আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

كتاب أخبار الماضين من بني إسرائيل وغيرهم

قصة الثلاثة الذين أووا إلى الغار

পৃষ্ঠা - ১১৪০
ষ্ষ্


করতে থাকে, আল্লাহর কসম৷ এই বিপদটি থেকে যে কোন পুণ্যকর্মের উসিলা ব্যতীত তোমরা
মুক্তি পাবে না ৷ এখন প্রত্যেকেই নিজ নিজ উত্তম কর্মের উসিলা দিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া
কর ৷ তাদের একজন এ বলেন, দোয়া শুরু করল, হে আল্লাহ’ আপনি তো জানেন, আমার
এক শ্রমিক ছিল ৷ এক ফুরক১ ধান পারিশ্রমিক ধার্য করে সে আমার কাজে নিয়োজিত হয়েছিল ৷
কাজ শেষে পারিশ্রমিক না নিয়েই যে চলে যায় ৷ অতঃপর তার যে ধান আমি জমিতে বপন
করে ফসল উৎপন্ন করি ৷ ক্রমান্বয়ে তা বৃদ্ধি পেতে থাকে ৷ অবশেষে তা দিয়ে আমি একটি
পাভী ক্রয় করি ৷ একদিন সে আমার নিকট তার পারিশ্রমিক নেয়ার জন্যে আসে ৷ আমি বলি,
ওই যে পাভী তা তুমি নিয়ে যাও ৷ সে আমাকে বলে, আমার তো আপনার নিকট শুধু এক ফুরক
ধানই পাওনা ৷ আমি বলি, তোমার সে ধান থেকেই এই পাভী তুমি তা দিয়ে যাও ৷ সে তখন ঐ
পাভীটি নিয়ে চলে যায় ৷ হে আল্লাহ! আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার ডয়েই আমি এরুপ
করেছি, তবে আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করুন ৷ এতে পাথর একটুখানি ফীক হয়ে
যায় ৷

অপর একজন বলেন, হে আল্লাহ ! আপনি তো জানেন, আমার ঘরে বৃদ্ধ মাতা পিতা
ছিলেন ৷ প্রতি রাতে আমি তাদেরকে রকরীর দুধ পান করাতাম ৷ এক রাতে আমার আসতে
বিলম্ব হয়ে যায় ৷ আমি যখন আমি, তখন আমার পিতামাতা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ৷ আমার
পরিবার-পরিজন ও ছেলে মেয়েরা তখনও ক্ষুধায় ছটফট করছিল, কান্নাকাটি করছিল ৷ আমার
পিতামাতা দুধ পান না করা পর্যন্ত আমি পরিবারের কাউকেই দুধ পান করতে দিতাম না ৷ এ
সময়ে আমি পিতামাতাকে ঘুম থেকে আগত করা সমীচীন মনে করিনি ৷ আবার তাদেরকে রেখে
পরিবারের অন্যদেরকে দুধ খেতে দেয়াও পছন্দ করিনি ৷ আমি তাদের জগ্রোত হওয়ার অপেক্ষায়
থাকি ৷ এভাবে ভোর হয়ে যায় ৷ হে আল্লাহ ! আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার ভয়ে আমি
এরুপ করেছি তাহলে আমাদের বিপদ দুর করে দিন! অতঃপর গুহড়ার মুখের পাথর আরেকটি
ফীক হয়ে যায়, যাতে আকাশ দেখতে পাওয়া যায় ৷ তাদের অপরজন বলেন, হে আল্লাহ !
আপনি তো জানেন, আমার এক চাচাত বোন ছিল ৷ সে ছিল আমার সৰ্বাধিক প্রিয় ৷ আমি তাকে
কুকর্মের জন্য প্ৰরোচিত করি ৷ একশ’টি স্বর্ণ মুদ্রা না দেওয়া পর্যন্ত যে তাতে অস্বীকৃতি জানায় ৷
আমি যে পরিমাণ স্বর্ণ মুদ্রা অর্জনের চেষ্টা চালাই ৷ আমি তা সংগ্রহ করে তা তার হাতে তা
অর্পণ করি ৷ তখন সে আমাকে সুযোগ দেয় ৷ আমি যখন চুড়ান্ত মুহুর্তে উপনীত হই তখন সে
বলে ওঠে, আল্লাহকে ভয় করুন ৷ বৈধ পন্থায় ব্যতীত আমার শ্লীলতাহানি করবেন না ৷ তখনই
আমি উঠে আসি এবং আমার একশ’ স্বর্ণ মুদ্রাও রেখে আসি ৷ হে আল্লাহ! আপনি যদি মনে
করেন যে, আপনার ভয়েই আমি তা করেছি, তবে আমাদের বিপদ দুর করে দিন ৷ অতঃপর
আল্লাহ তাআলা তাদের বিপদ দুর করে দিলেন ৷ তারা গুহা থেকে বেরিয়ে আসে ৷

ইমাম মুসলিম (র) ইমাম আহমদ (র) নিজ নিজ সনদে অনুরুপ বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন ৷
ইমাম আহমদের একটি বর্ণনায় কিছু অতিরিক্ত কথাও রয়েছে ৷ বাঘৃষারও অনুরুপ বর্ণনা উদ্ধৃত
করেছেন ৷



১ মদীনা শরীফে প্রচলিত তিন না বা দশ কেজি বিশিষ্ট মাপপাত্র ৷


[قِصَّةُ الثَّلَاثَةِ الَّذِينَ أَوَوْا إِلَى الْغَارِ] ِ فَانْطَبَقَ عَلَيْهِمْ فَتَوَسَّلُوا إِلَى اللَّهِ تَعَالَى بِصَالِحِ أَعْمَالِهِمْ فَفُرِّجَ عَنْهُمْ قَالَ الْإِمَامُ الْبُخَارِيُّ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ خَلِيلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «بَيْنَمَا ثَلَاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يَمْشُونَ إِذْ أَصَابَهُمْ مَطَرٌ فَأَوَوْا إِلَى غَارٍ فَانْطَبَقَ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: إِنَّهُ وَاللَّهِ يَا هَؤُلَاءِ لَا يُنَجِّيكُمْ إِلَّا الصِّدْقُ فَلْيَدْعُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بِمَا يَعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ صَدَقَ فِيهِ فَقَالَ وَاحِدٌ مِنْهُمُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي أَجِيرٌ، عَمِلَ لِي عَلَى فَرَقٍ مِنْ أَرُزٍّ فَذَهَبَ وَتَرَكَهُ، وَأَنِّي عَمَدْتُ إِلَى ذَلِكَ الْفَرَقِ فَزَرَعْتُهُ فَصَارَ مِنْ أَمْرِهِ أَنِّي اشْتَرَيْتُ مِنْهُ بَقَرًا، وَأَنَّهُ أَتَانِي يَطْلُبُ أَجْرَهُ فَقُلْتُ: اعْمَدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَسُقْهَا فَقَالَ لِي: إِنَّمَا لِي عِنْدَكَ فَرَقٌ مِنْ أَرُزٍّ فَقُلْتُ لَهُ: اعْمَدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَإِنَّهَا مِنْ ذَلِكَ الْفَرَقِ فَسَاقَهَا فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا فَانْسَاخَتْ عَنْهُمُ الصَّخْرَةُ.
পৃষ্ঠা - ১১৪১
ষ্ষ্


অন্ধ, কুষ্ঠ ও টড়াক মাথাওয়ালা তিন ব্যক্তির ঘটনা

ইমাম বুখারী (র) ও মুসলিম (ব) একাধিক সুত্রে বর্ণনা করেন যে, আবু হরায়র৷ (রা)
রাসুলুল্লাহ (না)-কে বলতে শুনেছেন যে, বনী ইসরাইরুলর তিন ব্যক্তি একজন কুষ্ঠ বোগী,
একজন অন্ধ, একজন টাক মাথা বিশিষ্ট ছিল ৷ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পরীক্ষা করতে
চাইলেন ৷ তাদের নিকট আল্লাহ তাআলা একজন ফিরিশতা পাঠালেন ৷ তিনি প্রথম কুষ্ঠরোগীর
নিকট উপস্থিত হন ৷

ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার প্রিয় বস্তু কি ? সে বলে, সুন্দর রং ও সুন্দর তৃক ৷
লোকজন এখন আমাকে ঘৃণা করে ৷ ফিরিশতা তার গায়ে হাত বুলিয়ে দেন ৷ ফলে তার রোগ
যিদুরিত হয় ৷ তাকে সুন্দর রং ও সুন্দর তুক দান করা হয় ৷ ফিরিশতা আবার বলেন, কোন
সম্পদ তােমারনিকট প্রিয়? সে বলে, উট ৷ অথবা সে বললাে, গাভী ৷ (কুষ্ঠ রোপীও টেকে৷ মাথা
বিশিষ্ট এ দৃ’জনের একজন উট চেয়েছিল অপরজন চোহৃছিল গাভী ৷ তাদের কে উট চেয়েছিল
আর কে পাভী চেয়েছিল তা নিয়ে রাবীর সন্দেহ রয়েছে ৷) ফিঘিশতা একটি দশ মাসের গর্ভরতী
উটনী তাকে প্রদান করেন এবং বলেন, এতে আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন ৷

রাসুলুল্লাহ বলেন, অতঃপর ফিরিশতা আসেন টেকাে মাথা বিশিষ্ট ব্যক্তির নিকট ৷ তিনি
তাকে জিজ্ঞেস করেন ৷ কোন বন্তুপ্প্ণ্তামার প্রিয়? জবাবে সে বলে ৷ আমার প্রিয় হল সুন্দর চুল,
আর এই টাক যেন দুরীভুত হয় ৷ লোকজন ,তাে এখন আমাকে ঘৃণা করে ৷ ফিরিশতা তার
মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন ৷ টাক দুরীভুত হয় এবং তার মাথায় সুন্দর চুল গজায় ৷ আবার
ফিরিশতা বলেন, কোন সম্পদ তোমার নিকট প্রিয়? সে বলে, গরু ৷ ফিরিশতা তাকে একটি
গর্ভবতী পাভী দান করেন এবং বলেন, আল্লাহ এতে তোমাকে বরকত দিন ৷

এবার ফিরিশতা আসেন অন্ধ ব্যক্তির নিকট ৷ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার প্রিয় বস্তু
কি? যে বললাে, আল্লাহ যেন আমার দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দেন ৷ আমি যেন লোকজনকে দেখতে
পাই ৷ ফিরিশতা তার চোখে হাত বুলিয়ে দিলেন ৷ আল্লাহ তাআলা তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে
দিলেন ৷ ফিরিশতা বললেন, কোন সম্পদ তোমার প্রিয়? সে বলে, ছাগল ৷ তিনি তাকে একটি
গর্ভরভী বকরী দান করেন ৷

ইতিমধ্যে উটনী, গাভী ও বকরী বাচ্চা দিতে থাকে ৷ ক্রমে ক্রমে উট ওয়ালার মাঠ উটে
ভর্তি হয়ে যায় ৷ গাভীওয়ালার মাঠ পুর্ণ হয়ে যায় গরুতে ৷ আর বকরী ওয়ালার মাঠ পরিপুর্ণ হয়
বকরীতে ৷

এরপর একদিন ফেরেশত৷ কুষ্ঠরোগীর নিকট তার পুর্বের আকৃতি নিয়ে উপস্থিত হন ৷ তিনি
বললেন, আমি একজন মিসকিন ৷ সফরে এসে আমার যা ছিল সব ফুরিয়ে গেছে ৷ আল্লাহর
সাহায্যৰুএরং অতঃপর আপনার সহযোগিতা ব্যতীত আমার দেশে ফেরার কোন উপায় নেই ৷ যে
আল্লাহ আপনাকে সুন্দর দেহ, বর্ণ ও সুন্দর ত্বক দান করেছেন তার দােহাই দিয়ে আপনার নিকট
আমি একটি উট ভিক্ষা চাইছি ৷ আমার সফর কালে সেটি কাজে লাগবে ৷ সে বলল, মানুষের
চাহিদার শেষ নেই ৷ ফেরেশতা বলেন, আপনাকে আমার চেনা চেনা মনে হচ্ছে ৷ আপনি না কুষ্ঠ
রােগী ছিলেন? মানুষ আপনাকে ঘৃণা করত ৷ আর আপনি ছিলেন দরিদ্র ৷ আল্লাহই তো


فَقَالَ الْآخَرُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيرَانِ، وَكُنْتُ آتِيهُمَا كُلَّ لَيْلَةٍ بِلَبَنِ غَنَمٍ لِي فَأَبْطَأْتُ عَنْهُمَا لَيْلَةً فَجِئْتُ وَقَدْ رَقَدَا، وَأَهْلِي وَعِيَالِي يَتَضَاغَوْنَ مِنَ الْجُوعِ، وَكُنْتُ لَا أَسْقِيهِمْ حَتَّى يَشْرَبَ أَبَوَايَ فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُمَا، وَكَرِهْتُ أَنْ أَدَعَهُمَا فَيَسْتَكِنَّا لِشَرْبَتِهِمَا فَلَمْ أَزَلْ أَنْتَظِرُ حَتَّى طَلَعَ الْفَجْرَ فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا، فَانْسَاخَتْ عَنْهُمُ الصَّخْرَةُ حَتَّى نَظَرُوا إِلَى السَّمَاءِ. فَقَالَ الْآخَرُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَتْ لِيَ ابْنَةُ عَمٍّ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ، وَأَنِّي رَاوَدْتُهَا عَنْ نَفْسِهَا فَأَبَتْ إِلَّا أَنْ آتِيَهَا بِمِائَةِ دِينَارٍ، فَطَلَبْتُهَا حَتَّى قَدَرْتُ فَأَتَيْتُهَا بِهَا فَدَفَعْتُهَا إِلَيْهَا فَأَمْكَنَتْنِي مِنْ نَفْسِهَا، فَلَمَّا قَعَدْتُ بَيْنَ رِجْلَيْهَا قَالَتِ: اتَّقِ اللَّهَ وَلَا تَفُضَّ الْخَاتَمَ إِلَّا بِحَقِّهِ، فَقُمْتُ وَتَرَكْتُ الْمِائَةَ دِينَارٍ، فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا، فَفَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُمْ فَخَرَجُوا» وَرَوَاهُ مُسْلِمٌ عَنْ سُوَيْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُسْهِرٍ بِهِ. وَقَدْ رَوَاهُ الْإِمَامُ أَحْمَدُ مُنْفَرِدًا بِهِ عَنْ مَرْوَانَ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَنْ عُمَرَ بْنِ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنَحْوِهِ، وَرَوَاهُ الْإِمَامُ أَحْمَدُ مِنْ
পৃষ্ঠা - ১১৪২
حَدِيثِ وَهْبِ بْنِ مُنَبِّهٍ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنَحْوٍ مِنْ هَذَا السِّيَاقِ، وَفِيهِ زِيَادَاتٌ. وَرَوَاهُ الْبَزَّارُ مِنْ طَرِيقِ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ رَجُلٍ مِنْ بَجِيلَةَ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ مَرْفُوعًا مِثْلَهُ، وَرَوَاهُ الْبَزَّارُ فِي مُسْنَدِهِ مِنْ حَدِيثِ أَبِي حَنَشٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنَحْوِهِ.