার কাছে পশম ভর্তি একটি তােষক পাঠিয়ে দিল ৷ এরপর
রাসুলুল্লাহ্ (না) আমার কক্ষে প্রবেশ করে বললেন, হে আইশা! এটা কী ? আইশা বলেন,
আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ অমুক আনসারী নারী আমার কাছে এসেছিল, যে আপনার
বিছানা দেখেগ্ গিয়ে আমার কাছে এটা পাঠিয়ে দিয়েছে ৷ তখন তিনি বললেন, তৃমি তা ফিরিয়ে
দাও ৷ আইশা বলেন, কিন্তু আমি তা ফেরত পাঠালাম না আমার গৃহে৩ তা থাকবে এ বিষয়টি
আমার কাছে মোহনীয় ঠেকেছিল ৷ এমনকি তিনি তা তিনবার বললেন ৷ আইশা বলেন, তখন
তিনি বললেন, হে আইশা তৃমি তা ফিরিয়ে দাও আল্লাহর কসম আমি যদি চাইতাম তাহলে
আল্লাহ্ আমার সাথে সাথে স্বর্ণ ও রৌগ্যের পাহাড় চা ৷লিত করতেন ৷ তিরমিযী তার শামইিলে
আবুল খাত্তাব জাফর ইবন মুহাম্মাদের পিতা সুত্রে বর্ণনা করেন যে,৩ তিনি বলেছেন,
একবার আইশা (রা)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার গৃহে নবীজীর বিছানা কী ছিল ? জবাবে
তিনি বলেন, খেজুর গাছের আশ ভর্তি চামড়ার তােষক ৷ আর হযরত হাফসাকে জিজ্ঞাসা করা
হল : রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিছানা কী ছিল ? তিনি বললেন, তা ছিল একটি পশযী জুব্বা,
যাকে আমরা দু ভাজ করে দিতাম এবং তিনি তার উপর ঘুমাতেন ৷ এরপর কোন এক রাত্রে
আমি ভাবলাম, আমি যদি এটিকে চারর্ভাজ করে দিই তাহলে তা আরো ণ্কামল ও
আরামদায়ক হবে ৷ এরপর আমরা তার জন্য তা চার ভীজ করে বিছিয়ে দিলাম ৷ তারপর (সে
বিছানায় রাত্রে শ্যেয়ার পর) সকালে তিনি বললেন, গতরাত্রে তোমরা আমাকে কী বিছিয়ে
দিয়েছিলে ? হাফসা বলেন, আমরা বললাম, তা আপনারই বিছানা, তবে আমরা তা চার র্ভাজ
করে দিয়েছিলাম ৷ আমরা বললাম, তা আপনার জন্য কােমলতর ৷ তিনি বললেন, তাকে
পুর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দাও ৷ কেননা তার কােমলতা গত রাত্রে আমাকে তাহাজ্জ্বদ থেকে বিরত
রেখেছে ৷ তাবারানী মুহাম্মাদ ইবন আবান হাকীম ইবন হিযাম সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেছেন যে, একবার আমি ইয়ামানে গিয়েছিলাম, সেখানে আমি যী-য়াযানের জোড়া পোশাক
খরিদ করলাম এরপর তা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এব কাছে উপচৌকনরুপে পাঠালাম, কিন্তু তিনি তা
ফিরিয়ে দিলেন ৷ এরপর আমি তা বিক্রি করতে চাইলে তিনি তা খরিদ করে নিলেন, এরপর
তা পরিধান করে তার সাহাবীগণের কাছে আসলেন ৷ এই পােশাকে তার চেয়ে সুন্দর কাউকে
আমি দেখিনি ৷ তখন আমি আত্মসংব বরণ করতে না পেরে আবৃত্তি করলাম
০ :
,াদ্বুন্১, ও,ছু ;,ৰু
ললাটের২ ও পায়ের শুভ্রতা সুস্পষ্টরুপে প্রকাশ পাওয়ার পর বিচারকগণ আর অশ্বেব
শ্রেষ্ঠত্বে র ব্যাপারে কি রায় প্রদান করবেন ৷
১ হাতাবিহীন ঢিলেঢালা আলখেল্লা বিশেষ ৷
২ ললাট ও পায়ে শুভ্র চিহ্ন থাকা ঘোড়ার সদ্বৎশজাত হওয়ার প্রমাণ ৷-অনুবাদক
وَقَالَ أَبُو دَاوُدَ فِي هَذَا الْبَابِ: ثَنَا يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ، ثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، ثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْعَيْزَارِ بْنِ حُرَيْثٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ: «اسْتَأْذَنَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعَ صَوْتَ عَائِشَةَ عَالِيًا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا دَخَلَ تَنَاوَلَهَا لِيَلْطِمَهَا، وَقَالَ: أَلَا أَرَاكِ تَرْفَعِينَ صَوْتَكِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَجَعَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْجِزُهُ، وَخَرَجَ أَبُو بَكْرٍ مُغْضَبًا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ خَرَجَ أَبُو بَكْرٍ: " كَيْفَ رَأَيْتِنِي أَنْقَذْتُكِ مِنَ الرَّجُلِ؟ " فَمَكَثَ أَبُو بَكْرٍ أَيَّامًا، ثُمَّ اسْتَأْذَنَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدَهُمَا قَدِ اصْطَلَحَا، فَقَالَ لَهُمَا: أَدْخِلَانِي فِي سِلْمِكُمَا كَمَا أَدْخَلْتُمَانِي فِي حَرْبِكُمَا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " قَدْ فَعَلْنَا قَدْ فَعَلْنَا» .
ثُمَّ قَالَ أَبُو دَاوُدَ: ثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ الْفَضْلِ، ثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْعَلَاءِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلَانِيِّ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيِّ قَالَ: «أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهُوَ فِي قُبَّةٍ مَنْ أَدَمٍ، فَسَلَّمْتُ فَرَدَّ وَقَالَ: " ادْخُلْ ". فَقُلْتُ: أَكُلِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ: " كُلُّكَ ". فَدَخَلْتُ.» .
পৃষ্ঠা - ৪৬২৮
আর যখন তারা তার বীরত্বের যথার্থত৷ পরিমাপ করে তখন তিনি অপ্রতিহত রক্ত
প্রবাহিত কারী তরবড়ারির গুণে তাদেরকে ছাড়িয়ে যান ৷
তখন নবীজী তা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন, তারপর ঘরে নিয়েত
হযরত উমামা ইবন যায়দকে পরিয়ে দিলেন ৷
ইমাম আহমদ, হুসায়ন ইবন আলী হযরত উম্মু সালামা সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
তিনি বলেছেন, (একবার) বিবর্ণ ও ভারী চেহারা নিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমার কাছে আসলেন ৷
তিনি (উম্মু সালামা) বলেন, আমি ধারণা করলাম, তা কোন ব্যথার কারণে হয়ে থাকবে ৷ তখন
আমি তাকে বললাম, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্া৩৷ আপনার চেহারা বিবর্ণ ও ভারী দেখছি এটা কি কোন
ব্যথার কারণে ? তখন তিনি বললেন, না বরং ঐ সাতটি দীনার যা আমাকে গতকাল দেয়া
হয়েছে অথচ আমি তা এখনও ব্যয় করিনি তােষকের নীচের এক প্রান্তে রেখে আমি তা ভুলে
গিয়েছি ৷ এটি ইমাম আহমদের একক বর্ণনা ৷ ইমাম আহমদ আবু সালামা আবু উমামা
ইবন সাহ্ল সুত্রে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন (একবার) আমি এবং উরওয়৷ ইবন যুবায়র
হযরত আইশার কক্ষে প্রবেশ করলাম, তখন তিনি বললেন তোমরা যদি নবী করীম (স ) কে
একদিন তার মৃত্যু শয্যায় দেখতে তিনি বলেন, আমার কাছে তার ছয়টি দীনার রাখা ছিল
(রাবী মুস৷ বিন জুবায়র বলেন, অথবা সাত ঢি) আইশা বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা) আমাকে
সেগুলো বিলিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন ৷ তিনি বলেন, কিন্তু ইতিমধ্যে নবীজীর ব্যথা ও অসুস্থতা
আমাকে ব্যস্ত রাখল এবং পরিশেষে আল্লাহ্ত তাকে আরোগ্য দান করলেন ৷ আইশা বলেন,
এরপর তিনি আমাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, তিনি বললেন, ছয় দীন৷ ৷রের অথবা সাত
দীনারের কী হল ? আমি বললাম, না আল্লাহর কসমৰু (আমি তা বিলাতে পারিনি) আপনার
অসুস্থতা আমাকে তা থেকে বিরত রেখেছিল ৷ তিনি বললেন, তখন তিনি তা আনালেন এবং
তা হাতে ধারণ করে বললেন, আল্লাহর নবীর কী ধারণা, যদি যে এগুলি নিজের কাছে রেখে
আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে ? (তখন আল্লাহর কাছে কী জবাব হবে ?) এটি ইমাম আহমদের
একক বর্ণনা ৷
কুতায়বা জাফর ইবন সুলায়মান আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্
(সা ) কোন কিছু আগামীকালের জন্য মজুদ করতেন না ৷ এই হাদীসখানি বুখারী ও মুসলিম
শরীফেও বিদ্যমান ৷ মর্মার্থ হল দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এমন কিছু তিনি আগামীকালের জন্য মজুদ
করতেন না, যেমন খাবার (রান্না করা) ও এ জাতীয় দ্রব্য ৷ এর প্রমাণ বুখারী ও মুসলিমে
হযরত উমর সুত্রে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি বলেন, বানু নড়াযীরের যে সম্পদ আল্লাহ তার
রাসুলকে মুসলমানদের অশ্ব বা উষ্ট্ৰ বাহিনীর আক্রমণ ছাড়ইি দান করেছিলেন, সেখান থেকে
তিনি পোয্যপরিজনের এক বছরের থােরাকী-খরচ৷ পৃথক করে ব্লেখেছিলেন ৷ তারপর যা
অবশিষ্ট ছিল তা যুদ্ধের বাহন ও অস্ত্র সংগ্রহে আল্লাহর রাহে জিহাদের প্রস্তুতি-উপকরণ
করেছিলেন ৷ ইমাম আহমদের পরবর্তী রিওয়ায়ড়া৩ টিও আমাদের উল্লেখিত রিওয়ায়াতের
সমর্থক ৷ আহমদ মারওয়ান ইবন যুআবিয়৷ হিলাল ইবন সুওয়ায়দ সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, তিনি বলেছেন, আমি আনাস ইবন মালিককে বলতে শুনেছি (একবার) রাসুলুল্লাহ্
وَحَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ صَالِحٍ، ثَنَا الْوَلِيدُ، ثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي الْعَاتِكَةِ، إِنَّمَا قَالَ: أَدْخُلُ كُلِّي؟ مِنْ صِغَرِ الْقُبَّةِ.
ثُمَّ قَالَ أَبُو دَاوُدَ: ثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَهْدِيٍّ، ثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَا ذَا الْأُذُنَيْنِ» .
قُلْتُ: وَمِنْ هَذَا الْقَبِيلِ مَا رَوَاهُ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: ثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ:، ثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، «أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ كَانَ اسْمُهُ زَاهِرًا، وَكَانَ يُهْدِي لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْهَدِيَّةَ مِنَ الْبَادِيَةِ، فَيُجَهِّزُهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " إِنَّ زَاهِرًا بَادِيَتُنَا، وَنَحْنُ حَاضِرُوهُ ". وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّهُ، وَكَانَ رَجُلًا دَمِيمًا، فَأَتَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا وَهُوَ يَبِيعُ مَتَاعَهُ فَاحْتَضَنَهُ مِنْ خَلْفِهِ وَهُوَ لَا يُبْصِرُهُ، فَقَالَ الرَّجُلُ: أَرْسِلْنِي، مَنْ هَذَا؟ فَالْتَفَتَ فَعَرَفَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلَ لَا يَأْلُو مَا أَلْصَقَ ظَهْرَهُ بِصَدْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ عَرَفَهُ، وَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " مَنْ يَشْتَرِي الْعَبْدَ؟ " فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِذَنْ وَاللَّهِ تَجِدُنِي كَاسِدًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " لَكِنَّ عِنْدَ اللَّهِ لَسْتَ بِكَاسِدٍ " أَوْ قَالَ: " لَكِنَّ عِنْدَ اللَّهِ أَنْتَ غَالٍ» وَهَذَا إِسْنَادٌ رِجَالُهُ كُلُّهُمْ ثِقَاتٌ عَلَى شَرْطِ " الصَّحِيحَيْنِ "، وَلَمْ يَرْوِهِ إِلَّا التِّرْمِذِيُّ فِي " الشَّمَائِلِ "، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ
পৃষ্ঠা - ৪৬২৯
(না)-এর জন্য তিনটি (ভুনা করা) পাখি হাদিয়া আসল ৷ তখন তিনি তার খাদিমকে একটি
খাওয়ালেন ৷ পরদিন তিনি (সম্ভবত আইশা রা) অবশিষ্ট (পাখি) তড়াকে পরিবেশন করলেন ৷
তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে আগামী দিনের জন্য কোন কিছু
(খাবার) উঠিয়ে রাখতে নিষেধ করিনি ? কেননা, আল্লাহ্ র্তাআলা প্রতিটি আগামী দিনের
রিযিক (পৃথকভাবে) দান করে থাকেন ৷
এ প্রসঙ্গে হযরত বিলালেৱ হাদীস
ইমাম বায়হাকী, আবুল হুসায়ন ইবন বুশরান আবু হুরায়রা সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
(একবার) বাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত বিলালেৱ কক্ষে প্রবেশ করে তার কাছে থেজুরের কয়েকটি
দ্ভুপ দেখতে পেয়ে বললেন, হে বিলাল! এ কী ? বিলাল বললেন, এগুলি খেজুর, আমি মজুদ
করছি ৷ তিনি বললেন, তোমার সর্বনাশ আসন্ন, বিলাল! তুমি কি ভয় করো না যে, এগুলোর
জন্য জাহান্নড়ামে (তোমার জন্য) প্রজ্জ্বলিত সমুদ্র সৃষ্টি হবে ? হে বিলাল ! (দান সদকার মাধ্যমে)
ব্যয় করতে থাক এবং আরশাধিপতি থেকে কোন প্রকার কমতির আশংকা করো না ৷ বায়হাকী
তার নিজ সনদে আবু দাউদ সিজিসৃতানী আবদৃল্লাহ্ আল হুরায়নীর বরাঃত বর্ণনা করেন ৷
তিনি বলেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মুয়ড়াজ্বজিন হযরত বিলালেৱ সাথে হাল্ব
শহরে১ সাক্ষাৎ করলাম ৷ তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, হে বিলালা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
ব্যয় (অর্থাৎ দান-সদকা) সম্পর্কে আমাকেবলুনঃ ৷ তখন তিনি বললেন, তীর নবুওয়াত লাভের
পর থেকে ওফাত পর্যন্ত তার (প্রায়) সব ব্যয় সংক্রান্ত দায়িতুই তার পক্ষ থেকে আমি পালন
করতাম ৷ তার কাছে যখন কোন মুসলমান আসত আর তিনি তাকে অভাবী মনে করতেন,
তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিতেন, তখন আমি বেরিয়ে ৰুপড়তাম এবং কারও থেকে ধার
নিতাম, তারপর তা দিয়ে চাদর ও অন্য কিছু কিনে তাংক পরিধেয় ও আহার্য দান করতাম ৷
অবশেষে একদিন এক মুশরিক আমার পথ আগলে দাড়িয়ে বলল, হে বিলাল! আমার যথেষ্ট
অর্থ সম্পদ রয়েছে ৷ সুতরাং তুমি আমি ছাড়া আর কারও থেকে ধার নিও না ৷ তখন আমি তাই
করলাম ৷ এরপর কোন একদিন আমি উযু করে আযান দেয়ার জন্য দীড়িয়েছি এমন সময় এ
মুশরিককে একদল ব্যবসায়ীর মাঝে দেখতে পেলাম ৷ তারপর সে যখন আমাকে দেখতে পেল
তখন বলল, হে হাবশী (নিগ্রো) ! বিলাল বলেন, আমি বললাম, বল ৷ তখন সে আমার উপর
আক্রমণ করল এবং কঠোর বা গুরতর অন্যায় কথা বলল ৷ সে বলল, তুমি কি জান, একমাস
পুর্ণ হতে আর ক’দিন বাকী ? আমি বললাম, সামান্য কয়েক দিন ৷ তখন সে বলল, তোমার
মেয়াদ পুর্ণ হতে আর চার দিন বাকী ৷ এরপর আমার পাওনার বিনিময়ে আমি তোমাকে
পাকড়াও করব ৷ কেননা, তোমাকে যে ঋণ আমি দিয়েছি তা তোমার বা তোমার নবীর
সম্মানার্থে নয়, আমি তাে এইজন্য তোমাকে ঋণ দিয়েছি যে, তার মাধ্যমে তুমি আমার দাসে
পরিণত হয়ে আর আমি তোমাকে মেষ চরাতে পাঠড়াব যেমনটি তুমি পুর্বে করতে ৷ তিনি
(বিলাল ) বলেন, তখন আমার অন্য দশ জনের মত মনকেও দুশ্চিন্তায় পেয়ে বসল ৷ তখন আমি
( সেখান থেকে) প্রস্থান করলাম এবং নামাষের আমান দিলাম ৷
১ আল্যেপ্পা নগরী ৷-জালালাবাদী (সম্পাদক)
مَنْصُورٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ. وَرَوَاهُ ابْنُ حِبَّانَ فِي " صَحِيحِهِ ".
وَمِنْ هَذَا الْقَبِيلِ مَا رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي " صَحِيحِهِ " «أَنَّ رَجُلًا كَانَ يُقَالُ لَهُ: عَبْدُ اللَّهِ. وَكَانَ يُلَقَّبُ حِمَارًا، وَكَانَ يُضْحِكُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ يُؤْتَى بِهِ فِي الشَّرَابِ، فَجِيءَ بِهِ يَوْمًا، فَقَالَ رَجُلٌ: لَعَنَهُ اللَّهُ، مَا أَكْثَرَ مَا يُؤْتَى بِهِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " " لَا تَلْعَنْهُ؛ فَإِنَّهُ يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ» .
وَمِنْ هَذَا مَا قَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: ثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنِي شُعْبَةُ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي مَسِيرٍ، وَكَانَ حَادٍ يَحْدُو بِنِسَائِهِ أَوْ سَائِقٌ. قَالَ: فَكَانَ نِسَاؤُهُ يَتَقَدَّمْنَ بَيْنَ يَدَيْهِ، فَقَالَ: " يَا أَنْجَشَةُ، وَيْحَكَ، ارْفُقْ بِالْقَوَارِيرِ» .
وَهَذَا الْحَدِيثُ فِي " الصَّحِيحَيْنِ " عَنْ أَنَسٍ قَالَ: «كَانَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَادٍ يَحْدُو بِنِسَائِهِ يُقَالُ لَهُ: أَنْجَشَةُ. فَحَدَا، فَأَعْنَقَتِ الْإِبِلُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " وَيْحَكَ يَا أَنْجَشَةُ، ارْفُقْ بِالْقَوَارِيرِ» وَمَعْنَى الْقَوَارِيرِ: النِّسَاءُ، وَهِيَ كَلِمَةُ دُعَابَةٍ، صَلَوَاتُ اللَّهِ وَسَلَامُهُ عَلَيْهِ دَائِمًا إِلَى يَوْمِ الدِّينِ.
وَمِنْ مَكَارِمِ أَخْلَاقِهِ وَدُعَابَتِهِ وَحَسَنِ خُلُقِهِ، اسْتِمَاعُهُ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ
পৃষ্ঠা - ৪৬৩০
অবশেষে আমি যখন ’ ইশার নামায পড়লাম এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার সহধর্মিণীগণের
কাছে ফিরে গেলেন তখন আমি তার সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থনা করলাম এবং তিনি আমাকে
অনুমতি দিলেন ৷ তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমার পিতামাতড়া আপনার জন্য
কুরবান হোন, ঐ মুশরিকটি যার কথা আমি আপনার কাছে উল্লেখ করেছিলাম, যে আমি তার
নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করতাম, যে আজ আমাকে এমন এমন কথা বল্যেছ (অর্থাৎ ঋণ
পরিশোধের জন্য চাপ দিয়েছে ৷) অথচ আপনার বা আমার কারও কাছেই আমার ঋণ
পরিশোধের ব্যবস্থা নেই ৷ সুতরাং সে তো আমাকে লাঞ্ছিত করে ছাড়বে ৷ তখন তিনি আমাকে
ইসলাম গ্রহণকারী এই মহল্পাবাসীদের কারও কারও কাছে যেতে বললেন, যাতে আল্লাহ্ তার
রাসুলকে এমন কিছু দান করেন যা দিয়ে আমি আমার দেনা পরিশোধ করবো ৷ তখন আমি
সেখান থেকে বের হয়ে আমার বাড়িতে আসলাম এবং আমার তরবারি, বল্লম, বর্শা ও পাদৃকা
আমার শিয়রের কাছে রাখলাম, আর আমার মুখমণ্ডল দিগন্তমুখী করে রাখলাম ৷ ফলে যখন
আমার ঘুম আসছিল তখনই আমি জেগে উঠছিলাম ৷ এরপর যখন রাত ঘনিয়ে এসেছে অনুভব
করলাম তখন ঘুমিয়ে পড়লাম ৷ অবশেষে ভোরের প্রথম আলো প্রকাশ পেল ৷ তখন আমি চলে
যেতে উদ্যত হলাম ৷ হঠাৎ শুনতে পেলাম এক ব্যক্তি ডেকে বলছে : হে বিলাল! রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর ডাকে সাড়া দাও ! তখন আমি তার কাছে আমার জন্য রওয়ানা হলাম ৷ এমন সময়
দেখতে পেলাম পিঠে বোঝাসহ চারটি উট ৷ তখন আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে এসে তীর
অনুমতি প্রার্থনা করলাম ৷ তখন নবী করীম (সা) আমাকে বললেন, (বিলাল) তুমি সুসংবাদ
গ্রহণ কর ৷ আল্লাহ তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করেছেন ৷ তখন আমি আল্লাহর হামদ ও
শোকর আদায় করলাম, আর তিনি বললেন, তুমি কি বসিয়ে রাখা উট চারটি অতিক্রম করে
আসনি ? তিনি বলেন, জবাবে আমি বললাম, অবশ্যই ৷ তিনি বললেন, এই উটগুলি এবং
এগুলোর পিঠের উপর যা কিছু রয়েছে তুমি সবকিছুর-মালিক ৷ তখন আমি দেখতে পেলাম
ওগুলোর পিঠে খাবার ও পোশাক সামগ্রী রয়েছে যা ফাদাকের শাসক তার কাছে উপচৌকন
স্বরুপপাঠিয়েছেন ৷ এগুলি তুমি নিয়ে যাও এবং তোমার দেনা পরিশোধ করে দাও ৷ বিলাল
বলেন, আমি তাই করলাম, প্রথমে সেগুলোর পিঠের বোঝাগুলি নামিয়ে সেগুলোকে ঘাস
খাওয়ালাম ৷ তারপর ফজরের আযান দিলাম ৷ যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) নামায শেষ করলেন,
তখন আমি (জান্নাতৃল) বাকীর দিকে বের হয়ে গেলাম ৷ তখন আমি কানে আঙ্গুল ভরে
উচ্চস্বরে ঘোষণা করলাম, যাদের রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে কোন পাওনা আছে তারা যেন
উপস্থিত হয় ৷ এভাবে আমি পণ্যসামঘী বিক্রয় করে করে দেনা পােধ করতে থাকলাম ৷ এমন
কি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে পৃথিবীর আর কারও কোন পাওনা অবশিষ্ট রইল না ৷ পরিশেষে
আমার কাছে দুই বা দেড় উকিয়া স্বর্ণ রয়ে পেল ৷ তখন আমি মসজিদে পেলাম; কিন্তু বেলা
হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ লোক চলে গিয়েছে ৷ তখন আমি দেখতে পেলাম রাসুলুল্লাহ্ (সা)
একাকী মসজিদে বসে আছেন, আমি তাকে সালাম করলে তিনি আমাকে বললেন, তোমার
পুর্বের ঋণের কী অবস্থা ? আমি বললাম, আল্লাহর রাসুলের সকল ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে,
এখন আর কিছু বাকি নেই ৷ তিনি বললেন, কিছু বাড়তি রয়েছে কি ? আমি বললাম হী, দুই
দীনার ৷ তিনি বললেন, দেখ যে দুটি থেকে আমাকে স্বস্তি দিতে পার কিনা ? যে দুটি থেকে
তুমি আমাকে রেহাই না দেওয়া পর্যন্ত আমি আমার পরিবারবর্গের কারও কাছে যাচ্ছি না ৷ কিন্তু
حَدِيثَ أُمِّ زَرْعٍ مِنْ عَائِشَةَ بِطُولِهِ، وَوَقَعَ فِي بَعْضِ الرِّوَايَاتِ أَنَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ الَّذِي قَصَّهُ عَلَى عَائِشَةَ.
وَمِنْ هَذَا مَا رَوَاهُ الْإِمَامُ أَحْمَدُ، ثَنَا أَبُو النَّضْرِ، ثَنَا أَبُو عَقِيلٍ - يَعْنِي عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَقِيلٍ الثَّقَفِيَّ. ثِقَةٌ - حَدَّثَنَا مَجَالِدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: «حَدَّثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ ذَاتَ لَيْلَةٍ حَدِيثًا، فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَانَ الْحَدِيثُ حَدِيثَ خُرَافَةَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَتَدْرِينَ مَا خُرَافَةُ؟ إِنَّ خُرَافَةَ كَانَ رَجُلًا مِنْ عُذْرَةَ أَسَرْتُهُ الْجِنُّ فِي الْجَاهِلِيَّةِ، فَمَكَثَ فِيهِمْ دَهْرًا طَوِيلًا، ثُمَّ رَدُّوهُ إِلَى الْإِنْسِ، فَكَانَ يُحَدِّثُ النَّاسَ بِمَا رَأَى فِيهِمْ مِنَ الْأَعَاجِيبِ، فَقَالَ النَّاسُ: حَدِيثُ خُرَافَةَ» وَقَدْ رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ فِي " الشَّمَائِلِ " عَنِ الْحَسَنِ بْنِ الصَّبَّاحِ الْبَزَّارِ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ هَاشِمِ بْنِ الْقَاسِمِ بِهِ. قُلْتُ: وَهُوَ مِنْ غَرَائِبِ الْأَحَادِيثِ، وَفِيهِ نَكَارَةٌ، وَمَجَالِدُ بْنُ سَعِيدٍ يَتَكَلَّمُونَ فِيهِ. فَاللَّهُ أَعْلَمُ.
وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ فِي بَابِ مُزَاحِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ كِتَابِهِ " الشَّمَائِلِ ": ثَنَا
পৃষ্ঠা - ৪৬৩১
আমাদের কাছে কেউ (যাঞ্চাকারী) আসল না ৷ তাই তিনি মসজিদে রাত্রি যাপন করলেন ৷
এমনকি দ্বিতীয় দিন সকাল ও দুপুর মসজিদেই অবস্থান করলেন ৷ অবশেষে দিন শেষে দুজন
আরোহী আসল ৷ তখন আমি তাদেরকে নিয়ে গিয়ে দীনার দুটি দ্বারা তাদের জন্য খাদ্য ও
পােশাকের সংন্থান করলাম ৷ অবশেষে যখন তিনি ইশার নামায পড়লেন তখন আমাকে ডেকে
জিজ্ঞেস করলেন তোমার কাছের দীনার দুটির কী খবর ? আমি বললাম, তা থেকে আল্লাহ
আপনাকে নিকৃতি দিয়েছেন ৷ তখন তিনি তার কাছে দীনার দুটি থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হতে
পারে এই আশঙ্কা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহ আকবার ও আ ৷লহামদুলিল্লাহ্ বললেন ৷ এরপর আমি
তার পিছু পিছু চললাম ৷ অবশেষে তিনি তার শ্রীদের কাছে এসে তাদেরকে একজন একজন
করে সালাম করলেন এবং তিনি তার রাত্রি যাপনন্থলে পৌছলেন ৷ আর এটইি ঐ বিষয় যে
সম্পর্কে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলে ৷
তিরমিযী তার শামাইলে হারুন ইবন মুসা উমর ইবনুল খাত্তাব সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, (একবার) এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে এসে ভিক্ষা চাইল ৷ তখন তিনি বললেন,
(এই মুহুর্তে) আমার কাছে তোমাকে দেয়ার মত কিছু নেই, তবে তুমি আমার দায়িত্বে
বাকিতে কিছু কিনে নাও ৷ আমার কাছে কিছু আসলে আমি তা পরিশোধ করে দিব ৷ তখন
উমর (রা) বললেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আমি তাকে দিয়েছি, আর যা আপনার সামর্থ্যাতীত, তার
দায়িত্ব আল্পাহ্ আপনাকে দেননি ৷ তখন নবী করীম (সা) উমরের কথা তেমন পছন্দ করলেন
না ৷ এ সময় জনৈক আনসারী বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি দান করে যান আর
আরশাধিপতির পক্ষ থেকে কমতির আশঙ্কা করবেন না ৷ তখন তিনি মুচকি হাসলেন এবং
আনসারীর কথায় তার চেহারায় প্রসন্নতার মৃদু হাসি প্রকাশ পেল ৷ এরপর তিনি বললেন,
এমনটি করতেই আমি আদিষ্ট হয়েছি ৷ হাদীসে এ-ও রয়েছে, তারা আমার কাছে চাবেই; আর
আল্লাহ্ তাআলাও আমার জন্য কৃপণতা অনুমোদন করেন না ৷ হুনায়নের দিন যখন লোকেরা
তার কাছে গনীমত বণ্টনের জন্য আবেদন করল, তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, আমার
কাছে যদি এই সকল বাবলা গাছের সংখ্যার ন্যায় (অগগিত) ধন-সম্পদও থাকত তাহলেও
আমি তার সব তোমাদের মাঝে বণ্টন করে দিতাম আর তোমরা আমাকে কৃপণ ব্যয়কুণ্ঠ কিৎবা
মিথ্যাশ্রয়ী পেতে না ৷ তিরমিযী, আলী ইবন হাজার রবী বিনত মুআববিয ইবন উমর
সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি (রবী) বলেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে বেশ কিছু
থেজুরের র্কাদি ও আঙুরের ছড়া নিয়ে আসলাম ৷ তখন তিনি আমাকে তার হাতের মুঠি ভরে
গহনা বা সোনা দিলেন ৷
ইমাম আহমাদ, সুফিয়ান হযরত আবু সাঈদ (রা) সুত্রে নবী করীম (সা) থেকে
বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন, কী৩াবে আমি স্বস্তি লাভ করব, অথচ শিঙ্গাওয়ালা তার শিক্ষা
মুখে পুরে নিয়েছেন এবং কপাল ঝুকিয়ে উৎকর্ণ হয়ে প্রতীক্ষায় আছেন কখন তাকে (শিঙ্গায়
কুক দেয়ার জন্য) আদেশ করা হয় ৷ তখন মৃসলমানগণ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! তাহলে
আমরা কী বলব ৷ তিনি বললেন, তোমরা বলবে
এেপ্রু; আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক ৷ আমরা তারই
উপর ভরসা রাখি ৷ তিরমিষী ইবন আবু উমর আবু সাঈদ খুদরী সুত্রে হাদীসখানি বর্ণনা
করেছেন এবং তা ন্হাসান’ বলে উল্লেখ করেছেন ৷ এছাড়া হাদীসখানি অন্য সুত্রে এবং ইবন
আব্বাসের হাদীস সংগ্রহ থেকেও বর্ণিত আছে, যেমনটি শীঘ্রই যথাস্থানে বর্ণিত হবে ৷
— ১ ২
عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، ثَنَا مُصْعَبُ بْنُ الْمِقْدَامِ، ثَنَا الْمُبَارَكُ بْنُ فُضَالَةَ، عَنِ الْحَسَنِ قَالَ: «أَتَتْ عَجُوزٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ادْعُ اللَّهَ لِي أَنْ يُدْخِلَنِي الْجَنَّةَ. فَقَالَ: " يَا أُمَّ فُلَانٍ، إِنَّ الْجَنَّةَ لَا تَدْخُلُهَا عَجُوزٌ ". قَالَ: فَوَلَّتِ الْعَجُوزُ تَبْكِي، فَقَالَ: " أَخْبِرُوهَا أَنَّهَا لَا تَدْخُلُهَا وَهِيَ عَجُوزٌ؛ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقُولُ: " {إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا عَرَّبًا أَتْرَابًا} [الواقعة: 35] » " [الْوَاقِعَةِ: 35 - 37] وَهَذَا مُرْسَلٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ.
وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: ثَنَا عَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، ثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ شَقِيقٍ، ثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: «قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّكَ تُدَاعِبُنَا. قَالَ: " إِنِّي لَا أَقُولُ إِلَّا حَقًّا» تُدَاعِبُنَا يَعْنِي تُمَازِحُنَا. وَهَكَذَا رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ فِي " جَامِعِهِ " فِي بَابِ الْبِرِّ، بِهَذَا الْإِسْنَادِ، ثُمَّ قَالَ: وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.