كتاب سيرة رسول الله صلى الله عليه وسلم
فصل في قدوم وفود الأنصار
পৃষ্ঠা - ২০৭৪
এরপর বাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখান থেকে চলে গেলেন ৷ লোকজন নিজ নিজ পরিবারের নিকট
ফিরে গেল ৷ মায়সারা ওদেরকে বললেন, চল, সকলে ফাদাক নামক স্থানে যাই ৷ সেখানে কতক
ইয়াহুদী আছে ৷ এই লোক সম্পর্কে আমরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করি ৷ তারা ইয়াহ্রদীদের নিকট
গেল ৷ ইয়াহ্রদীরা তাদের সম্মুখে একটি লিপি পেশ করে তা পাঠ করতে লাগল ৷ তাতে
বাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর উল্লেখ ছিল যে, তিনি উঘী ও আরব বংশীয় নবী ৷ তিনি পাধাব পৃষ্ঠে
আরোহণ করবেন ৷ সামান্য খাবারে সত্তুষ্ট থাকবেন ৷ খুব লম্বাও নন, একেবারে বেটেও নন ৷
তার চুল খুব কােকড়ানােও নয়, একেবারে সােঝাও নয় ৷ তার দুচোখে সুর্যোদয়কালীন লালিমা ৷
ইয়াহ্রদীরা এও বলে দিল যে, তােমাদেরকে যিনি আহবান জানাচ্ছেন তিনি যদি এই লিপিতে
বর্ণিত ব্যক্তি হন, তবে তোমরা তার ডাকে সাড়া দাও এবং তার দীন গ্রহণ কর ৷ আমরা তাকে
হিংসা করি ৷ আমরা তার অনুসরণ করব না ৷ তার কারণে আমরা ন্প্াড় বিপদগ্নস্ত ৷ আরবের
লোক দুভাগে বিভক্ত হবে ৷ একদল তার অনুসরণ করবে ৷ অপর দল তার বিরুদ্ধে লড়াই
করবে ৷ তোমরা অনুসরণকারীদের দলে থেকাে ৷
এবার মায়সারা বললেন, হে আমার সম্প্রদায় ৷ জেনে রেখো , এ বিষয়টি এখন সুস্পষ্ট ৷ তার
লোকজন বলল, তবে আগামী হজ্জ মওসুমে আমরা আবার মক্কায় যাব এবং তার সাথে সাক্ষাত
করব ৷ তারা তাদের দেশে ফিরে গেল ৷ মায়সারা তাদের এই আচরণ সমর্থন করলেন না ৷
বন্তুত তাদের কেউই এ যাত্রার বাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর অনুসরণ করেনি বা ইসলাম ও গ্রহণ করেনি ৷
এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হিজরত করে মদীনায় এলেন ৷ পরে বিদায় হজ্জ সম্পাদন করলেন ৷
তারপর একদিন তার সাথে মায়সারা-এর সড়াক্ষাত হয় ৷ বাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন তাকে চিনতে
পারেন ৷ মায়সারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আল্লাহর কসম, যেদিন আপনি আমাদের নিকট
এসেছিলেন সেদিন থেকে আমি আপনার অনুসরণ করার জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছি ৷ কিন্তু যা
হবার তা হয়ে গেছে ৷ আমার ইসলাম গ্রহণে বিলম্ব হয়ে গেল ৷ আমার সাথে তখন যারা ছিল
তাদের শেষ বাসস্থান কোথায় হবে ইয়া রাসুলাল্লাহ্৷ বাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “ইসলাম ধর্ম
ছাড়া অন্য ধর্মানুসারী হয়ে যাব মৃত্যু হবে সে জাহান্নামে যাবে ৷ মায়সারা বললেন, সকল প্রশংসা
আল্লাহর, যিনি আমাকে রক্ষা করেছেন ৷ এরপর মায়সারা ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং সুন্দর
ভাবে ইসলামী জীবন যাপন করলেন ৷ হযরত আবু বকর (বা) তাকে বিশেষ মর্যাদার চোখে
দেখতেন ৷
ওয়াকিদী পৃথক পৃথক ভাবে সকল গোত্রের আলোচনা করেছেন ৷ বনু আমির গোত্র,
গাস্সান গোত্র, বনু ফাযারা, বনু মুরবা, বনু হানীফা, বনু সুলায়ম , বনু আবাস, বনু নাযর ইবন
হাওয়াযিন, বনু ছালাবা ইবন ইকাবা কিনদাহ, কাল্ব, বনু হারিছ ইবন কাআব, বনু আযরা, বনু
কায়স ইবন হাতীম ও অন্যান্য গোত্রের নিকট বাসুলুল্লাহ্ (সা) উপস্থিত হয়েছিলেন ৷ ওয়াকিদী
তার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন ৷ তা থেকে কতক বিশুদ্ধ বর্ণনা আমরা উদ্ধৃত করেছি ৷ সকল
প্রশংসা আল্লাহর ৷
ইমাম আহমদ বলেন, আসওয়াদ জাবির ইবন আবদুল্লাহ (বা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি
বলেন, হরুজ্জর মওসুমে আবাফার ময়দানে গিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) দীনের দাওয়াত দিয়ে বলতেন ,
[فَصْلٌ فِي قُدُومِ وُفُودِ الْأَنْصَارِ]
فَصْلٌ فِي قُدُومِ وَفْدِ الْأَنْصَارِ عَامًا بَعْدَ عَامٍ حَتَّى بَايَعُوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْعَةً بَعْدَ بَيْعَةٍ، ثُمَّ بَعْدَ ذَلِكَ تَحَوَّلَ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْمَدِينَةِ، فَنَزَلَ بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ، كَمَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ وَتَفْصِيلُهُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ، وَبِهِ الثِّقَةُ.
حَدِيثُ سُوِيدِ بْنِ صَامِتٍ الْأَنْصَارِيُّ، وَهُوَ سُوِيدُ بْنُ الصَّامِتِ بْنِ خَالِدِ بْنِ عَطِيَّةَ بْنِ حَوْطِ بْنِ حَبِيبِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَوْفِ بْنِ مَالِكِ بْنِ الْأَوْسِ، وَأُمُّهُ لَيْلَى بِنْتُ عَمْرٍو النَّجَّارِيَّةُ، أُخْتُ سَلْمَى بِنْتِ عَمْرٍو أُمِّ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ هَاشِمٍ. فَسُوَيْدٌ هَذَا ابْنُ خَالَةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ جَدِّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ يَسَارٍ: وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى ذَلِكَ مِنْ أَمْرِهِ، كُلَّمَا اجْتَمَعَ النَّاسُ بِالْمَوْسِمِ، أَتَاهُمْ يَدْعُو الْقَبَائِلَ إِلَى اللَّهِ وَإِلَى الْإِسْلَامِ، وَيَعْرِضُ عَلَيْهِمْ نَفْسَهُ وَمَا جَاءَ بِهِ مِنَ الْهُدَى وَالرَّحْمَةِ، وَلَا يَسْمَعُ بِقَادِمٍ يَقْدَمُ مَكَّةَ مِنَ الْعَرَبِ لَهُ اسْمٌ وَشَرَفٌ إِلَّا تَصَدَّى لَهُ، وَدَعَاهُ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى،
পৃষ্ঠা - ২০৭৫
এমন কেউ আছ কি, যে আমাকে তার সম্প্রদায়ের নিকট নিয়ে যাবে ? কুরায়শর৷ তো আমাকে
আমার প্রতিপালকের বাণী প্রচারে বাধা দিচ্ছে ৷ একদিন হামাদান অঞ্চলের এক লোক তীর
নিকট এল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বললেন “আপনি কোন অঞ্চলের লোক ? সে বলল আমি
হামাদান অঞ্চলের লোক ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আপনার সম্প্রদায়ের লোকজন কি আমার
নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবে ? যে বলল, জী ইব্রুড়া পারবে ৷ পরক্ষণে লোকটির আশংকা
হলো, না আমি তার সম্প্রদায়ের লোকজন নিরাপত্তা-চুক্তি ভঙ্গ করে ৷ তাই সে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর নিকট ফিরে এসে বলল, এ যাত্রা আমি আমার সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট গিয়ে
আপনার কথা বলি ৷ তারপর আগামী বছর আমি আপনার নিকট ৰুভ্রপ্লোব ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, তবে তাই হোক ৷ লোকটি চলে গেল ৷ এদিকে রজব মাসে আনসারদের প্রতিনিধিদল
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হল ৷
সুনানে আরবাআ তথা প্রসিদ্ধ চারটি সুনড়ান হাদীছ গ্রন্থের সংকলকগণ ইসরাঈলের বরাতে
এ হাদীছটি উল্লেখ করেছেন ৷ ইমাম তিরমিযী বলেছেন, এটির সনদ হাসান ও সহীহ্ ৷
আনসায়দের মক্কায় আগমন এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতে বায়আত গ্রহণ
এ ঘটনার বর্ণনাকারী হলেন সুওয়াইদ১ ইবন সামিত ইবন আতিয়্যা ইবন হাওত ইবন
হাবীব ইবন আমর ইবন আওফ ইবন মালিক ইবন আওস ৷ তার মাতার নাম লায়লা বিনৃত
আমর নাজ্জারিয়্যা ৷ লায়লা ছিলেন আবদুল মুত্তালিবের মা সালমা বিনত আমরের বোন ৷ এ
হিসাবে সুওয়াইদ হলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দাদা আবদুল মুত্তালিবের খালাত ভাই ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক ইবন ইয়ড়াসার বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এভাবেই কাজ চালিয়ে
যাচ্ছিলেন যে, হরুজ্জর মওসুমে লোকজন একত্রিত হলে তিনি তাদের নিকট যেতেন এবং তার
নিকট আগত হিদায়াত ও রহমতের কথা তাদের নিকট পেশ করতেন ৷ আরবের কোন
নামী-দামী ও গুরুত্বপুর্ণ লোক মক্কায় এসেছে শুনলে তিনি তার নিকট উপস্থিত হতেন এবং
তাকে আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাতেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন, আসিম ইবন উমর তার
সম্প্রদায়ের বয়ােজ্যেষ্ঠদের থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তারা বলেছেন যে, বনু আমর ইবন আওফ
গোত্রের সুওয়াইদ ইবন সামিত হজ্জ কিংবা উমরা উপলক্ষে মক্কায় এসেছিলেন ৷ আপন
সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি সুওয়াইদ “আল কামিল” নামে পরিচিত ছিলেন ৷ তার শক্তি-সামর্থ,
বুদ্ধি , বিবেচনা এবং মর্যাদার নিরিখে তারা র্তাকে এ নামে ডাকত ৷ তিনি বলেন :
র্দু;ন্ওৰু ৷১ণ্ এণ্এ এএান্ এএ ;;ন্ৰুণ্ এ এ ;:;;; :>১ ১১ রা
সাবধান, এমন বহু লোক আছে তুমি যাকে সত্যবাদী বলে মনে কর ৷ তার গোপন
কথাবার্তা যদি তুমি জানতে , তবে তার মিথ্যাচার তোমাকে পীড়া দিত ৷
তার কথা শুনে মনে হয় সে যেন উপস্থিত, আসলে (স উপস্থিত নয় ৷ আর তার অনুপস্থিতি
কালে তার কথাবার্তা যেন বক্ষে ছুরিকাঘাত ৷
১ সুহায়লী বলেছেন সুওয়াইদ ইবন সাল;ত ইবন হাওত ৷
وَعَرَضَ عَلَيْهِ مَا عِنْدَهُ.
قَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ: حَدَّثَنِي عَاصِمُ بْنُ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ أَشْيَاخٍ مِنْ قَوْمِهِ، قَالُوا: قَدِمَ سُوَيْدُ بْنُ الصَّامِتِ، أَخُو بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ مَكَّةَ حَاجًّا أَوْ مُعْتَمِرًا، وَكَانَ سُوَيْدٌ إِنَّمَا يُسَمِّيهِ قَوْمُهُ - فِيهِمُ - الْكَامِلَ; لِجَلَدِهِ، وَشِعْرِهِ، وَشَرَفِهِ، وَنَسَبِهِ، وَهُوَ الَّذِي يَقُولُ:
أَلَا رُبَّ مَنْ تَدْعُو صَدِيقًا وَلَوْ تَرَى ... مَقَالَتَهُ بِالْغَيْبِ سَاءَكَ مَا يَفْرِي
مَقَالَتُهُ كَالشَّهْدِ مَا كَانَ شَاهِدًا ... وَبِالْغَيْبِ مَأْثُورٌ عَلَى ثُغْرَةِ النَّحْرِ
يَسُرُّكَ بَادِيهِ وَتَحْتَ أَدِيمِهِ ... نَمِيمَةُ غِشٍّ تَبْتَرِي عَقَبَ الظَّهْرِ
تُبَيِّنُ لَكَ الْعَيْنَانِ مَا هُوَ كَاتِمٌ ... مِنَ الْغِلِّ وَالْبَغْضَاءِ بِالنَّظَرِ الشَّزْرِ
فَرِشْنِي بِخَيْرٍ طَالَمَا قَدْ بَرَيْتَنِي ... وَخَيْرُ الْمَوَالِي مَنْ يَرِيشُ وَلَا يَبْرِي
قَالَ: «فَتَصَدَّى لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ سَمِعَ بِهِ. فَدَعَاهُ إِلَى اللَّهِ وَالْإِسْلَامِ، فَقَالَ لَهُ سُوَيْدٌ: فَلَعَلَّ الَّذِي مَعَكَ مِثْلُ الَّذِي مَعِي. فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
পৃষ্ঠা - ২০৭৬
" وَمَا الَّذِي مَعَكَ؟ " قَالَ مَجَلَّةُ لُقْمَانَ - يَعْنِي حِكْمَةَ لُقْمَانَ - فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " اعْرِضْهَا عَلَيَّ ". فَعَرَضَهَا عَلَيْهِ، فَقَالَ: " إِنَّ هَذَا الْكَلَامَ حَسَنٌ، وَالَّذِي مَعِي أَفْضَلُ مِنْ هَذَا، قُرْآنٌ أَنْزَلَهُ اللَّهُ عَلَيَّ هُوَ هُدًى وَنُورٌ ". فَتَلَا عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْقُرْآنَ، وَدَعَاهُ إِلَى الْإِسْلَامِ، فَلَمْ يَبْعُدْ مِنْهُ، وَقَالَ: إِنَّ هَذَا الْقَوْلَ حَسَنٌ. ثُمَّ انْصَرَفَ عَنْهُ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ عَلَى قَوْمِهِ، فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ قَتَلَتْهُ الْخَزْرَجُ، فَإِنْ كَانَ رِجَالٌ مِنْ قَوْمِهِ لَيَقُولُونَ: إِنَّا لَنَرَاهُ قُتِلَ وَهُوَ مُسْلِمٌ، وَكَانَ قَتْلُهُ قَبْلَ بُعَاثَ» . وَقَدْ رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ، عَنِ الْحَاكِمِ، عَنِ الْأَصَمِّ، عَنْ أَحْمَدَ بْنِ عَبْدِ الْجَبَّارِ، عَنْ يُونُسَ بْنِ بُكَيْرٍ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ بِأَخْصَرَ مِنْ هَذَا.